সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

এডিটর’স টক অনুষ্ঠানে শ ম রেজাউল করিম

‘পেশার ন্যূনতম স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্য দরকার’

বর্তমান সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এমপি সম্প্রতি এসেছিলেন ঢাকাপ্রকাশ কার্যালয়ে। এ সময় সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামাল। কথোপকথনের প্রথম পর্বটি তুলে ধরা হলো।

মোস্তফা কামাল: রেজা ভাই আপনি কেমন আছেন?

শ.ম রেজাউল করিম: জি,আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনার নতুন হাউজ এর শুভকামনা জানানোর জন্যই মূলত আসা। আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন ।

মোস্তফা কামাল: আপনিতো দীর্ঘকাল সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আপনার লেখালেখি সাংবাদিকতা টকশোতে আমরা আপনাকে দেখি একজন প্রাণবন্ত মানুষ হিসেবে নানা বিষয়ে কথা বলে আপনি মানুষকে সমৃদ্ধ করছেন। তো, বর্তমান সময়ে যে সাংবাদিকতা এবং অতীতে আপনি ৩০ বছর আগে যে সাংবাদিকতা করেছেন, সেটির মধ্যে আপনিগুণগত কোন পার্থক্য দেখেন কি না বা এখনকার সাংবাদিকতা নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই ।

শ.ম রেজাউল করিম: গণমাধ্যম এখন সম্প্রসারিত হয়েছে। সাংবাদিকতার সংজ্ঞাও এখন পরিবর্তিত।এখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়।প্রথাগত যে সাংবাদিকতা, বিশেষ করে যে প্রিন্টিং মিডিয়া তা থেকে আরও ডেভেলপ করেছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া।ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে এখন বিভিন্ন অনলাইন ভার্সন বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের একটা বিস্তার ঘটেছে।এটা হল ভালো দিক আর এর সঙ্গে কিছু খারাপ দিকগুলো হল, হুটহাট করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের মালিকানা অর্জন করে অথবা কোনরেজিস্ট্রেশন নাই এরকম কোন ইউটিউব চ্যানেল অথবা অনলাইনের কোন পেইজে চ্যানেল করে অথবা একটা পত্রিকার নামসর্বস্ব ডিক্লারেশন নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা অসত্য তথ্য দেয়া বা ভুয়া তথ্য দিয়ে সংবাদমাধ্যমের যে স্ট্যান্ডার্ড বা স্ট্যাটাস ওই জায়গাতেও কিন্তু বিভিন্নভাবে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।তবে মুলধারার গণমাধ্যম এখনো ভালো কাজ করে চলছে।সেই ক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তি গোষ্ঠী বা কোম্পানি নিজেদের স্বার্থের চেয়ে একটি সার্বজনীনতা কে ধারণ করেন, তাহলে আমার মনে হয় গণমাধ্যম যাকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় সেটা আরও কার্যকর হতে পারে।

মোস্তফা কামাল: এটা থেকে উত্তরণের উপায় কি হতে পারে? এইযে মানুষ বলে আসলে গণমাধ্যমতো নানাভাবে হলুদ সাংবাদিকতায় প্রশ্নবিদ্ধ। হলুদ সাংবাদিকরা যারা দলে বিভক্ত,অসংখ্য সংগঠন সাংবাদিকদের।এত সংগঠনের প্রয়োজন আছে কি না এটা নিয়েও প্রশ্ন আছে।ঢাকার বাইরে যারা কাজ করেন তাদের কার্ডসর্বস্ব সাংবাদিক বলা হয়। তো,এইটা থেকে উত্তরণের উপায় কি?

