ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের যুগে প্রবেশ করল দেশ
পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি'র যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। আজ রবিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ভার্চুয়ালি ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে একটি মাত্র মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছিল। তখন কল রেটও ছিল অনেক। কোম্পানিটি ছিল বিএনপির একজন মন্ত্রীর।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারছে জানিয়ে জয় বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার চারটি কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছে। এর বাইরে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি টেলিটক রয়েছে। আমরা কল রেট কমিয়েছি।
টেলিটককে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করায় তাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, টেলিটক ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ্, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট সিমন লিন, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝ্যাং ঝেংজুন এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন।
প্রাথমিকভাবে ছয়টি স্পটে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক। স্পটগুলো হলো- রাজধানীর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ ভবন এলাকা এবং সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা ও টুঙ্গিপাড়া।
আপাতত শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন অপারেটর সংস্থা টেলিটক উল্লিখিত স্থানগুলোতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক কাভারেজ দেবে। পরবর্তীতে ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফাইভ-জি সেবা দেবে টেলিটক।
২০২২ সালের মার্চে বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ নিলামে দেওয়ার পর বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর এই প্রযুক্তি চালু করবে। টেলিটক ও বিটিসিএল দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনোমিক জোনগুলোতে এই সেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় ফাইভ-জি প্রযুক্তির প্রথম পরীক্ষা সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়।
ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত ও গুণগত মানের ভয়েস কল ও ফোর-জি থেকে বহু গুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীর রোবট সার্জারি করা যাবে। ড্রাইভারবিহীন গাড়ি চালানো যাবে, স্মার্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে অটোনোমাস উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যাবে।
আরইউ/এসআইএইচ/