অশনির শঙ্কা থেকে মুক্ত বাংলাদেশ
ঘূর্ণিঝড় অশনির গতিপথ এখন উড়িষ্যার দিকে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা শঙ্কামুক্ত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
তবে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত 'অশনি' প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রবল গতিতে অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলের দিকে এগোতে থাকবে। তবে উপকূলে আঘাত হানার সময় এর গতি কমে আসতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় অশনি আজ সোমবারও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে। এটি দুর্বল হয়ে ভারতের উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ আপাতত শঙ্কামুক্ত থাকবে।
সোমবার (৯ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী অশনি যেভাবে ছিল এখনও সেভাবেই আছে। এটি আস্তে আস্তে দুর্বল হতে পারে। আজ পর্যন্ত এটা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকবে। আজকের পর অশনি আস্তে আস্তে দুর্বল হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশ শঙ্কামুক্ত থাকবে। তবে বৃষ্টি, বাতাস থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, এটি ভারতের উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছে। তবে উপকূলে ধেয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কমে যাবে। যার ফলে বাংলাদেশে এর প্রভাব সেভাবে পড়বে না বলে মনে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুলেটিন-৭ এ জানানো হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (অক্ষাংশ: ১৩.০ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমাংশ: ৮৭.৮ ডিগ্রি পূর্ব) অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ী মেঘলা থাকতে পারে। অস্থায়ী দমকা বা ঝড়োহাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিদ্যুৎ চমাকনোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বাতাস প্রবাহিত হতে পারে পারে। যা অস্থায়ীভাবে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামন্য হ্রাস পেতে পারে।
এসএন