শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

সবাই মিলে পোটলাগুলো মাথায় তুলে হাঁটতে শুরু করে। চারদিকে অনেক লোকজন। রাস্তায় মানুষের লাইন। সবাই তটস্থ হয়ে দ্রুতপায়ে হাঁটছে সীমান্তের দিকে। আসমানীর জন্য দ্রুত হাঁটা হচ্ছেনা ওদের। আকাশীর মনে আতঙ্ক দানা বেঁধে ওঠে। আসমানীর মুখের দিকে তাকালে ভয় পায়। কিছুক্ষণ পরে আসমানী বলে, মাগো আমার পানি ভেঙে গেছে। ব্যাথাও উঠেছে। আমি আর এক পাও হাঁটতে পারবনা। আমি এই বটগাছের নিচে শুয়ে পড়ি।


 কি বলিস মা?
 এটাই কথা, আর অন্য কোনো কথা নাই।
আসমানী বটগাছের নিচে গিয়ে গড়িয়ে পড়ে।
রবিউল জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে ওর?

 বাচ্চাটার জন্ম হবে। মারুফ তুমি ওই পোটলা থেকে দুটো শাড়ি বের করে চারদিক ঘেরাও করে দাও।
মারুফ চারদিকে তাকিয়ে বলে, রাস্তায় লোকজন কমে গেছে। সবাই অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। আমরা কিছুক্ষণ নিরিবিলি থাকতে পারব।

কথা বলতে বলতে মারুফ চারদিকের ছোট ছোট গাছ ধরে শাড়ি পেঁচিয়ে দেয়।

মাটিতে শুয়ে আসমানী কঁ-কঁ শব্দ করছে। আকাশী ওকে একটি শাড়ি বিছিয়ে দিয়ে শুইয়েছে। ওর শব্দ শুনে আকাশী বুঝে যায় যে প্রবল ব্যথা উঠেছে। বাচ্চাটা বোধহয় অল্পক্ষণে বেরিয়ে আসবে। নাড়ি কাটার জন্য বেøডটা হাতে নিয়ে অপেক্ষা করে আকাশী। একসময় ভূমিষ্ঠ হয় শিশু। কান্নার শব্দে জানান দেয় নিজের আগমনের খবর। রবিউল আর মারুফ শাড়ির আড়ালে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, কি বাচ্চা হলো? ছেলে না মেয়ে?

 ছেলে। বেশ বড়সড় হয়ে জন্মেছে।
 আলহামদুলিল্লাহ। রবিউল দুহাত উপরে তোলে। বলে, আল্লাহমাবুদ আমাদের নাতিটি সুস্থ থাকুক। ওকে কোলে নিয়ে আমরা সীমান্ত পার হব মাবুদ। ওর মাও যেন সুস্থ থাকে মাবুদ। যে ছেলে মুক্তিযুদ্ধকালে রাস্তায় জন্ম নেয় সে আমাদের স্বাধীনতার সৈনিক।
মারুফ বলে, মা আসমানী কি পানি খাবে?
 হ্যাঁ, বাবা দাও।

মারুফ পানি ভর্তি বোতলটা পর্দার নিচ দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়। আসমানী মাথাটা সোজা করে খানিকটুকু পানি খায়। ওর মনে হয় উঠে বসারও শক্তি নেই। বাচ্চাটাকে মা ধোয়া-মোছা করছে। কিন্তু ও কেমন জানি নেতিয়ে পড়ছে। চোখ খোলেনা। হাত-পা তেমন করে নাড়াচাড়াও করে না। আকাশী বিষণœ হয়ে যায়। কাউকে কিছু বলতে পারেনা। এই রাস্তায়ওতো চারদিকে মাঠের পরে মাঠ। কোথাও কোন ঘরবাড়ি নেই যে বাচ্চাটাকে সেখানে নিয়ে কোনো ঘরের মাঝে রাখতে পারবে।
হঠাৎ করে ও তীব্রস্বরে কান্না শুরু করে। আকাশী ওকে দুহাতে জড়িয়ে নানাভাবে দোলায়, কিন্তু ওর কান্না থামেনা। ওর কান্নায় আসমানীও কান্না শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, মাগো ও কি দুধ খাবে?

 খেতে পারে। কান্না থামুক তখন তোর কাছে দেব।
 এখনই দাও মা। ওকে আমি বুকে রাখব।
 নারে, তুই একটু শান্ত থাক মা। ওর কান্না থামুক।
আকাশী অনেক চেষ্টা করে শিশুর কান্না থামাতে পারছে না। ওর নিজেরও মন খারপ হয়ে যায়। আকাশীও কাঁদতে শুরু করে। জন্মের পরে কোনো শিশুকে এভাবে কাঁদতে দেখেনি ও। একটু পরে কান্না থেমে গেলে শিশুটি মাথা কাত করে গড়িয়ে পড়ে ওর কোলের ওপর। চোখ বন্ধ, নাকে নিঃশ^াস নেই। ও বুঝতে পারে মরে গেছে ছেলেটি। চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে আকাশী। রবিউল আর মারুফ জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে?
 মরে গেছে আমাদের নাতি।
 মরে গেছে? মারুফও চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে। রবিউলও। কান্নার ধ্বনি চারদিকে ছড়ায়। আসমানী জ্ঞান হারিয়েছে। রবিউল শাড়ির পর্দা খুলে ফেলে। শাড়ি ভাঁজ করে আসমানীকে ঢেকে দেয়। মাথা খোলা রাখে।
 ওর মাথায় পানি দিতে হবে মারুফ।
 আমিও তাই চিন্তা করছি। আমরাতো ছোট একটা বালতি এনেছি। সামনের এই ডোবা থেকে আমি পানি নিয়ে আসছি।
মারুফ বালতি নিয়ে দৌড়াতে থাকে। রবিউল মেয়ের মাথায় হাত বোলায়। অল্প সময়ে ফিরে আসে মারুফ। রবিউল মেয়ের মাথা উপরে তুলে ধরলে মাথায় পানি দেয় মারুফ। বেশ কিছুক্ষণ পরে চোখ খোলে আসমানী। বাবার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।
 কাঁদিসনা মা। আর কাঁদিসনা। ধৈর্য ধর। আমাদের অনেক পথ যেতে হবে।
আসমানী বাবার হাত ছাড়িয়ে উঠে বসে। পেতে দেয়া শাড়ি ভিজে ঘাসের সঙ্গে মিশে আছে। প্রবল অস্বস্তিতে ও চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় ওর মায়ের কোলে রাখা মৃত শিশুর দিকে ঘাড় নিচু করে তাকিয়ে আছে ওর মা। আসমানী মাকে বলে, ওকে আমার কোলে দাও মা।
 আকাশী বলে, হ্যাঁ দিচ্ছি। তুই কিছুক্ষণ কোলে রাখ। ওকেতো কবর দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
 এই রাস্তার ধারে?
 হ্যাঁ, এখানেই দিতে হবে। আর কোথায় যাব আমরা। মারুফ তুমি কবর খোঁড়ার ব্যবস্থা কর।
মারুফ প্রথমে শব্দ করে কাঁদে। তারপর দুহাতে চোখ মোছে। রবিউল বলে দেয় কোন পোটলায় দা আছে। বিভিন্ন সময়ে দায়ের দরকার হয়। সেজন্য রবিউল পোটলায় ঘরের দাটি ভরে নিয়েছিল। একটি গর্ত করার জন্য দাটির প্রথমেই দরকার হবে, এই ভাবনা তাকে প্রবল কষ্ট দেয়। দুহাতে চোখ মুছতে থাকে। মারুফ ছোট আকারের গর্তটি করা শেষ করলে রবিউল আসমানীর একটি শাড়িতে পেঁচিয়ে গর্তের ভেতর শুইয়ে দেয়। তারপরে সবাই মিলে দোয়া পড়ে। কিচ্ছুক্ষণ দোয়া পড়ার পরে মারুফ মাটি চাপা দিয়ে গর্তের মুখ বন্ধু করে দুহাত দিয়ে মাটি সমান করে দেয়। তারপর চারপাশের বুনো ফুল ছিঁড়ে দেয় সন্তানের কবরের উপর। একমুঠো ফুল আসমানীর হাতে দিয়ে বলে, তুমি ওর কবরের ওপর ছিটিয়ে দাও। ওর স্মরণে আমরা প্রতি বছরে ফুল দিব এখানে এসে।
রবিউল বলে, মনে হয়না পারবে। লোকজন কি রাস্তার ধারে এভাবে রাখতে দেবে? ওর একটা ছবিও রাখতে পারলাম না। পারলে আমরা ওর ছবিতে ফুল দিতাম।

