রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হবেন না যানজট হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। অতিরিক্ত গাড়ি এখন রাস্তায় চলে। সবাই যদি একটু ট্রাফিক রুলস মেনে চলে আর গাড়িটা যদি কম বের করে তাহলে আর জ্যাম হয় না । একটা ফ্যামিলির একটার জায়গায় যদি ২-৩ টা গাড়িতে চড়ে আবার ট্রাফিক জ্যাম হলে গালি দিবেন এরকম করলে তো চলবে না। গাড়িতে চড়বেন না, ট্রাফিক জ্যাম হবে না; এটা হল বাস্তবতা।
বুধবার (০৬ এপ্রিল) একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনি বক্তব্যে সংসদ নেতা একথা বলেন। এর আগে বিরোধী দলীয় উপ নেতা জিএম কাদের ঢাকার যানজট নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার জবাবে সংসদ নেতা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের জন্য মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। তো উন্নয়নট কার জন্য? মেট্রোরেল কার জন্য? মেট্রোরেল এদেশের সাধারণ মানুষের জন্য। মানুষ যাতে সরাসরি চলাচল করতে পারে তার জন্য। এখন হয়তো আপাতত কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু মেট্রোরেল হয়ে যাবার পর উত্তরা থেকে যদি বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যায় অল্প সময়ের মধ্যে ৬০ হাজার লোক যাতায়াত করতে পারবে। তখন গাড়ি নেওয়া লাগবে না। সাধারণ মানুষের জন্য আরও বাসের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। মেট্রো রেলে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যাতে মানুষ সহজে চলতে পারে।
গ্যাসের সংকট নিয়ে সংসদ নেতা বলেন, প্রাকৃতিক কারণে একটু সমস্যা হয়েছে। কয়েকদিন গ্যাসের ৬ টা কুপে বালু দেখা দিয়েছে। তারপরও ঠিক ঠাক করে সেটা কনমত চালু রাখা হয়েছে গ্যাস তোলা বন্ধ হয়নি। কিন্তু অন্য সময় হলে এটা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেত। চারটা কূপ সংস্কার করা হয়েছে, দুইটা বাকি আছে, সেটাও হয়ে যাবে। এই সমস্যাটা থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিনিসপত্রের দাম বিষয়ে বলেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী দাম যখন বেড়েছে। তাছাড়া রড সিমেন্ট প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে। শুধু আমাদের দেশে না, সব দেশেই বেড়েছে। দাম বাড়ে সঙ্গে সঙ্গে দাম অ্যাডজাস্ট করা হয়। তাই যারা কাজ করে তাদের সেটা নিতে হয়, এটা করতেই হবে। তানাহলে কাজ সম্পন্ন হবে না। সস্তার আশায় বসে থাকলে কাজ তো আগাবে না। নতুন করে আবার প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে। শুধু এখানে নাই আমেরিকাতেও অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে তাদেরও অনেক শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে। আন্তর্জাতিক নিউজ করে দেখলে, সেগুলো দেখতে পারবেন। ১ ডলারের তেল সেখানে ৪ ডলার হয়ে গেছে। আমাদের এখানেও তো জিনিসের দামে তার ধাক্কা আসবেই। জাহাজের ভাড়া অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এগুলোরও একটা চাপ আসবেই। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি।
বিরোধীদলীয় উপ নেতার বক্তব্য এসেছে মাথাপিছু আয় যেমন বেড়েছে সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে; এটা হল বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা হচ্ছে করোনার ধাক্কা আর একটা হচ্ছে যুদ্ধের ধাক্কা। কিন্তু এই ধাক্কার মধ্যেও আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি, গড়ে ৬ দশমিক ৩ তিন ভাগ। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলারে। জিনিসের দাম বাড়লেও মানুষের আয় কিন্তু বেড়েছে, এটা ঠিক। দারিদ্রসীমা হ্রাস পেয়েছে। এখন সেনশাস রিপোর্ট যদি বের হয় দেখা যাবে দারিদ্রসীমা বাড়েনি, সেটা বরং কমেছে। তবে হ্যাঁ মধ্যবিত্ত বা যারা কিছু কাজ করতো করোনার কারণে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছিল, আমরা বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে সচল রাখার ব্যবস্থা করেছে। যেন এক ধাক্কায় মানুষ কষ্ট না পায়।
বিরোধীদলীয় উপনেতা আশঙ্কা করেছেন শ্রীলংকার মতো হবে সেই আশঙ্কার কথা বলেছেন তার জবাবে সংসদ নেতা বলেন, এটা বাস্তব। তবে আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে এ পর্যন্ত আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে যত ঋণ নিয়েছি ঋণটা আমরা সব সময়, সময় মত পরিশোধ করে থাকি। বাংলাদেশ একটা দেশ, যে দেশটি কোনদিনই কোন সময়ই ঋণ পরিশোধে ডিফল্ডার হয় না, হবেও না। সে দিক থেকে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি অনেক মজবুত। আমরা অত্যন্ত সতর্ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মোটা চালের দাম এখন কেজিতে ৪৬ টাকার মতো আছে, সেটা খুব বেশি একটা বাড়েনি চিকন চাল বা মাঝারি চাল কিছুটা বেড়েছে। আলু পাইকারি বাজারে খুচরা বাজারে ২০ টাকা। এখন আলু পেঁয়াজের দাম এর জন্য কৃষক হাহা করে। সেটাও আমাদের দেখতে হবে। বেগুনের দাম বেড়েছে রমজান আসলেই হঠাৎ করে বেগুন ১১০ টাকা কেজি গেল। সেটা এখন কমে দাড়িয়েছে ৮০ টাকা। বেগুন না খেয়ে অন্য যে সকল সবজি আছে সেটা দিয়ে খেলেই হয়। আমরা তাই খাই। মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বেগুনি খুব ভালো লাগে।
এসএম/