এ বছরই পদ্মাসেতু খুলছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবকাঠামো খাতের গুরুত্ব অপরিসীম তাই বর্তমান সরকার দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলেই গত এক দশকে অবকাঠামো খাতে দৃশ্যমান হয়েছে আমূল পরিবর্তন। দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে ধাবমান বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবিরোধী বিশেষ গোষ্ঠীর চক্রান্তে প্রকল্পের কাজ শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়। তবে বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পসমূহের একটি।’
বুধবার (৬ এপ্রিল) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এ কথা বলেন। অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত বলে ঘোষণা দেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা নদীর উপর ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট নির্মাণাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন এ বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতুটির মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১ টি স্প্যানের দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত সেতুটির ওপরে স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। প্রকল্পটির প্রথম মেয়াদকাল ছিল জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫। কিন্তু দেশবিরোধী বিশেষ গোষ্ঠীর চক্রান্তে প্রকল্পের কাজ শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়। বিশ্ব ব্যাংক মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মামলা হয়। কানাডার আদালতে প্রমাণ হয় যে অভিযোগটি ছিল মিথ্যা এবং কোনো দুর্নীতি হয়নি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পসমূহের একটি। ইতিমধ্যে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে আপ্রোচ রোডের কাজ ও সার্ভিস এরিয়া শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ । ২০২০ এর ডিসেম্বরে ৪১ তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে পদ্মার দুই পাড় সরাসরি যুক্ত হয়েছে। বর্তমানের সেতুতে কার্পেটিং ভায়াডাক্ট কার্পেটিং ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মূল সেতুর মুভমেন্ট জয়েন্ট, ভায়াডাক্ট মুভমেন্ট জয়েন্ট,, ল্যাম্পপোস্টম অ্যালুমিনিয়াম রোলিং, গ্যাস পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ ও রেল লাইনের কাজ চলমান। পদ্মা সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা নাওডোবা প্রান্তে থেকে জেলা শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ এর শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।’
এসএম/এসএ/