মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক এমডির দুর্নীতিতে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ
দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইফতেখারুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। বুধবার (১৮ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। ইফতেখারুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেছিল সংসদীয় কমিটি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তদন্তে ইফতেখারুল ইসলামের আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিয়মভঙ্গের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন তিনি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাবেক ওই এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তবে ইফতেখারুল ইসলাম এখন আর কল্যাণ ট্রাস্টে কর্মরত নেই। তিনি অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে (পিআরএল) আছেন। সে হিসেবে তিনি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন। তাই সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনটি ১৬ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও চিঠিতে বলা হয়েছে। আজকের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই অগ্রগতির কথা জানায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান গণমাধ্যমকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইফতেখারুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি–অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছে কমিটি।
বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যেসব কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে কর্মকর্তাদের কারও সিল–সই ছিল না। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিদর্শনসংবলিত অপারেশন জ্যাকপট নিয়ে সিনেমা তৈরি, এমভি ইকরাম সংরক্ষণ ও কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ধীরগতির কারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংসদীয় কমিটির কাছে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বৈঠকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চলমান প্রকল্প দ্রুততম সময়ে শেষ করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে বড় আকারের প্রকল্প গ্রহণ ও মাদারীপুরে বধ্যভূমি প্রকল্পে কাজের ধীরগতির ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ১ ডিসেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে অনুমোদন গ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রফিকুল ইসলাম ও কাজী ফিরোজ রশীদ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
এসএম/এএজেড