শ.ম রেজাউল করিম: দেখুন,আমি এরকম বিশেষজ্ঞ না।কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে, পেশার ন্যূনতম স্বার্থে মানে ন্যূনতম যে বিষয়গুলি সে বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার সাংবাদিকদের। যেমন, আজকে ডিইউজে, বিএফইউজে, আলাদা আলাদা ভাগে বিভক্ত হয়েছে। রিপোর্টাররা সঠিক স্পেস না পাওয়ায় রিপোর্টার্স ইউনিটি হয়েছে আবার আরো অনেক সংগঠন হয়েছে ।কাউকে না কাউকে উদ্যোগ নেয়া দরকার। আমাদের যেরকম আইনজীবী সমিতি রয়েছে। আমি মূলত আইনজীবী। অনেক দল এবং মতের আইনজীবী থাকা সত্বেও কিন্তু আইনজীবীদের যে মূল সংগঠন বার কাউন্সিল এটা বিভাজিত না। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি বিভাজিত না। ঢাকা আইনজীবী সমিতি বিভাজিত না। তাহলে অনেক মেধাবী সাংবাদিকরা কেন বিভাজিত থাকবে? তারা যদি নিজেদেরকে নিজেরা প্রশ্ন করে তাহলে তারা বুঝতে পারবে তাদের যোগ্যতার জায়গাটা খণ্ড বিখণ্ড হয়ে গেছে। অন্যান্য প্রফেশনে বিএমএ (BMA)আলাদা হয়ে যায়নি।মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন আলাদা আলাদা অর্গানাইজেশন হয়নি। একমাত্র সাংবাদিকদের এই জায়গাটায় যেটা হয়েছে, আমি মনে করি সাংবাদিকদের ভেতরে যারা পেশাগত সাংবাদিক অথবা এই পেশায় যারা বিভিন্ন সময় পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের একটা উদ্যোগ নেয়া দরকার যে, কোন কোম্পানির প্রতিনিধি হবো না। কোন ব্যক্তি বিশেষের প্রতিনিধি হবো না। কোন দলের প্রতিনিধি হবো না। কালোকে কালো,সাদাকে সাদা,হলুদকে হলুদ বলব।এই মন্ত্রে যদি দীক্ষিত হয়ে একটা ঐক্য সৃষ্টি করা যায় তাহলেই গৌরব পুনরুদ্ধার করা সম্ভব ।

মোস্তফা কামাল: অনেকেই বলে থাকেন আসলে এখন সাংবাদিকতা টাকাওয়ালাদের কাছে জিম্মি। আবার অনেকেই বলেন আসলে সরকার যদি নিয়ন্ত্রণ করত গণমাধ্যমকে, তাহলে তো সরকারি বিজ্ঞাপন দিয়ে যে পত্রিকাগুলি চলে, যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন দেয়, সেই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে না । কিন্তু যারা এটার মালিক তারা বেশি নিয়ন্ত্রক। এ বিষয়টি সম্পর্কে আপনার মতামত কি?

শ.ম রেজাউল করিম: একটা চমৎকার বিষয় আপনি বলছেন। সরকারি বিজ্ঞাপন যে সকল পত্রিকা বেশি পায়, ওই সকল পত্রিকার কিন্তু পাঠক সংখ্যা কম। কারণ খুব বেশি সরকারের পক্ষে লিখলে মানুষ মনে করে- ধুরু এরা সরকার ঘ্যাসা। আবার একেবারে সরকারের কোন কারণ ছাড়া সমালোচনা করা অনেক পত্রিকাও কিন্তু মানুষ কেনে না । ওই পক্ষের লোকেরাও কিনে না। আপনি দিনকাল পত্রিকা কেনার লোকের সংখ্যা খুব কম পাবেন বিএনপি'র লোকেরা । দৈনিক সংগ্রাম কেনার লোক জামায়াত ঘরণার কম পাবেন। এটা এই কারণে বলছি যে, মানুষ কিন্তু একটা নিরপেক্ষ সংবাদ আশা করে। যিনি কট্টর বিএনপি অথবা কট্টর আওয়ামী লীগ সেক্ষেত্রে তার শিবিরের বাইরের পত্রিকা কিনে গোপনে পড়ে, এখানে আসল খবরটা পাওয়া যাবে কিনা। কাজেই পত্রিকাকে যারা বিভিন্ন কুকর্মকে ঢাকার জন্য সাইনবোর্ড হিসাবে ব্যবহার করতে চায় তারা সংবাদ মাধ্যম না। তাদের বাঁচার জন্য তারা একটা মাধ্যম হিসাবে তৈরি করে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রেই দেখি একটা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ যেটা প্রথম পাতায় আসার কথা সেটা প্রথম পাতায় নাই। এটা ভেতরের পাতায় চতুর্থ কলামে সিঙ্গেল হয়ে গেল অথবা যে নিউজটা বডিতে আসার কথা, পঞ্চম পাতায় আসার কথা সেটাকে দেখা গেল লিড নিউজ করা হচ্ছে। কারণ কী? এইখানে কিন্তু ওই পত্রিকার আর গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। সংবাদ মাধ্যম হিসেবে যে ক্রেডিবিলিটি টা সেটাও থাকে না ।

