নির্বাচনী যৌথসভায় যা বললেন আইভী
নারায়নগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তদ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসলেন সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। আসন্ন ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ করেন বর্তমান মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন, কোনো কিছুই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০০৯ সাল এর পর থেকে আমাদের মধ্যে একটু দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, যখন ডিএনডি মাঠে মহানগর যুবলীগের কনফারেন্স হয়েছিল। সেই সময় আমি ওতপ্রোতভাবে পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। জেলা যুবলীগ, জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগের সকল কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলাম ২০০৯ সাল পর্যন্ত। আজকে যারা আমার সঙ্গে নৌকা চেয়েছিলেন তাদের মধ্যে ‘খোকন কাকা, বাদল ভাই, চন্দন শীল দাদা আমরা প্রত্যেকে কিন্তু এক সঙ্গে মিলে কাজ করেছি, জেলা আওয়ামী লীগের জন্য এবং নগর আওয়ামী লীগের জন্য। আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন, কোন কিছুই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই ২০০৯ সাল এর পর থেকে আমাদের মধ্যে একটু দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সেটা হতেই পারে, বিভিন্ন কারণে হয়েছে। কিন্তু কখনও আমি কোন দিন কারো বিপক্ষে একটি শব্দও উচ্চারণ করিনি। আমি নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমার মতো করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভায় কাজ করেছি।'
তিনি আরও বলেন, '২০১১ সালে যখন নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন হল, তখন আমি প্রার্থী ছিলাম। তখন নেত্রীর দোয়া নিয়ে আমি প্রার্থী হয়েছি। নেত্রীর দোয়া ছিল বলে ফ্রি এবং ফেয়ার নির্বাচন হয়েছিল বলে আজকে এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি। আমি দলের প্রতি ভিষণ কৃতজ্ঞ, কৃতজ্ঞ আমার নেত্রীর প্রতি, যে উনি আমার প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। আমি বিজয়ী হয়েছিলাম ২০১১ সালে। তখনও অনেকে গিয়েছিলেন পক্ষে-বিপক্ষে কিন্তু আমি জয়যুক্ত যখন হয়েছি সকলে আমাকে সহযোগিতা করেছিল। এরপর ২০১৬ সালে আমি নেত্রীর প্রার্থী হয়েছিলাম। নেত্রী তখন আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। আমি কখনো কোনোদিনও দলের বাইরে কোনো কর্মকাণ্ড করিনি। কাউকে হতাশ করিনি। যে কোনো ব্যক্তি যখন আমার প্রতি বিমুখ হয়েছে, আমি নীরব থেকেছি, নিজেকে গুটিয়ে রেখেছি। আমার শেষ ঠিকানা এই দল।'
আইভি বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জয়বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। আমার শেষ ঠিকানা আওয়ামী লীগ। আমি দলের একজন ছোট্ট কর্মী হয়ে সারাজীবন আওয়ামী লীগ করব। আমি জয়বাংলা বলব। আমার শেষ ঠিকানা এই দল। আমি আশাকরি ১৬ জানুয়ারি আর একটা বিজয় নিয়ে আমার দলকে উপহার দেব, নেত্রীকে উপহার দেব। ছোট আপা (শেখ রেহানা) সব সময় আমার জন্য দোয়া করেছেন। আপা আমাকে সব সময় দেখেন, আমাকে দোয়া করবেন, জননেত্রীর দোয়া আপনারা সকলে (দলীয় নেতারা) দোয়া করবেন। নির্বাচন পরিচালনায় যে কমিটি হয়েছে সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন সকলের দোয়া নিয়ে.. যেভাবে শুরু থেকে ছিলেন সেভাবে আমার সঙ্গে থাকবেন। আমাদের ছোট খাটো সমস্যা সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি জয় লাভ করব ইনশাআল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা টিমের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে এবং নির্বাচন পরিচালনা টিমের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওসার, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা মেয়র প্রার্থী আইভি রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/জেডএকে