বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ

কালে গাড়ি থেকে নেমে লিফটের সামনে আসার আগেই মাঝবয়সী সিকিউরিটি গার্ড তার হাত কপালে ঠেকিয়ে লম্বা সালাম ঠুকে দেয়। জুনিয়ররা সমীহ করে সামনে থেকে সরে দাঁড়ায়, লিফটে ওঠার জন্য পথ ছেড়ে দেয়। মাথা উঁচু করে, শিরদাড়া সোজা রেখে দৃঢ় পায়ে নিজের অফিস কক্ষে ঢুকতে ঢুকতে মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে এসব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা জানায় শবনম। রাজবাড়ি শহরের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা সাধারণ মেয়ে থেকে বর্তমানে যে অবস্থানে সে উঠে এসেছে এটা সত্যি মাঝে মাঝে নিজের কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয়। ছোটবেলায় তার খেলার সাথীরা বেশিরভাই বিয়ে শাদি করে ইতোমধ্যে নানী দাদী হয়ে বসে আছে। দুয়েক জন বড়জোর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক বা কলেজের অধ্যাপিকা হয়েছে। সেই তুলনায় তার সাফল্য তো আকাশ ছোঁয়া।

বান্ধবীদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে একটু কৌতূহলী হয়ে জানতে চায়, ‘দোস্ত তোমার সাফল্যের ম্যাজিক কী?’

শবনম হাসে, আসলে সে জানে, সফল হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্র নেই। পরিশ্রম, একাগ্রতা, দক্ষতা, যোগ্যতা তো লাগেই পাশাপাশি খানিকটা কৌশলী বা বুদ্ধিমতিও হতে হয় বৈকি। লাক ফেভার করার কথাও অনেকে বলেন। হ্যাঁ, ভাগ্যকে হয়তো একেবারে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আবার সবই যে শুধুই ভাগ্যের জোরে হয়েছে-সেটাও বলতে চায় না শবনম।

কয়েকদিন আগে একটা অনুষ্ঠানে শবনমের আগের অফিসের এক পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ভদ্রমহিলা কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়েছেন। খুব দুঃখ করে ঠোট উল্টে তিনি বলেছিলেন, ‘জানো, আজকাল কিছু মেয়ে এসেছে, অবশ্য আজকালই বা বলি কেন, সবসময়ই এরা ছিল। রুমানা কবিরের কথা মনে আছে না তোমার? যারা নিজেদের রূপ যৌবনকে পুঁজি করে উপরে উঠার ধান্দা করে, উঠেও যায়, ধপ করে গিয়ে বসের কোলে বসে পড়ে। বসের সঙ্গে ইনিয়ে বিনিয়ে সম্পর্ক পাতায়, বিদেশ ট্যুরে যায়, উপরে উঠবার জন্য হেন কাজ নাই যা তারা করতে পারে না। ফলে আমরা যারা এসব করি না, তারা পিছিয়ে পড়ি, কিংবা বসরা ভাবে সব নারীরাই বুঝি একই রকম।’

রুমানা কবিরের কথা মনে আছে শবনমের। খুবই উচ্চভিলাষী ক্যারিয়ারিস্ট একটা মেয়ে ছিল সে, চটপটে, হাসিখুশি, সুন্দরী। তবে কাজের চাইতে পুরুষদের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়াতেই তার ছিল প্রবল আনন্দ, যখন যে পুরুষ কলিগের সঙ্গে কথা বলতো, বিশেষ করে উচ্চপদস্থদের সঙ্গে, তখন এমন ভাব দেখাতো যেন নির্ঘাত তার প্রেমে পড়ে গেছে। চোখে মুখে শরিরী ভাষায় এক আকুল ব্যাকুল প্রেমিকারূপ ফুটিয়ে তুলে দিব্যি নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পারদর্শী ছিল রুমানা।

‘আমার কী দোষ বল। একটু হাসি ঠাট্টা করলেই যদি পুরুষ মানুষ প্রেম ভেবে নেয়, কলস উপুড় করে সব ঢেলে দিতে চায়, তো আমি কী করব? আমি করি ফ্রেন্ডলি আচরণ, তারা ধরে নেয় প্রেমলি আচরণ! হি হি হি!

