শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান

সেইন্ট ব্রিউক

চল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে। সেইন্ট ব্রিউক ট্রেনের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে একটা লোক। অননুমোদনের চাহনি নিয়ে সে বসন্ত বিকেলের ফ্যাকাশে আলোয় প্যারিস থেকে চ্যানেল পর্যন্ত বিস্তৃত সমতল আবদ্ধ পল্লী এলাকার গ্রাম-গঞ্জ আর কুৎসিত বাড়ি ঘরগুলোর পেছনের দিকে ধাবিত হওয়া দেখছে। তার দৃষ্টির সামনে দিয়ে পালাক্রমে পার হয়ে যাচ্ছে তৃণভূমি আর শত শত বছর ধরে প্রতি ইঞ্চি কর্ষিত হয়ে আসা আবাদী জমি। ছোট করে ছাঁটা চুলের খালি মাথা, লম্বা মুখাবয়বের কোমল চেহারার লোকটার নীল চোখের দৃষ্টি সোজা সাপটা।

মাঝারি উচ্চতার লোকটার বয়স চল্লিশ হলেও ওভারকোট পরিহিত অবস্থায় তাকে দেখাচ্ছে বেশ পাতলা ছিপছিপে। হাত দুটো রেলিঙের ওপর শক্ত করে ছড়িয়ে দিয়ে শরীরের ভর রেখেছে সে এক পাশের নিতম্বের ওপরে। গোটা কবন্ধ আয়েসী ভঙ্গিতে সোজা হয়ে অছে। চেহারায় ফুটে উঠেছে যোগ্যতা আর ওজস্বিতার ভাব। তারপর ট্রেনটা ধীর লয়ে আস্তে আস্তে একটা মলিন চেহারার স্টেশনে থামল। এক মুহূর্ত পরে অভিজাত চেহারার এক অল্প বয়সী মহিলা তার পাশের জানালার পাশ দিয়ে চলে গেল। তার স্যুটকেস এক হাত থেকে আরেক হাতে বদল করতে ওখানে হঠাৎ থেমে যায় মহিলা। ঠিক তখনই তার নজরে পড়ে লোকটা। মহিলার দিকে তাকিয়ে সে হাসে। মহিলাও না হেসে পারে না। লোকটা জানালা নামিয়ে দেয়। ততক্ষণে ট্রেন চলতে শুরু করেছে। লোকটা বলে ওঠে, খুব খারাপ। মহিলা তখনও তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

লোকটা তার তৃতীয় শ্রেণির কম্পার্টমেন্টে নিজের আসনে বসতে চলে যায়। ওখানে তার আসনটা জানালার পাশে। তার সামনের আসনে আরেকটা লোক, মাথায় গুচ্ছ গুচ্ছ লাগানো চুল। অবশ্য তার ফোলা ফোলা দাগভরা মুখে যতটা বোঝায় তার বয়স তত বেশি নয়। গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে লোকটা। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস টানছে। মনে হয় হজমের জন্য তার শক্তি ক্ষয় করতে হয়। থেকে থেকে দ্রুততার চাহনিও ফেলছে লোকটা এই ভ্রমণকারীর ওপরে। একই আসনের করিডোরের পাশটাতে একজন কিষাণী মহিলা তার মতো মানূষের পক্ষে যতটা সম্ভব ভালো পোশাক পরার চেষ্টা করেছে বলে মনে হয়–মোমের তৈরি একগুচ্ছ আঙুর খচিত একটা অদ্ভূত হ্যাট তার মাথায়। পাশে বসা মলিন আর ফ্যাকাশে মুখের একটা বাচ্চা ছেলের নাক মোছাতে ব্যস্ত সে। ভ্রমণকারীর হাসি মিলিয়ে যায়। পকেট থেকে একটা ম্যাগাজিন বের করে পড়া শুরু করে সে। ম্যাগাজিনের লেখাটা পড়তে পড়তে তার হাই উঠছে বার বার।

একটু পরে ট্রেনটা থামল। সেইন্ট ব্রিউক লেখা একটা প্ল্যাকার্ড জানালা পথে চলে এল। সে উঠে পড়ে কোনো রকমের তাড়াহুড়া না করে মাথার ওপরের র‌্যাক থেকে পেটমোটা স্যুটকেসটা তুলে নিল। পাশের যাত্রীদের উদ্দেশে মাথা ঝাঁকি দিয়ে দ্রুত তিন ধাপ নেমে গাড়ির বাইরে চলে এল। বের হওয়ার সময় তার সহযাত্রীরা বিস্ময়ের সঙ্গে হলেও তার মাথা ঝাঁকানির জবাব দিয়েছে একই কায়দায়। প্ল্যাটফর্মে নেমে বাম দিকে তাকিয়ে দেখে একটু আগে যে রেলিংটা ধরেছিল সেখানে কালিঝুলির ময়লা। একটা রুমাল বের করে সযত্নে ময়লা মুছে ফেলল সে। তারপর প্রস্থান পথের দিকে এগিয়ে গেল সে। যেতে যেতে দেখতে পেল, তার মতোই আরো যারা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের বেশির ভাগেরই মুখে দাগদাগালি আর পরনে ভাবগম্ভীর পোশাক-আশাক। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট দেখানোর জন্য নিজের সময় আসা পর্যন্ত চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগল সে। একজন অতি বাকবিমুখ কেরানি টিকেট দেখে ফেরত দিলে সে ওয়েটিং রুম পার হয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পেল রুমটার দেয়াল পুরোপুরি নোংরা; এমন কি দেয়ালের একমাত্র পোস্টারে ভূমধ্যসাগরীয় সৈকতের চিত্রও কালিঝুলিতে মাখামাখি। বিকেলের তীর্যক আলোর মধ্য দিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে সে শহর অভিমুখি রাস্তায় নামল।

হোটেলে গিয়ে আগে থেকে রিজার্ভ করে রাখা রুমের কথা জিজ্ঞেস করতেই পেয়ে গেল। গোল আলু মার্কা মুখের পরিচারিকা তার ব্যাগটা রুম পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চাইলে সে রাজি হলো না। বরং রুম দেখিয়ে দেওয়ার জন্য সে পরিচারিকাকে বকশিশ দিল। মহিলার বিস্ময়বোধ হতে লাগল এবং তার চেহারাজুড়ে বন্ধুত্বসুলভ ভাব ফুটে উঠল। আবার হাত ধুয়ে দরজা তালাবদ্ধ না করেই সে নিচে নেমে এল। লবিতে পরিচারিকার সঙ্গে দেখা হলে কবরস্থানের কথা জিজ্ঞেস করল সে। মহিলা অনেক ব্যাখ্যাসহ বিস্তারিত করে সবকিছু বুঝিয়ে বলল তাকে। সেও মনোযোগী শ্রোতা হয়ে শুনল। তরপর পা বাড়াল মহিলার নির্দেশনা অনুযায়ী।

এখন সে রাস্তায় নেমে পড়েছে। রাস্তা খুব চাপা; দুপাশে অতিসাধারণ বাড়িঘর কুৎসিত লাল টালির তৈরি। এখানে সেখানে চোখে পড়ছে পুরনো দিনের কাঠের অযত্নে তৈরি পড়ে থাকা ভাঙা ফলক। দোকানগুলোর খোলা জানালায় দেখা যাচ্ছে কাচ, প্লাস্টিক এবং নাইলনের তৈরি সব জিনিসপত্র এবং পশ্চিমের যে কোনো শহরে পাওয়া যায় এমন সব সিরামিকের তৈরি জিনিসপত্র। তবে পথচারীরা কেউ থামছেই না দোকানগুলোর সামনে। খাবারের দোকানগুলোতে শুধু প্রাচুর্যের লক্ষণ চোখে পড়ছে। কবরস্থানের চারপাশ উঁচু দেয়াল ঘেরা। মূল ফটকের সামনে ফুল আর মর্মর পাথর কাটার দোকান খুলে আছে। দোকানগুলোর একটার সামনে সে দাঁড়ায়। একটা ফুটফুটে বাচ্চা ছেলে সেখানে এক কোণে মর্মর পাথরের একটা বড় খণ্ডের ওপর বসে বাড়ির কাজ করছে। পাথর খণ্ডতে এখনো কিছু খোদাই করা হয়নি। কবরস্থানের ভেতর ঢুকে সে তত্ত্বাবধায়কের ঘরের দিকে গেল। লোকটা সেখানে নেই। অতি সাধারণভাবে সাজানো অফিস রুমটাতে সে অপেক্ষা করতে থাকে। দেয়ালে একটা মানচিত্রের দিকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে তাকিয়ে ছিল সে। ঠিক তখনই লোকটা ঢুকল। চেহারায় লম্বা লোকটার শরীর প্যাঁচানো গ্রন্থিযুক্ত, নাক লম্বা। লোকটার উঁচু কলারঅলা জ্যাকেটের ভেতর থেকে ঘামের গন্ধ ভেসে আসছে। ১৯১৪ সালের যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কবরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চায় সে।