 

মোস্তফা কামাল: অনেকেই বলে থাকেন অপসাংবাদিকতা বা হলুদ সাংবাদিকতা গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের পথে অন্তরায়। তো আপনি কি মনে করেন?

শ.ম রেজাউল করিম: আমিও সেটাই মনে করি। মফস্বলে দেখা যায় নামসর্বস্ব কার্ড নিয়ে গিয়ে একটা ইঞ্জিনিয়ারকে বলতেছে কাল নিউজ করে দিব আমাকে যদি ঠিকাদারি কাজ দেয়া না হয় অথবা টাকা দেয়া না হয় । আবার নামসর্বস্ব ওই যে আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা একটা খুইলা নিউজ করে ওই নিউজটা কে ফেইসবুকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে একজন ভাল অফিসারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কখন অফিসার চিন্তা করে যে এতো ঝামেলা দিয়ে কাজ কি? কিছু পয়সা দিয়ে সমঝোতা করি। এখন কোনো কোনো সাংবাদিক আছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক না । ঢাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে আছেন। বাড়ির মালিক আছেন। টিপটপ চলেন গাড়ি মেইনটেইন করেন। আমার তো মাঝেমধ্যে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে আপনার আয়ের উৎসটা কি? আবার সিনসিয়ারলি কাজ করা অনেক সাংবাদিক ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন । সংকোচিত বাসার ভিতরে থাকেন। কাজেই সংবাদমাধ্যমকে,গণমাধ্যমকে যেমন রাষ্ট্রীয় চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় সেই স্তম্ভটা কত দুর্বল হয়ে গেছে সেটা যদি এই স্তম্ভের যারা দিকপাল তারা যদি একবার নিজেরাই অনুধাবন করেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে, এটাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে । ধরেন আপনি পেশাগত সাংবাদিক আপনার নামটাও সাংবাদিক। আরেক টাউট সেও কিন্তু বড় করে কার্ড সাথে নিয়ে ঘোরে, বলে আমি সাংবাদিক। এখনও এক প্যাকেট সিগারেটের জন্য আরেকজনকে বিভ্রান্ত করতেছে। নিজের মতো করে একটা সংবাদ তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় পোস্ট করে পাঠাচ্ছে। ওর উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করা। আমি মনে করি গণমাধ্যমের জন্য একটা চ্যালেঞ্জিং সময় এখন। এই হ্যাজার্ড দূর করতে গেলে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে হোক ঐক্যবদ্ধ একটা জায়গা যদি সৃষ্টি করা না হয়, তাহলে দেখা যাবে টাকার মালিক পেপার বের করছে আপনি তার কর্মচারী, আপনি সাংবাদিক না। এখানেই শেষ হয়ে যাবে।

মোস্তফা কামাল: আপনি কি মনে করেন, এটা সিনিয়র সাংবাদিকরা ঠিক করবে নাকি সরকারের কোন সহযোগিতার প্রয়োজন আছে এখানে? আসলে দেশের স্বার্থেই তো একটা সমাধান দরকার বা উত্তরণের পথ খোলা দরকার। সেটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে?