সেই রুমানা এখন এসব কিছু বাদ দিয়ে স্বামীর সঙ্গে থাকে আমেরিকা। সন্তান লালন পালন আর সংসার যাপন করেই দিন কাটে তার।

শবনমের চরিত্রের মধ্যে কেন যেন কখনোই এমন ছলাকলা দেখানো ফ্রেন্ডলি ভাব আসে না। বরং সে একটু বেশি মাত্রায় গোছানো, স্থির এবং গম্ভীর। ফলে অফিসের কেউ কেউ তাকে রাগী বা অহংকারী ও ভাবতে পছন্দ করে। প্রাক্তন সহকর্মীকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে শবনম বলেছিল, ‘দেখেন যারা এমন করে তারা আবার হঠাৎ করে প্রফেশন থেকে হারিয়েও যায়, শেষ পর্যন্ত কাজের লোকরাই টিকে থাকে।’
‘নারে ভাই, আমি কি টিকতে পারলাম? বাধ্য হলাম চাকরি ছাড়তে, অপমান, অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য আর কত সহ্য করা যায়? সবাই তেল পছন্দ করে। তোষামুদি না করলে কোনো উন্নতি হয় না। আর নারী হলে তো কথাই নেই, তাকে হেসে কথা বলতে হবে, দুয়েকবার ওড়নার ঝাপটা দিতে হবে, নইলে ইচ্ছা করে বুক থেকে শাড়ির আঁচল ফেলে দিতে হবে। ’

ভদ্রমহিলা কিছুতেই তার নেতিবাচক চিন্তার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি হন না বরং কে কী অপকর্ম করে পদ-পদবি বাগিয়ে নিচ্ছে সেই লিস্ট আরও লম্বা করতে থাকেন। ফলে তার সঙ্গে আর বৃথা তর্কে জড়াতে চায়নি শবনম। থাক বাবা যে যার বিশ্বাস নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা সুখে বা অসুখে থাকুক।

শবনম নিজের ঘরে বসে চুপচাপ কফির কাপে চুমুক দেয়। আগামী সপ্তাহে বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মানে যা করার তা এই সপ্তাহের মধ্যেই করতে হবে। মনিরুজ্জামানরা কতখানি কী করতে পেরেছে কে জানে? নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে ওসমান গণির দুর্নীতির প্রমাণ বিশ্বাসযোগ্যভাবে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। এদিকে মিটিংএর তারিখ ঘোষণার পর থেকে ওসমান গণির ভাবসাব চালচলন প্রায় সবই বদলে গেছে। যেন সে কোম্পানীর অঘোষিত সিইও হয়েই গেছে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। অফিসে গুঞ্জন আছে ওসমান গণি বোর্ড মেম্বারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তোয়াজ তোষামোদী করে পদোন্নতির প্রতিশ্রুতি আদায় করে ফেলেছে। ফলে তার চলা ফেরায়, আচার ব্যবহারে স্পষ্টতই কাউকে তোয়াক্কা না করার একটা দুর্বিনীত উদ্ধত ভঙ্গি ফুটে উঠেছে। আমিই প্রধান, আমাকে সবাই মান্যিগণ্যি করে চলো- এমন একটা হাব ভাব ধরে যেন মাটির চার আঙ্গুল উপরে চলা ফেরা করছে ওসমান গণি।
‘তোমরা কী করতেছো মনিরুজ্জামান? হাতে তো বেশি সময় নেই। যা শুরু করেছে, ওসমান গনিকে আর তো সহ্য করা যাচ্ছে না।
শবনম নিজের রাগ, ক্ষোভ আর কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজেই মনিরুজ্জামানকে ফোন করে।
‘চিন্তা করবেন না ম্যাডাম। জায়গা মতো উড়ো চিঠি চলে গেছে।’
‘ওহ উড়ো চিঠি? আর কিছু পারলে না? এগুলির কোনো দাম আছে? কেউ পাত্তা দেয়? নাহ কিচ্ছু হবে না, তোমাদের দিয়ে!’ শবনমের কণ্ঠে রাগ আর হতাশা।

‘না, ম্যাডাম, কাজ হবে। আমাদের এক সাংবাদিক বন্ধুকেও তথ্যগুলো দিয়েছি। ও একটা রিপোর্ট করবে। আর বোর্ড মেম্বারদের কাছেও সব চিঠি পৌঁছে গেছে।’
‘শোনো, এভাবে না। হাতে হাতে কাগজগুলো দিতে হবে, বুঝলা! আমাদের সবচে প্রভাবশালী বোর্ড মেম্বার ওই যে বয়স্ক ভদ্রলোক ফাইজুল ইসলাম চৌধুরী সাহেব আছেন না, উনি প্রতি সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে যান। কাউকে ওইখানে পাঠাও। যাতে উনার নাম করে ডকুমেন্টসসহ খামটা রিসিপশানে রেখে আসে। বুদ্ধি খাটাও, মনিরুজ্জামান, যাতে একশন হয়।’
‘জি ম্যাডাম। ’
‘এসব ডকুমেন্টসের কপি যেন চেয়ারম্যান সাহেবের বাসাতেও যায়। আর শোনো, বোর্ড মিটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার রুমে একদম আসবা না। তোমাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগসাজশ নেই, বুঝতে পেরেছ?’
‘জি¦ ম্যাডাম। আপনাকে ভালবাসি। মন থেকে চাই আপনিই সিইও হোন।’
‘আচ্ছা, দেখা যাক ! যেমন বলছি তেমন করো আগে।’
ফোন রেখে একটু স্থির হয়ে বসে শবনম। তার মাথায় মেঘের মতো অনেক রকম ভাবনা এসে ভিড় করে।
চাকরি জীবনের শুরু থেকেই জেনে এসেছে, সিইও, কোম্পানির সবচে দৃশ্যমান শক্তিশালী আর আকর্ষণীয় পদ। প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবারই ক্যারিয়ার গোল থাকে ওই পদটি অর্জন করার। আবার সিইও পদটি সবচে হট সিটও বটে। কারণ, বেশির ভাগ অফিসেই দেখা গেছে সিইওরা ব্যর্থ হয়ে বিদায় নেন, আর ফিরতে পারেন না। ছিটকে পড়েন শূন্যতায়। এটি একটি নিঃসঙ্গ দুর্বহ পথ যাত্রা। এখানে কেউ আপনার বন্ধু নয় কিন্তু বন্ধুর মুখোশধারী। এখানে একটু এদিক সেদিক হলেই আপনার ভুলগুলি দেখা হবে আতশ কাঁচের নিচে ফেলে, অনেক বড় করে। পরতে হবে স্টেকহোল্ডার আর সুবিধাবাদীদের টানা পোড়নের মধ্যে। অথচ এই ক্যারিসমেটিক, কমান্ডিং পদটি দখল করতে কত যুদ্ধ, কত আকাঙ্ক্ষা, কত তৎপরতা।

নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতার উপর আস্থা আছে শবনমের। কাজ তুলে আনা, প্ল্যানিং করা, সেটাকে বাস্তবায়িত করার দক্ষতাও আছে তার। বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের সঙ্গেও সাধারণভাবে তার সম্পর্ক খারাপ নয়। সহজ, সুন্দর, আন্তরিক। কিন্তু দুইজন বোর্ড মেম্বার আছেন, যারা প্রচন্ড নারীবিদ্বেষী। তারা ভাবতেই পারেন না, যে নারীকে কোনো কোম্পানির দায়িত্ব দেওয়া যায় কিংবা নারীর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ রয়েছে। তবে আশার কথা বোর্ডে তারা মাইনর পজিশনে আছেন, যদিও তারাই আবার সব মিটিং এ মেজর ধরনের লাফালাফি করতে থাকেন। এখন বোর্ডেও হেভিওয়েটদের বিচার বুদ্ধির উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে শবনমকে। কিন্তু সমাজটাই যেখানে পুরুষতান্ত্রিক সেখানে তাদের কাছে খুব বেশি কিছু আশা করাও তো দুরাশা।

এই যে এখন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অধস্তনদের সঙ্গে মিলে শবনমকে ফন্দি আঁটতে হচ্ছে, সত্যি বলতে কী সেটা তার এতদিনের চর্চা, অভ্যাস, স্বভাব ও রুচির সঙ্গে মেলে না। এসব অপ্রিয় কূটকৌশলে জড়াবার ইচ্ছাও তার কোনোদিন ছিল না। কিন্তু আবার বিনা প্রশ্নে, বিনা চ্যালেঞ্জে প্রাপ্য পদ ছেড়ে দেয়াটাও মানতে পারছে না সে। শবনম অভিজ্ঞ, ঠাণ্ডা মাথার মানুষ বলেও সুনাম আছে তার। সে পরিশ্রমী, কর্মীদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভাল। তারপরও যদি চোখের সামনে দুর্নীতিপরায়ণ, অসৎ, তেলবাজ একটা লোক শুধু ‘পুরুষ’ হওয়ার কারণে কোম্পানির সিইও হয়ে তার উপরে মাতব্বরি ফলায় তাহলে সেটা মেনে নেওয়া কঠিন বৈকি।
‘অতএব তুমি যা করছ তা ঠিকই আছে। যুধিষ্ঠিরের মতো নিখাদ সত্যবাদীও যুদ্ধে জেতার জন্য কপটতার আশ্রয় নিয়েছিল। তুমি কোন ছাড়? তুমি ভালো মানুষ, ঠিক আছে, কিন্তু ভালো হতে হতে ভালো থাকার নেশায় পড়লে চলবে না। এখানে যা করছো তা হচ্ছে কায়দা করে সত্যটা প্রকাশ করা। হ্যাঁ, এর সঙ্গে প্রাপ্তি যোগ আছে, কিন্তু তুমি সিইও হলে প্রতিষ্ঠানকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারবে সেই আত্মবিশ্বাস তো তোমার আছে।’ শবনম নিজেকে প্রবোধ দেয়। ভাবে পরিস্থিতিই তাকে বাধ্য করেছে এই পথ অবলম্বন করতে। সুতরাং আত্মগ্লানিতে ভোগার কিছু নেই। নিজেকে প্রমাণ করার যে সুযোগ সামনে হাতছানি দিচ্ছে, কোনোভাবেই সেই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

 

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া