শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ

কালে গাড়ি থেকে নেমে লিফটের সামনে আসার আগেই মাঝবয়সী সিকিউরিটি গার্ড তার হাত কপালে ঠেকিয়ে লম্বা সালাম ঠুকে দেয়। জুনিয়ররা সমীহ করে সামনে থেকে সরে দাঁড়ায়, লিফটে ওঠার জন্য পথ ছেড়ে দেয়। মাথা উঁচু করে, শিরদাড়া সোজা রেখে দৃঢ় পায়ে নিজের অফিস কক্ষে ঢুকতে ঢুকতে মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে এসব কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা জানায় শবনম। রাজবাড়ি শহরের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা সাধারণ মেয়ে থেকে বর্তমানে যে অবস্থানে সে উঠে এসেছে এটা সত্যি মাঝে মাঝে নিজের কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয়। ছোটবেলায় তার খেলার সাথীরা বেশিরভাই বিয়ে শাদি করে ইতোমধ্যে নানী দাদী হয়ে বসে আছে। দুয়েক জন বড়জোর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক বা কলেজের অধ্যাপিকা হয়েছে। সেই তুলনায় তার সাফল্য তো আকাশ ছোঁয়া।

বান্ধবীদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে একটু কৌতূহলী হয়ে জানতে চায়, ‘দোস্ত তোমার সাফল্যের ম্যাজিক কী?’

শবনম হাসে, আসলে সে জানে, সফল হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্র নেই। পরিশ্রম, একাগ্রতা, দক্ষতা, যোগ্যতা তো লাগেই পাশাপাশি খানিকটা কৌশলী বা বুদ্ধিমতিও হতে হয় বৈকি। লাক ফেভার করার কথাও অনেকে বলেন। হ্যাঁ, ভাগ্যকে হয়তো একেবারে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আবার সবই যে শুধুই ভাগ্যের জোরে হয়েছে-সেটাও বলতে চায় না শবনম।

কয়েকদিন আগে একটা অনুষ্ঠানে শবনমের আগের অফিসের এক পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ভদ্রমহিলা কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়েছেন। খুব দুঃখ করে ঠোট উল্টে তিনি বলেছিলেন, ‘জানো, আজকাল কিছু মেয়ে এসেছে, অবশ্য আজকালই বা বলি কেন, সবসময়ই এরা ছিল। রুমানা কবিরের কথা মনে আছে না তোমার? যারা নিজেদের রূপ যৌবনকে পুঁজি করে উপরে উঠার ধান্দা করে, উঠেও যায়, ধপ করে গিয়ে বসের কোলে বসে পড়ে। বসের সঙ্গে ইনিয়ে বিনিয়ে সম্পর্ক পাতায়, বিদেশ ট্যুরে যায়, উপরে উঠবার জন্য হেন কাজ নাই যা তারা করতে পারে না। ফলে আমরা যারা এসব করি না, তারা পিছিয়ে পড়ি, কিংবা বসরা ভাবে সব নারীরাই বুঝি একই রকম।’

রুমানা কবিরের কথা মনে আছে শবনমের। খুবই উচ্চভিলাষী ক্যারিয়ারিস্ট একটা মেয়ে ছিল সে, চটপটে, হাসিখুশি, সুন্দরী। তবে কাজের চাইতে পুরুষদের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়াতেই তার ছিল প্রবল আনন্দ, যখন যে পুরুষ কলিগের সঙ্গে কথা বলতো, বিশেষ করে উচ্চপদস্থদের সঙ্গে, তখন এমন ভাব দেখাতো যেন নির্ঘাত তার প্রেমে পড়ে গেছে। চোখে মুখে শরিরী ভাষায় এক আকুল ব্যাকুল প্রেমিকারূপ ফুটিয়ে তুলে দিব্যি নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পারদর্শী ছিল রুমানা।

‘আমার কী দোষ বল। একটু হাসি ঠাট্টা করলেই যদি পুরুষ মানুষ প্রেম ভেবে নেয়, কলস উপুড় করে সব ঢেলে দিতে চায়, তো আমি কী করব? আমি করি ফ্রেন্ডলি আচরণ, তারা ধরে নেয় প্রেমলি আচরণ! হি হি হি!

সেই রুমানা এখন এসব কিছু বাদ দিয়ে স্বামীর সঙ্গে থাকে আমেরিকা। সন্তান লালন পালন আর সংসার যাপন করেই দিন কাটে তার।

শবনমের চরিত্রের মধ্যে কেন যেন কখনোই এমন ছলাকলা দেখানো ফ্রেন্ডলি ভাব আসে না। বরং সে একটু বেশি মাত্রায় গোছানো, স্থির এবং গম্ভীর। ফলে অফিসের কেউ কেউ তাকে রাগী বা অহংকারী ও ভাবতে পছন্দ করে। প্রাক্তন সহকর্মীকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে শবনম বলেছিল, ‘দেখেন যারা এমন করে তারা আবার হঠাৎ করে প্রফেশন থেকে হারিয়েও যায়, শেষ পর্যন্ত কাজের লোকরাই টিকে থাকে।’
‘নারে ভাই, আমি কি টিকতে পারলাম? বাধ্য হলাম চাকরি ছাড়তে, অপমান, অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য আর কত সহ্য করা যায়? সবাই তেল পছন্দ করে। তোষামুদি না করলে কোনো উন্নতি হয় না। আর নারী হলে তো কথাই নেই, তাকে হেসে কথা বলতে হবে, দুয়েকবার ওড়নার ঝাপটা দিতে হবে, নইলে ইচ্ছা করে বুক থেকে শাড়ির আঁচল ফেলে দিতে হবে। ’

ভদ্রমহিলা কিছুতেই তার নেতিবাচক চিন্তার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি হন না বরং কে কী অপকর্ম করে পদ-পদবি বাগিয়ে নিচ্ছে সেই লিস্ট আরও লম্বা করতে থাকেন। ফলে তার সঙ্গে আর বৃথা তর্কে জড়াতে চায়নি শবনম। থাক বাবা যে যার বিশ্বাস নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা সুখে বা অসুখে থাকুক।

শবনম নিজের ঘরে বসে চুপচাপ কফির কাপে চুমুক দেয়। আগামী সপ্তাহে বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের মিটিংয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মানে যা করার তা এই সপ্তাহের মধ্যেই করতে হবে। মনিরুজ্জামানরা কতখানি কী করতে পেরেছে কে জানে? নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে ওসমান গণির দুর্নীতির প্রমাণ বিশ্বাসযোগ্যভাবে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। এদিকে মিটিংএর তারিখ ঘোষণার পর থেকে ওসমান গণির ভাবসাব চালচলন প্রায় সবই বদলে গেছে। যেন সে কোম্পানীর অঘোষিত সিইও হয়েই গেছে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। অফিসে গুঞ্জন আছে ওসমান গণি বোর্ড মেম্বারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তোয়াজ তোষামোদী করে পদোন্নতির প্রতিশ্রুতি আদায় করে ফেলেছে। ফলে তার চলা ফেরায়, আচার ব্যবহারে স্পষ্টতই কাউকে তোয়াক্কা না করার একটা দুর্বিনীত উদ্ধত ভঙ্গি ফুটে উঠেছে। আমিই প্রধান, আমাকে সবাই মান্যিগণ্যি করে চলো- এমন একটা হাব ভাব ধরে যেন মাটির চার আঙ্গুল উপরে চলা ফেরা করছে ওসমান গণি।
‘তোমরা কী করতেছো মনিরুজ্জামান? হাতে তো বেশি সময় নেই। যা শুরু করেছে, ওসমান গনিকে আর তো সহ্য করা যাচ্ছে না।
শবনম নিজের রাগ, ক্ষোভ আর কৌতূহল চেপে রাখতে না পেরে শেষ পর্যন্ত নিজেই মনিরুজ্জামানকে ফোন করে।
‘চিন্তা করবেন না ম্যাডাম। জায়গা মতো উড়ো চিঠি চলে গেছে।’
‘ওহ উড়ো চিঠি? আর কিছু পারলে না? এগুলির কোনো দাম আছে? কেউ পাত্তা দেয়? নাহ কিচ্ছু হবে না, তোমাদের দিয়ে!’ শবনমের কণ্ঠে রাগ আর হতাশা।

‘না, ম্যাডাম, কাজ হবে। আমাদের এক সাংবাদিক বন্ধুকেও তথ্যগুলো দিয়েছি। ও একটা রিপোর্ট করবে। আর বোর্ড মেম্বারদের কাছেও সব চিঠি পৌঁছে গেছে।’
‘শোনো, এভাবে না। হাতে হাতে কাগজগুলো দিতে হবে, বুঝলা! আমাদের সবচে প্রভাবশালী বোর্ড মেম্বার ওই যে বয়স্ক ভদ্রলোক ফাইজুল ইসলাম চৌধুরী সাহেব আছেন না, উনি প্রতি সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে যান। কাউকে ওইখানে পাঠাও। যাতে উনার নাম করে ডকুমেন্টসসহ খামটা রিসিপশানে রেখে আসে। বুদ্ধি খাটাও, মনিরুজ্জামান, যাতে একশন হয়।’
‘জি ম্যাডাম। ’
‘এসব ডকুমেন্টসের কপি যেন চেয়ারম্যান সাহেবের বাসাতেও যায়। আর শোনো, বোর্ড মিটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার রুমে একদম আসবা না। তোমাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগসাজশ নেই, বুঝতে পেরেছ?’
‘জি¦ ম্যাডাম। আপনাকে ভালবাসি। মন থেকে চাই আপনিই সিইও হোন।’
‘আচ্ছা, দেখা যাক ! যেমন বলছি তেমন করো আগে।’
ফোন রেখে একটু স্থির হয়ে বসে শবনম। তার মাথায় মেঘের মতো অনেক রকম ভাবনা এসে ভিড় করে।
চাকরি জীবনের শুরু থেকেই জেনে এসেছে, সিইও, কোম্পানির সবচে দৃশ্যমান শক্তিশালী আর আকর্ষণীয় পদ। প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবারই ক্যারিয়ার গোল থাকে ওই পদটি অর্জন করার। আবার সিইও পদটি সবচে হট সিটও বটে। কারণ, বেশির ভাগ অফিসেই দেখা গেছে সিইওরা ব্যর্থ হয়ে বিদায় নেন, আর ফিরতে পারেন না। ছিটকে পড়েন শূন্যতায়। এটি একটি নিঃসঙ্গ দুর্বহ পথ যাত্রা। এখানে কেউ আপনার বন্ধু নয় কিন্তু বন্ধুর মুখোশধারী। এখানে একটু এদিক সেদিক হলেই আপনার ভুলগুলি দেখা হবে আতশ কাঁচের নিচে ফেলে, অনেক বড় করে। পরতে হবে স্টেকহোল্ডার আর সুবিধাবাদীদের টানা পোড়নের মধ্যে। অথচ এই ক্যারিসমেটিক, কমান্ডিং পদটি দখল করতে কত যুদ্ধ, কত আকাঙ্ক্ষা, কত তৎপরতা।

নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতার উপর আস্থা আছে শবনমের। কাজ তুলে আনা, প্ল্যানিং করা, সেটাকে বাস্তবায়িত করার দক্ষতাও আছে তার। বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের সঙ্গেও সাধারণভাবে তার সম্পর্ক খারাপ নয়। সহজ, সুন্দর, আন্তরিক। কিন্তু দুইজন বোর্ড মেম্বার আছেন, যারা প্রচন্ড নারীবিদ্বেষী। তারা ভাবতেই পারেন না, যে নারীকে কোনো কোম্পানির দায়িত্ব দেওয়া যায় কিংবা নারীর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ রয়েছে। তবে আশার কথা বোর্ডে তারা মাইনর পজিশনে আছেন, যদিও তারাই আবার সব মিটিং এ মেজর ধরনের লাফালাফি করতে থাকেন। এখন বোর্ডেও হেভিওয়েটদের বিচার বুদ্ধির উপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে শবনমকে। কিন্তু সমাজটাই যেখানে পুরুষতান্ত্রিক সেখানে তাদের কাছে খুব বেশি কিছু আশা করাও তো দুরাশা।

এই যে এখন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অধস্তনদের সঙ্গে মিলে শবনমকে ফন্দি আঁটতে হচ্ছে, সত্যি বলতে কী সেটা তার এতদিনের চর্চা, অভ্যাস, স্বভাব ও রুচির সঙ্গে মেলে না। এসব অপ্রিয় কূটকৌশলে জড়াবার ইচ্ছাও তার কোনোদিন ছিল না। কিন্তু আবার বিনা প্রশ্নে, বিনা চ্যালেঞ্জে প্রাপ্য পদ ছেড়ে দেয়াটাও মানতে পারছে না সে। শবনম অভিজ্ঞ, ঠাণ্ডা মাথার মানুষ বলেও সুনাম আছে তার। সে পরিশ্রমী, কর্মীদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভাল। তারপরও যদি চোখের সামনে দুর্নীতিপরায়ণ, অসৎ, তেলবাজ একটা লোক শুধু ‘পুরুষ’ হওয়ার কারণে কোম্পানির সিইও হয়ে তার উপরে মাতব্বরি ফলায় তাহলে সেটা মেনে নেওয়া কঠিন বৈকি।
‘অতএব তুমি যা করছ তা ঠিকই আছে। যুধিষ্ঠিরের মতো নিখাদ সত্যবাদীও যুদ্ধে জেতার জন্য কপটতার আশ্রয় নিয়েছিল। তুমি কোন ছাড়? তুমি ভালো মানুষ, ঠিক আছে, কিন্তু ভালো হতে হতে ভালো থাকার নেশায় পড়লে চলবে না। এখানে যা করছো তা হচ্ছে কায়দা করে সত্যটা প্রকাশ করা। হ্যাঁ, এর সঙ্গে প্রাপ্তি যোগ আছে, কিন্তু তুমি সিইও হলে প্রতিষ্ঠানকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারবে সেই আত্মবিশ্বাস তো তোমার আছে।’ শবনম নিজেকে প্রবোধ দেয়। ভাবে পরিস্থিতিই তাকে বাধ্য করেছে এই পথ অবলম্বন করতে। সুতরাং আত্মগ্লানিতে ভোগার কিছু নেই। নিজেকে প্রমাণ করার যে সুযোগ সামনে হাতছানি দিচ্ছে, কোনোভাবেই সেই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

 

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