শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই
মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই । সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বেগম মুশতারী শফীর জামাতা আবদুল্লাহ জাফর এ মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। মুশতারী শফীর জন্ম ১৯৩৮ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরে।
৮৪ বছর বয়সী মুশতারী শফী কিডনি, রক্তে সংক্রমণসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে এক দফা বাসা ঘুরে ১৪ ডিসেম্বর থেকে তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আবদুল্লাহ জাফর বলেন, বিকাল চারটার দিকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম মুশতারী শফী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত মুশতারী নারীনেত্রী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ এপ্রিল তার স্বামী চিকিৎসক মোহাম্মদ শফী ও ছোট ভাই এহসানুল হক আনসারীকে হত্যা করে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিক হিসেবেও কাজ করেছেন বেগম মুশতারী।
বাংলাদেশ ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনের একজন অন্যতম সংগঠক মুশতারী শফী। চট্টগ্রামে নারী অধিকার আদায় ও সুরক্ষার জন্য দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’, ‘চিঠি’, ‘জাহানারা ইমামকে’ এবং ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’ মুশতারী শফীর উল্লেখযোগ্য রচনা।
১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম থেকে ‘বান্ধবী’ নামে মাসিক সাময়িকী প্রকাশ করেছিলেন মুশতারী শফী। বাংলাদেশে নারীদের জন্য প্রকাশিত দ্বিতীয় সাময়িকী বলা হয় ‘বান্ধবী’কে। বান্ধবী সংঘ প্রচারের সময় মেয়েদের প্রেস নামে একটি ব্যতিক্রমী মুদ্রণ সংস্থাও গড়ে তুলেছিলেন লড়াকু এই নারী।
এমএমএ/