শ.ম রেজাউল করিম: সরকার সাংবাদিকদের নানাপ্রকার সহায়তা করতে পারেন। যেমন, আমাদের সমৃদ্ধ প্রেসক্লাব ভবন করে দেবে। তথ্য ভবন করে দেবে। সাংবাদিকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা দিচ্ছে। বিপন্ন সাংবাদিকদের সহায়তা করতেছে। কিন্তু সাংবাদিকদের ইউনাইটেড করার উদ্যোগ সরকারের নেওয়ার সুযোগ নাই। এই কারণে যে সরকার একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এই উদ্যোটা সরকার নিতে পারবে না । এটা এই পেশার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, এই পেশায় একসময় ছিল শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে না পেশাগত সাংবাদিক হিসাবে, অথবা বিভিন্ন সময়ে কাজ করছেন তারা মিলে বোধহয় এটা করতে পারেন।

মোস্তফা কামাল: আপনাকে অনেকগুলো প্রশ্ন করলাম যেহেতু আপনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত যদিও এখন আপনি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি । সাম্প্রতিক সময়ে বাসের হাফ ভাড়া নিয়ে ছাত্ররা যে রাস্তায় নেমেছিল, আপনি কি মনে করেন তাদের দাবিটা যৌক্তিক বা এটাকে আপনি কিভাবে দেখেন?

শ.ম রেজাউল করিম: আমি ছাত্রদের হাফ ভাড়ার দাবি শতভাগ যৌক্তিক মনে করি। একজন নাগরিক হিসাবে আমি মনে করি, তাদের হাফভাড়া অবশ্যই দিতে হবে । একজন ছাত্রদের অনেক কষ্ট করে পড়তে হয়। বিভিন্ন শহরে যে ছাত্রগুলো থাকে তার ভেতরে তিন-চতুর্থাংশ স্টুডেন্ট হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের। যারা দরিদ্র পরিবারের না তারা কিন্তু গাড়ি চালাতে পারে। বাসে যাকে উঠতে হয় ওই ছেলেটির বাবা হয়তো গার্মেন্টসে চাকরি করে, অথবা অফিসের কেরানি, অথবা ফুটপাতে বিক্রি করে বা গ্রামের কৃষকের ছেলে। তারা যদি বিকশিত হতে না পারে তাহলে বৈষম্যহীন যে সমাজ গড়ার কথা বঙ্গবন্ধু বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন তাহলে তো এদের বিকাশ হবে না। কেন হাফ ভাড়া দেব না। আমরা নিজেরা তো একসময় হাফ ভাড়া দিয়েছি । আমরা সিনেমা হলে হাফ টিকেটে ঢুকেছি । আমি কেন হাফ ভাড়া দেবো না? আর ব্যবসায়ীদের একনাগাড়ে ব্যবসায়ই করতে হবে, একবারও মাথায় ঢোকে না যে, বাসের মালিক হয়েছেন তাকে মাথায় আনতে হবে যে ওই ছেলে একদিন শুধু বাসের মালিক না বাসের নিয়ন্ত্রকও হতে পারে। তো সেই ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব যারা তাদের বিকশিত করতে গেলে তাদের সুযোগ দিতে হবে ।

মোস্তফা কামাল: কিন্তু অভিযোগ আছে, যারা পরিবহন মালিক বা নিয়ন্ত্রক যারা এই সেক্টরটাকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে তারা ক্ষমতাসীনদলের সাথে কোন না কোন ভাবে সম্পৃক্ত এবং সাবেক মন্ত্রীর কথা ও নাম উঠে আসছে এবং আপনাদের সঙ্গী বলা হয় জাতীয় পার্টিকে - তাদের নেতারাও আছে এটার সঙ্গে যুক্ত। তো আপনি কি মনে করেন যে, এদের কারণেই এই সেক্টরটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বা সরকার ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না?

শ.ম রেজাউল করিম: এখানে একটা সমস্যা আছে। দেখেন বিএনপি'র সময় শিমুল বিশ্বাসরা নিয়ন্ত্রণ করে। এরশাদের সময় এরশাদের যে ফ্রন্ট তারা করত । আওয়ামী লীগের সময় অনেকেই আওয়াম লীগের নেতা হয়ে গেছেন যারা করতেনও না কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের নেতা । কিন্তু ভেতরে কিন্তু এদের একটা চমৎকার সিন্ডিকেট আছে। যা আয় বাণিজ্য হয় বিভিন্ন জায়গায় । এখন এরা কিন্তু মফস্বল শহর থেকে শুরু করে ঢাকা পর্যন্ত এরা এমনভাবে একটি প্রতিষ্ঠ সিন্ডিকেট হয়ে গেছে চাইলে আপনি তাদের উপরে ফেলতে পারেন না। ধরেন আপনি একটা অ্যাকশনে যাবেন, সারা বাংলাদেশের সমস্ত পরিবহন বন্ধ করে দেবে। বন্ধ করে দেবার পরে কিন্তু মানুষ ভোগান্তির শিকার হওয়ার পরে বলে সরকারকি কোন উদ্যোগ নিতে পারে না? আমরা এই ভোগান্তির ভিতর ঢাকা যেতে পারতেছি না, রাস্তায় নামতে পারতেছি না। তখন কিন্তু তারা সরকারকেই গালি গালাজ করে। এই যে যারা পরিবহন সেক্টরে এটা করতেছে তাদেরকে কিন্তু কিছু বলে না গালিগালাজ করে সরকারকে। সরকার কখনো কখনো একটা আইন করেন। আবার সেই আইনের প্রয়োগ করতে গেলে সেই সময় আবার তারা বলে যে, আমরা হরতাল ডাকি নাই। কিন্তু ভেতরে ভেতরে হরতাল ডাকায় দিছে। সমস্ত পরিবহন বন্ধ। জিজ্ঞেস করলে বলে, না না আমরা তো হরতাল ডাকি নাই। এখন কোন পরিবহনের মালিক যদি পরিবহন না চলায় সেটা আমি কি করতে পারি? এরা একটি জগদ্দল পাথরের মতো এরা বসছে। কাজেই আমার বিশ্বাস সমন্বিতভাবে আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া কোন বিকল্প নাই। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। একটা দেশে নিজেদের ইচ্ছামত সবাইকে জিম্মি করে ফেলবে এটা হওয়া উচিত না।

 

মোস্তফা কামাল: আরেকটা বিষয় যে ছাত্রদের আন্দোলনের দুজন প্রাণ হারিয়েছে আমরা দেখলাম এবং বাসে আগুন দিচ্ছে এটাকে ছাত্রদেরকে কেউ উস্কে দিচ্ছে কিনা অথবা তাদেরকে কেউ ব্যবহার করে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে কিনা, আপনার কি মনে হয়? নাকি ছাত্ররাই উত্তেজিত হয়ে এরকমটা করেছে, আপনার কি মনে হয়? কারণ এর আগে ২০১৮ সালে তো আমরা দেখেছিলাম শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কিন্তু এবার দেখলাম কিছু গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা।

শ.ম রেজাউল করিম: আমাদের দেশে একটা প্রচলিত কথা আছে কারো ঘরে আগুন লাগলে অন্য কেউ এসে বলে আমি ওইখানে একটু আলু সিদ্ধ দিয়ে আসি। বিগত সময়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে আন্দোলনগুলো ছিল সেই আন্দোলনে একটি মেয়ে ভুয়া ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়ে ছিলেন যে তিনি নির্যাতিত হচ্ছেন । তাকে ধর্ষণ করা হচ্ছিল। কেমন জঘন্য ভাষায়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো। আবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তিনি বললেন যে, শুধু নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করলে হবে না সরকার পতনের আন্দোলনে আপনাদেরকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তিনি আসলেন ঘর পোড়ার ভিতরে আলু সিদ্ধ দিতে। রিসেন্টলি যে ঘটনাটি ঘটলো । কোমলমতি বাচ্চারা তাদের সহকর্মী বা সহযোদ্ধা যে দুজন মারা গেছে বা সহপাঠী মারা গেছে তাতে তাদের কষ্ট হতে পারে। কিন্তু গভীর রাতে অনেক রাত হয়ে গেছে একের পর একের পর বাসে আগুন লাগল। ওই কোমলমতি বাচ্চারা ঐ বাসে আগুন লাগায় নাই। ওই বাসে আগুন লাগাইছে তারা যারা চায় সরকারের পতন ঘটাবে অথবা দেশকে অস্থিতিশীল করবে। অথবা ছাত্রদের আন্দোলনের সুযোগটা তারা নিতে পারে কিনা । এজন্য উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়াও কিন্তু এখানে লক্ষণীয়। এজন্য আমি চাই ছাত্রদের আন্দোলন ন্যায় সঙ্গত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন তাদের হাফ ভাড়া নিতে হবে । সেটা কার্যকর শুরু হয়ে গেছে। কোমলমতি বাচ্চারা স্কুলে ফিরে যাক। আর ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই বিচার হবে কিন্তু বাস পোড়ানো বাস ভাঙ্গার প্রক্রিয়ার ভেতরে যারা এসে প্রভোকেশন দিয়েছে প্ররোচনা দিয়েছে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

মোস্তফা কামাল: আরেকটি বিষয় প্রসঙ্গক্রমে এসে যায় সেটা হল, একসময় কিন্তু বিআরটিসি বাস, এটা খুবই অ্যাক্টিভ ছিল, তারপর ট্রেন যাতায়াত মানুষের জন্য সহজ ছিল, এখনো কিছু আছে। কিন্তু এখন আর বিআরটিসি বাস কার্যকর অবস্থায় নেই। ঢাকা শহরের এখন আর বিআরটিসি বাস দেখা যায় না। আগে প্রত্যেকটা রুটেই কিন্তু বিআরটিসি বাস ছিল। তখন হাফ ভাড়ায় সবাই ও ছাত্র-ছাত্রীরা যাওয়া আসা করতো। এখন ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বিআরটিসি বাস রাস্তায় দেখাই যায়না । আপনি কি বলবেন?

শ.ম রেজাউল করিম: এটা দুর্নীতি। নির্দ্বিধায় বলব এটা দুর্নীতি। কারণ বিআরটিসি বাসে আমরা চড়েছি । আমি খুলনা থেকে আসা-যাওয়া করতাম একটা বাস চলত তখন বিআরটিসি । এটা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ। এখানে বিআরটিসি বাসের প্রতিনিয়ত লোকসান আর লোকসান। ভলভো গাড়ি নিয়ে আসলো সাইফুর রহমান। ভলভো গাড়ি গোলা এখন এমন অবস্থা হয়েছে এখন স্ক্রাপিং হিসাবে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নাই। এই বিআরটিসির বাস যখন আমরা চালাই তখন ভীষণভাবে লোকসান যায়। যখন একজনকে ভাড়ায় দেই তখন তিনি লিজ নিয়া লিজের টাকা পরিশোধ করেও তিনি লাভ করছেন । এই ম্যানেজমেন্টের এসব জায়গায় এমন দুর্নীতির সিন্ডিকেট ঢুকছে যেন চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী । এদেরকে মাননীয় মন্ত্রী অনেক সময় সচেতন করেন গালিগালাজ করেন বকাবকি করেন। সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন। কিন্তু এখানে ড্রাসটিক একশন যদি না নেয়া হয় । আমি গণপরিবহন চালু করব । ভারতের কোন কোন প্রদেশে আছে কিন্তু শুধু গণপরিবহন শুধু গণপরিবহন। তো আমরা বাংলাদেশ কেন চালাতে পারব না? আমি গণপরিবহন চালাবার পরে যারা প্রাইভেট খাত তারা যদি নিয়ম অনুযায়ী না চালায় আমি টোটালটাই বন্ধ করে দিতে পারি । সেই উদ্যোগটাই নেওয়া বোধহয় দরকার ।

মোস্তফা কামাল: সেই উদ্যোগটা কিভাবে নেয়া হবে? সরকারের দিক থেকেই তো নিতে হবে উদ্যোগ।

শ.ম রেজাউল করিম: একজন নাগরিক হিসাবে আমি মনে করি সেই উদ্যোগটা নেয়া দরকার।

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন