মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ

অঞ্জনার বিউটি পার্লারে চার পাঁচ ঘণ্টা ধরে স্পা, অয়েল ম্যাসেজ, হেয়ার কেয়ার, পেডিকিউর, ম্যানিকিউর করিয়ে একদম ফ্রেশ ঝরঝরে প্রশান্তির একটা অনুভতি হলো শবনমের। মাঝে মাঝে পার্লারে এসে কাজ কর্ম ভুলে নিজেকে ছেড়ে দেওয়ার এই অভ্যাসটা রপ্ত করিয়েছিল রওশন আপা। শবনমের চাকরি জীবনের প্রথম দিককার সিনিয়র সহকর্মী। দেখতে যেমন সুন্দরি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন তেমনি মেধাবি, সবসময় আপাদমস্তক পরিপাটি ফিটফাট, সতেজ, সজীব একজন মানুষ।

শবনমকে বলতেন, ‘শেনো, নিজের যত্ন, নিজের আরামের ব্যবস্থা নিজেই করবা। নয়তো কাজ করার যে শক্তি উদ্যম সবই ফুরিয়ে যাবে। নিজে ভালো না থাকলে অন্যদের ভালো করবা কীভাবে? দুর্বল হলে কেউ কিন্তু তোমাকে দাম দিবে না।’

সেই রওশন আপা মারা গেলেন স্তন ক্যান্সারে ভুগে। অপারেশন, রেডিয়েশন, কেমো কিছুই তাকে বাঁচাতে পারল না। আপা অবশ্য খুব সাহসের সঙ্গে মৃত্যুটা মোকাবিলা করেছিলেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃদু গলায় স্পষ্ট বলেছিলেন,
‘দেখো যা অনিবার্য, তা নিয়ে কান্নাকাটির কি আছে? দুদিন আগে বা পরে মরতে তো হতোই! না হয় আমি একটু আগের স্টেশনেই নেমে গেলাম!’

রওশন আপা বেঁচে থাকলে, কর্মক্ষম থাকলে তিনি হয়ত কোম্পানির সিইও পদ পর্যন্ত পেতে পারতেন। কে জানে? শবনম-ই কি পারবে শেষ পর্যন্ত এই মইয়ের চূড়ায় উঠতে, এতো বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে ...!

শবনমের ভেতর থেকে কেউ যেন প্রশ্ন করে, চূড়ায় কি উঠতেই হবে? কীভাবে উঠবে? কি এমন হবে শীর্ষে উঠলে? না উঠলেই বা জীবনের কি এমন ক্ষতি বৃদ্ধি হবে?

তার ভেতর থেকেই আবার উত্তর আসে, আমি না হলে অন্য কেউ ওই পদে যাবে, জায়গা তো খালি থাকবে না, তাহলে আমিই বা নই কেনো? যদি আমি যোগ্যতা সম্পন্ন হই, যদি আমার দক্ষতা থাকে, ভালো কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, যদি গ্রহণযোগ্যতা থাকে, তবে ক্যারিয়ারের শিখরে কেনইবা উঠব না আমি? কেন পিছিয়ে থাকব? কেন গুটিয়ে রাখব নিজেকে? নিজের যোগ্যতা কেনো প্রমাণ করব না?

কিন্তু ব্যাপারটা কি এতই সোজা? গাছের ফলের মতো টুপ করে তোমার সামনে এসে পড়বে পদোন্নতি? বহুকালের ট্যাবু ভেঙে একজন নারীকে কি এত সহজে ওরকম উচ্চ পদে বসতে দেবে ওরা? তা নয় বলেই তো দুর্ভাগ্যজনক হলেও মনিরুজ্জামানদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ওরা কতটা সুচারুভাবে, কতটা দক্ষতার সঙ্গে প্রমাণসহ ওসমান গণির দুর্নীতির তথ্যটা উপযুক্ত জায়গায় অর্থাৎ ঊর্ধ্বতনদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করতে পারে! এটার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। আচ্ছা, আজকে কি ওরা বোর্ড মেম্বারদের কারো সঙ্গে দেখা করতে পেরেছে? শবনম ইচ্ছে করলে ফোন করে জেনে নিতে পারে, কিন্তু করল না।

পার্লার থেকে বেরুতে বেরুতে প্রায় সন্ধ্যা হলো। আকাশে বেলা শেষের রুগ্ন আলো। রাস্তার পার ঘেষে গাছ নেই, পাখি নেই, শুধু বিষণ্ন বাস, রিকশা, প্রাইভেটকার, ফুটপাথে ক্লান্ত অবসন্ন মানুষ। যেন ধোয়া ঠেলে, হর্ণ টিপে, মলিন বাতি জ্বালিয়ে কোনো অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ছুটে যাচ্ছে তারা। একটু খিদে খিদে লাগছিল শবনমের। এরকম সন্ধ্যাগুলোতে নাস্তা হিসেবে পেঁয়াজ, কাচা মরিচ, সর্ষের তেল আর মচমচে চানাচুর মিশিয়ে মুড়ি মাখা হতো ওদের মফস্বলের বাসায়। কি অপূর্ব স্বাদ আর গন্ধ ছিল সেই মুড়ি মাখার! আহা, বড় হতে হতে শৈশবের সেইসব স্বাদ গন্ধ কোন অজানায় হারিয়ে যায়, আর কোনোদিনই খুঁজে পাওয়া যায় না!
শবনম ভাবল, এই সন্ধ্যা নামা ব্যস্ত শহরে নিজেকে একটা ট্রিট দিলে কেমন হয়? ধানমন্ডির এদিকটায় অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাশাপাশি। দুই পা সামনে এগিয়ে ‘সিক্রেট আই’ নামের একটা রেস্টুরেন্টের কুয়াশাচ্ছন্ন কাঁচের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকেই একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল শবনম। লাউড স্পিকারে ড্রাম গিটারের চড়া বাদ্যসহযোগে ইংরেজি গান বাজছে, হাল্কা আলোয় অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা নিচু টেবিল ঘিরে বসে উচ্চস্বরে উদ্দাম আড্ডা দিচ্ছে। এই পরিবেশে তার বয়সী একজন একলা নারী হয়ত খানিকটা বেমানানই। একটু ইতস্তত করে বেরিয়ে আসবে কিনা একবার ভাবল শবনম। নীল ইউনিফর্ম পরা একটা কমবয়সী সুদর্শন ছেলে তাকে উদ্ধার করতে হাসি মুখে এগিয়ে এল তখন, কোণার দিকের একটা চেয়ার টেনে শবনমকে বসার ব্যবস্থা করে দিল সে। মেন্যু দেখে একটা চিকেন স্যান্ডউইচের সঙ্গে ল্যাটে কফি অর্ডার করল শবনম।

নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে বসলো স্থির হয়ে। কেউ তাকাচ্ছে না তার দিকে, সবাই আপনাতে বিভোর, নিজেদের হৈ হল্লা আর কোলাহল ঘিরে নিজেরাই মগ্ন। ফলে এই মধ্যবয়সিনী নারী যে বেখাপ্পা আসবাবের মতো সমাবেশের কোণায় একাকী ঘাপটি মেরে বসে আছে তা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা দেখা গেল না।

ফলে চারপাশের হৈচৈ উপেক্ষা করে আবার নিজের চিন্তায় ডুব দিল শবনম। মানুষের কত চাহিদা, তাই না? ভাবলো সে, এক জীবনে কত কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। প্রেম, বিয়ে, সন্তান, চাকরি, বাড়ি, গাড়ি। দৌড় আর দৌড়। এই জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কত কত মাইলফলক পেরিয়ে এসে কত কত সফলতার ফিতা ছুঁয়ে এখন আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার হাতছানি। পর্বতের রৌদ্র আলোকিত সোনালী চড়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তা স্পর্শ করতে হলে হাঁটতে হবে আরও অনেকদূর। থামা যাবে না।

মনিরুজ্জামানরা নিজে থেকে, বলতে গেলে স্বপ্রণোদিত হয়ে ওসমান গণির কাজ কর্মের ফাঁক-ফোঁকর খুঁজে বের করে নিয়ে তার কাছে এসেছে। হ্যাঁ, সে ওদের সেই কাজ করতে বলেনি, কোনো রকম উসকানিও দেয়নি। আবার বাধাও দেয়নি (অবশ্য বাধা দেবারই বা কি আছে!) উৎসাহিতও করেনি। বরং এই সময়ে ভাগ্যক্রমে এটা তার জন্য যুদ্ধে জেতার একটা মোক্ষম সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। না চাইতেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার একটা অস্ত্র, একটা কৌশল হাতে পেয়ে গেছে সে। যুদ্ধক্ষেত্রে তো সবই বৈধ। অল ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার। নিয়ম মানলে যুদ্ধে জেতা যাবে না। তবে এটাও ঠিক যে প্রতিপক্ষ চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। বিনা যুদ্ধে অন্য পক্ষও কি ছাড়বে সূচগ্র্য মেদেনী? ওরাও তো প্রাণপণ চেষ্টা করবে শবনমের ত্রুটি খুঁজে বের করতে।
পেছনের দিকে তাকিয়ে নিজের ভুল-ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা করে শবনম। নাহ অফিশিয়াল কাগজপত্রে সইসাবুদ করার ক্ষেত্রে সে বরাবরই খুব সাবধানি, ভাল করে না পড়ে, না দেখে কোথাও সই করে না সে।

ওয়েটার টেবিলে গরম কফি আর স্যন্ডউইচ দিয়ে গেছে। শবনম স্যান্ডউইচ শেষ করে ধীরে ধীরে কফির কাপে চুমুক দেয়। একটু দূরে আবছা আলো আঁধারে দুই বন্ধুর সাথে বসে থাকা সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট পড়া কোঁকড়া চুলের মেয়েটাকে দেখে হঠাৎ করে নাফিসা তানজিনার কথা মনে পড়ে তার। চেহারায় বেশ মিল আছে দুজনের। কে জানে আত্মীয় কি না। আহা, অফিস প্লেসে যৌন হয়রাণির ভয়াবহ ক্ষত আর বেদনা বুকে নিয়ে কেমন আছে নাফিসা? সর্বসমক্ষে সত্যটা বলতে পেরে মনের মধ্যে চেপে রাখা যন্ত্রণার খানিকটা উপশম কি হয়েছে তার? কে জানে?

বিল মিটিয়ে উঠে দাঁড়াতেই শবনমের সামনে দিয়ে মাথা ভর্তি রঙীন চুল দুলিয়ে একটা মেয়ে দ্রুত হেঁটে চলে যায়। ওকে দেখে শ্রাবণের কথা মনে পড়ে শবনমের। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বাসায় ফিরেছে মেয়েটা। হয়ত তারেকও ফিরেছে। অভ্যাসবশত ওরা ভাবছে শবনম অফিসেই আছে, মিটিং সিটিং নিয়ে ব্যস্ত। তাই কেউ ফোন করেনি। একটা উবার ডেকে বাড়ির পথ ধরে শবনম। তার মনে হয়, আজকের দিনটা কাটলো একটা সুতা ছেঁড়া ঘুড়ির মতো। কিছুটা উদ্দেশ্যবিহীন। সকালের আকস্মিক বৃষ্টি, সিদ্ধান্ত নিয়ে অফিস কামাই করা, খালি বাসায় কয়েক ঘণ্টা একলা সময় পার করা তারপর সৌন্দর্য চর্চার উসিলায় প্রায় একটা বেলা খরচ করে ফেলা এবং এলোমেলো ভাবনায় উড়ে চলা। নট ব্যাড। নিত্য কর্মের স্বাভাবিক চাঞ্চল্য থেকে এই সাময়িক মুক্তি, এই অচঞ্চল ঝিম ধরা একটা দিন, নিজের সঙ্গে নিজেই সকাল সন্ধ্যা মগজের ভেতর উল্টা পাল্টা কথোপকথন করে কাটিয়ে দেওয়া।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad
Header Ad

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সরবরাহ আইন (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আইন) প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে এই খাতে লুটপাটের মডেল তৈরি হয়। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ঘুষ, কমিশন, এবং অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতার কারণে জনগণের ওপর ৭২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫,৭০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। এ সময়ে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকল্প দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন পাওয়ায় উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ ছিল।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ৩০ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হয়েছে।

মহাপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০,০০০ মেগাওয়াট ধরা হলেও, পরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, “উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর ফলে জনগণের কাঁধে ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝা চেপেছে।”

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং মিটার কেনাকাটায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তবে এসব খাতে দুর্নীতির বিস্তারিত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের দুর্নীতি অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ফলে জনগণকে অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

প্রস্তাবিত সমাধান:

- বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি কমাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন।
- দায়মুক্তি আইন বাতিল করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শ্বেতপত্রে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ।
- অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা বন্ধ এবং বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণ, বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মো. নাজির উদ্দিন কার্তিক (২৫) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) বিজিবি সদস্যরা গোমস্তাপুর উপজেলার কেতাব বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১৬ বিজিবির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি বিজিবির নিয়মিত টহল দল মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ২০৪/এমপি হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কেতাব বাজার এলাকায় টহল পরিচালনা করছিলেন। টহল দেওয়ার সময় একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে বিজিবির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন তিনি ভারতীয় নাগরিক। ওই ব্যক্তির ভাষ্যমতে তাঁর নাম, নাজির উদ্দিন কার্তিক। তিনি ভারতের বিহার রাজ্যের কাঠিয়ার জেলার আবাদপুর থানার গাবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তল্লাশী করে ওই ব্যক্তির কাছ ভারতীয় ১০ রুপি এবং বাংলাদেশী ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। তাঁর কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং বিজেপি সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে এই হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে আগরতলায় হোটেল ভাড়া না পেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, হোটেল ভাড়া নেওয়ার পর মুসলিম এবং বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে এক ঘণ্টার মধ্যেই হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান এবং পরদিন দেশে ফিরে আসেন।

আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হচ্ছে। আখাউড়া স্থলবন্দরে ফিরে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হুমকি ও হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির একটি স্টল দিয়েছিলেন। সেখানে একদল যুবক "জয় শ্রী রাম" স্লোগান দিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে এবং সমস্ত টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশিরা এমন হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর সমাধানের জন্য দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়
শেখ হাসিনার পতন কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ভারত : রিজভী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব
সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, এসএসসি পাসেই আবেদনের সুযোগ
এস আলম পরিবারের ৩৫০ ব্যাংক হিসাবের সন্ধান
২৮ বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়িকা রোমানা
বাংলাদেশিদের সেবা দেবে না ত্রিপুরার কোনো হোটেল–রেস্তোরাঁ
ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন
‘বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