সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ডায়াসের সামনে লাগানো লোগো’তে বাংলায় লেখা হয়েছে ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষের শপথ’। যেখানে মুজিববর্ষ-এর বানান লেখা হয়েছে ‘মুজিবর্ষ’। যা রীতিমত ভয়াবহ ভুল। শপথ অনুষ্ঠানের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভুলটি। এনিয়ে ট্রলও চলছে।
যদিও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির গত ১৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও দপ্তরে অনুষ্ঠান সূচি নিয়ে যে চিঠি পাঠিয়েছে এতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, প্রথম দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই থাকবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচালনায় মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীর শপথ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী আয়োজন ছিল আজ সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এসময় ওই ডায়াসের সামনে যে লোগোটিতে সুস্পষ্টভাবে লেখা ছিল ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষের শপথ’। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা এসময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলছিল। তাই উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র্যালি’। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিজাব র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে র্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।
র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখতে পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতায় দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’
র্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’
হিজাব র্যালি শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে এক সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। তাছাড়া রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হাজী সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৫০) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়ন দায়েমছাতী গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র। তিনি হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক।
জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলন শনিবার বিকাল ৩টায় বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে পূর্বনির্ধারিত একটি প্রোগ্রামে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার গাড়ি বহর বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজার পার হওয়ার সময় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা পেছন থেকে হামলা চালায় বলে দাবি করেন আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা। হামলায় ৫ জন আহত হয়। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে নাঙ্গলকোট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, আমি আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে সামাজিক একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করি। দাওয়াত শেষে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলায় পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভায় আসার পথে বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজারে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা আমার গাড়ি বহরের পিছনে হামলা চালায়। হামলায় ৫ জন আহত হয় এবং হামলায় হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নিহত হয়েছেন। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়ার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা সর্ম্পকে আমি জানি না। আমার একটি প্রোগ্রাম ছিল, শান্তিপূর্ণভাবে আমি সে প্রোগ্রাম শেষ করে এসেছি। আমার প্রোগ্রামে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ একে ফজলুল হক বলেন, সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি। ছবিঃ সংগৃহীত
কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন কানাডার শীর্ষ নেতারা।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে'।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত পাঁচজন প্রার্থী ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যাদের একজন কার্নি। ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক এই গভর্নর কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির সর্বাধিক এমপির সমর্থন পেয়েছেন।
আগামী ৯ মার্চ লিবারেল পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হবে। আগামী ২০ অক্টোবর বা তার আগেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৫৯ বছর বয়সী কার্নি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো ভাবছেন কানাডা ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব, পিছু হটব না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা নেব।'
এমন শুল্কের জন্য বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের যে সুনাম, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
'এই শুল্ক (যুক্তরাষ্ট্রের) প্রবৃদ্ধিতে আঘাত হানবে। মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। সুদের হারও বাড়াবে,' যোগ করেন তিনি।
শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র 'এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের সবচেয়ে কাছের বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে' বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরেক প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার' পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডা 'জোরালো' ও 'তাৎক্ষণিক' জবাব দেবে।