 বাবাগো এইসব কিছু চিন্তা করতে হবে না। আমি এই দিনে ওর জন্য নামাজ পড়ব দোয়া করব।
আসমানী কাঁদতে কাঁদতে বলে। ওর কান্না ফুরোয় না। সবাই বোঝে প্রথম সন্তানের এই মৃত্যু ওকে জীবনভর কষ্ট দেবে। মারুফ এসে ওর পাশে বসে। আকাশী চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের এই মৃত্যু শরণার্থী জীবনের বড় দিক। এতদিনে নানাভাবে আশেপাশের মানুষের মৃত্যু দেখেছে, কিন্তু শরণার্থী জীবনের যাত্রায় মৃত সন্তান কোলে নিয়ে বসে থাকার স্মৃতি থেকে ও রেহাই পাবেনা। দেশ স্বাধীন হলে এই মুত্যু ওর সামনে স্বাধীনতার পতাকা হয়ে উড়বে। এই ভাবনায় আকাশীর মন প্রফুল্ল হয়। দুঃখ কাটিয়ে শক্তি সঞ্চয়ের জায়গা পায়। মেয়েটাকে নিয়ে কি করবে এই ভাবনা ওকে আবার আতঙ্কিত করে। আসমানীর পাশে বসে থাকা মারুফ ওর হাত ধরে নাড়াচাড়া করে। একসময় বলে, আমাদের জীবন থেকে শরণার্থী জীবন শেষ হলে আমরা আবার সন্তান নেব। ভালো থাকার চেষ্টা করো। মন ভেঙে ফেলোনা।

আসমানী দুহাতে মুখ ঢােেক। মারুফের কথার কোনো উত্তর দেয়না। মারুফ উঠে দাঁড়ায়। দূরে তাকালে দেখতে পায় একটি গরুর গাড়ি আসছে। রবিউল নাতির কবরের কাছে বসেছিল। মারুফ জোরে জোরে বলে, আব্বা দেখেন একটা গরুর গাড়ি আসছে। ওদেরকে অনুরোধ করব, জায়গা থাকলে ওরা যেন আসমানীকে নেয়। আমরা হেঁটে যাব গরুর গাড়ির সঙ্গে। রবিউল সায় দিয়ে বলে, ভালোই চিন্তা করেছ। আমরা দুজনে গরুর গাড়ির সামনে দাঁড়াব। দেখি ওরা থামে কিনা। আসমানীকে নিলে আমাদের মেয়েটার জন্য চিন্তা করতে হবে না। আকাশী ওদেরকে বলে, তোমরা একটু সামনের দিকে যাও। আমি ওকে পরিষ্কার করি।

(চলবে)

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির কাঁধে এখন অনেক দ্বায়িত্ব। এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা বিএনপি কে নিয়ে।  সুতারাং দেশের মানুষের আকাঙ্খা অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের আচরন করতে হবে। তৈরী হতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,  অন্তবর্তী সরকারকে বুঝতে হবে জনগন কি চায়। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সব সংস্কার অন্তবর্তী সরকারের দ্বারা সম্ভব নয়। তারা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তারপর নির্বাচিত সরকার বাকী সংস্কার করবে।

এ সময় দ্রুত নির্বাচনের দেয়ার  দাবী জানান তারেক রহমান। 

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং আনন্দ মুখর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার সময় স্থানীয় টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করতে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গনতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।

এসময় তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন গুম ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশকে দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মোকাবেলা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর এটা করতে হলে অবিলম্বে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার।

শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। এরপরে সম্মেলনের উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সম্মেলনে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, এড.নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিথা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা, জেলা জাসাসের সভাপতি সেলিমুল হাবিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ।

সম্মেলনের একপর্যায়ে জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। 

সম্মেলনে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আজকের সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী