বীর সন্তানদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
ছবি : সংগৃহীত
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার পর তারা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহিদ বেদীর সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে স্মরণ করেন যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহিদ, দুই লাখ মা-বোন যারা সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল সামরিক কায়দায় সালাম জানায়। একইসঙ্গে শহিদদের স্মরণে বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
এরপর পর্যায়ক্রমে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় সভাপতি হিসেবে শহিদদের প্রতি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা সঙ্গে ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা লিখেন।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল ৮টার পর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর দলীয় সভানেত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন।
জাতির বীর সন্তানদের প্রতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
এর আগে মন্ত্রিসভার সদস্যরা মহান মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ট সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহিদ বেদী।
পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল বাংলার তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী, আবাল বৃদ্ধবণিতা।
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জন হয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করেন যুদ্ধে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী।
এনএইচবি/টিটি