তত্ত্বাবধায়ক বলল, হ্যাঁ, আছে। তাদের কবরস্থানকে বলা হয় ‘ফরাসি স্মৃতির স্থান’। আপনি কী নাম খুঁজছেন?

–হেনরি করমারি।

তত্ত্বাবধায়ক একটা বাঁধাই খাতা বের করল। নামের একটা তালিকা বরাবর তার নোংরা আঙুল চালাতে লাগল। তার আঙুল একটা নামে এসে থেমে গেল। সে বলল, করমারি হেনরি, মার্নের যুদ্ধক্ষেত্রে আশঙ্কাজনকভাবে আহত হয়েছিলেন, ১৯১৪ সালের ১১ অক্টোবর, সেইন্ট ব্রিউকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

–হ্যাঁ, এই নামই।

খাতাটা বন্ধ করে তত্ত্বাবধায়ক বলল, আসুন। কবর ফলকের প্রথম সারির দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল সে। কয়েকটা সাধারণ; বাকিগুলোর অবস্থা ভগ্ন, কুৎসিত। সবগুলোকে আচ্ছাদন করে রাখা হয়েছে এমন সব মূল্যহীন আবরণে যাতে পৃথিবীর যে কোনো জায়গাকেই সম্মানে না তুলে বরং নিচের দিকে নামিয়ে আনতে পারে।

তত্ত্বাবধায়ক জিজ্ঞেস করল, তিনি কি আপনার আত্মীয় হতেন?

তিনি আমার বাবা।

তাহলে তো খুব কষ্টের কথা।

–না, তেমন নয়। তিনি যখন মারা যান আমার বয়স এক বছরেরও কম। বুঝতেই পারছেন বোধশক্তিই তখন হয়নি আমার।

–তবু কষ্টেরই কথা। কত মানুষ মারা গেছেন।

জ্যাক করমারি কিছুই বলল না। অবশ্যই যারা মারা গেছেন তাদের সংখ্যা বিরাট। তবে মনের মধ্যে বাবার প্রতি সন্তানের যে টান সেটা ফিরিয়ে আনতে পারছে না সে। এতদিন সে ফ্রান্সে ছিল: তার মা অনেক দিন ধরে যে কাজটা করার কথা তাকে বলে আসছেন সেটা করার ব্যাপারে নিজের কাছেই সে বহুবার প্রতিজ্ঞা করেছে। মা আলজেরিয়ায় থাকেন। এত বছর ধরে তিনি জ্যাকের বাবার কবর দেখে আসতে বলেছেন। মা নিজেও দেখতে পারেননি। তার মনে হলো এই কবর দেখতে আসার কোনো মানে হয় না। প্রথমত তার নিজের কথা বলতে গেলে–সে তো বাবাকে কখনও দেখেনি; বাবা দেখতে কেমন ছিলেন সে সম্পর্কে তার কোনোরকম ধারণাই নেই। আর পুরনো দিনের এসব অচল আবেগী ব্যাপার-স্যাপারও তার পছন্দ নয়। আর মায়ের কথা বলতে গেলে–মা তো বাবা সম্পর্কে তেমন কিছু বলেননি, বাবার কী দেখতে যেতে হবে। তার চেহারার কোনো ধারণা নেই। তবে যেহেতু তার পুরনো পরামর্শদাতা সেইন্ট ব্রিউকে অবসর গ্রহণ করেছেন, তাকেও দেখে আসা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। একই সঙ্গে তার মৃত অদেখাজনকেও দেখে আসতে পারে। বৃদ্ধ বন্ধুকে দেখতে যাওয়ার আগেই বাবার কবরস্থানে এসেছে যাতে মনের ভেতরে হালকা বোধ হতে পারে।

–এই যে এইটা, তত্ত্বাবধায়ক বলল। তারা একটা উঁচু করে বাঁধানো জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। ধূসর রঙের ছোট ছোট পাথর দিয়ে জায়গাটা ঘিরে রাখা হয়েছে। পাথরগুলোর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে কালো রং করা একটা ভারী শিকল। কবর ফলকগুলো সংখ্যায় অনেক, দেখতে একই রকম; সারি সারি সাধারণ চেহারার নাম খচিত চার কোণাকার ফলক। প্রত্যেকটা কবর একগুচ্ছ করে তাজা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক বলল, বিগত চল্লিশ বছর ধরে এই কবরগুলো এভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এই যে, দেখুন আপনার বাবার কবর, লোকটা প্রথম সারির একটা কবর দেখিয়ে দিল। কবর থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে পড়ল জ্যাক করমারি। তত্ত্বাবধায়ক বলল, আপনি দেখুন, আমি কাজে ফিরে যাচ্ছি।

জ্যাক কবর ফলকটার দিকে ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। হ্যাঁ, এটাই তার বাবার নাম। উপরের দিকে চোখ মেলে জ্যাক দেখল, ছোট ছোট সাদা আর ধূসর মেঘ ভেসে যাচ্ছে আকাশময়। আকাশ যেন কিছুটা বেশি ফ্যাকাশে। আকাশ থেকে একবার উজ্জ্বল আরেকবার ছায়াচ্ছন্ন আলো পতিত হচ্ছে। তার চারপাশে মৃতদের জগতে শুধুই নীরবতা বিরাজ করছে। উঁচু দেয়াল পার হয়ে দূরের শহর থেকে মৃদু কোলাহল ভেসে আসছে; এছাড়া আর কোনো সাড়াশব্দ নেই কোথাও। দূর প্রান্তের কবরগুলোর ওপরে মনে হয় ছায়া ছায়া কী যেন থেকে থেকে ভেসে বেড়াচ্ছে। ভেজা ফুলগুলোর গন্ধের বাইরে ওপরের দিকে তাকিয়ে জ্যাক করমারি বাইরের কিছু একটা ধরতে চাইছে কল্পনায়: দূরের নিশ্চল সমুদ্র থেকে লবণাক্ত একটা সুগন্ধ ভেসে আসছে।

ঠিক তখনই পাশের একটা কবর ফলকের সঙ্গে একটা বালতির ঠোকা লাগার শব্দে তার ধ্যানমগ্নতা কেটে যায়। তখন তার বাবার কবর ফলকের ওপর লেখা বাবার জন্ম-মৃত্যুর বছর দেখতে পায়। এতদিন সে জানতেই পারেনি এই তথ্যটা ১৮৮৫–১৯১৪ সালের। সঙ্গে সঙ্গে পাটীগণিতের হিসাব তার পরিষ্কার হয়ে যায়: মৃত্যুর সময় বাবার বয়স হয়েছিল উনত্রিশ বছর। হঠাৎ একটা বিষয় বুঝতে পেরে তার শরীর পর্যন্ত কেঁপে উঠে: তার নিজের বয়স এখন চল্লিশ বছর; কবরে শুয়ে থাকা মানুষটা, তার বাবা, বয়সে তার চেয়ে ছোট।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির কাঁধে এখন অনেক দ্বায়িত্ব। এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা বিএনপি কে নিয়ে।  সুতারাং দেশের মানুষের আকাঙ্খা অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের আচরন করতে হবে। তৈরী হতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,  অন্তবর্তী সরকারকে বুঝতে হবে জনগন কি চায়। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সব সংস্কার অন্তবর্তী সরকারের দ্বারা সম্ভব নয়। তারা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তারপর নির্বাচিত সরকার বাকী সংস্কার করবে।

এ সময় দ্রুত নির্বাচনের দেয়ার  দাবী জানান তারেক রহমান। 

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং আনন্দ মুখর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার সময় স্থানীয় টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করতে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গনতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।

এসময় তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন গুম ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশকে দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মোকাবেলা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর এটা করতে হলে অবিলম্বে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার।

শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। এরপরে সম্মেলনের উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সম্মেলনে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, এড.নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিথা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা, জেলা জাসাসের সভাপতি সেলিমুল হাবিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ।

সম্মেলনের একপর্যায়ে জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। 

সম্মেলনে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আজকের সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী