রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

কর্নাক থেকে লুক্সর ফেরার পথে মোস্তফা একটা গলি পথে এসে গাড়ি থামিয়ে বললো, ‘ইউ মে হ্যাভ আ লুক!’ আমি নামার আগেই তাকিয়ে দেখলাম নিয়ন সাইনে জ্বলছে ‘নিউ ডেলটা প্যাপিরাস’। বুঝলাম প্যাপিরাসে আঁকা চিত্রকর্মের বিপনী বিতান, সঙ্গে প্যাপিরাস তৈরির কারখানাও থাকতে পারে। নিউ ডেলটা প্যাপিরাসের মতো আলো ঝলমলে দোকানে কিছু কেনা আমাদের সাধ্যে কুলাবে না জেনেও গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। আন্তরিক সম্ভাষণের সঙ্গে শীতল পানীয়ের আপ্যায়ন অনেকটা উপেক্ষা করেই পৌঁছলাম একটা কাউন্টারে। সেখানে সুদর্শন তরুণ সেলসম্যান তাঁর মোটামুটি বোধগম্য ইংরেজিতে প্যাপিরাসের ইতিহাস বর্ণনা শুরু করেছিলেন। বিদেশে গাইডের তত্ত্বাবধানে দল ধরে কোথাও ঘুরতে গেলে এই এক বিড়ম্বনা। সকলেই দাসযুগ থেকে সবকিছুর বিবরণ দিতে শুরু করে। ইংরেজি পেপার শব্দটি যে আসলে প্যাপিরাস থেকেই এসেছে তা আরও একবার তাঁর কাছে শুনলাম। সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের পরে তাঁকে থামিয়ে দিলে তিনি প্যাপিরাস গাছের একটি কাণ্ড হাতে তুলে নিয়ে দেখালেন কাগজ তৈরির প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতি।



ঢাকার বলধা গার্ডেনে বছর কুড়ি আগে দু তিনটি প্যাপিরাস গাছ দেখেছিলাম। আমাদের নগরায়নের ঠেলায় সেগুলোর অস্তিত্ব এখনো আছে কিনা আল্লা মালুম। সেই গাছ দেখে আমার ধারণা হয়েছিল কাগজ তৈরি হয় প্যাপিরাস গাছের মণ্ড থেকে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল প্যাপিরাসের সবুজ শরীর থেকে ছুরি দিয়ে পাতলা করে ছাল ছাড়িয়ে পরপর লম্বা করে সাজিয়ে তার উপরে আরেক দফা আড়াআড়ি রেখে চাপ প্রয়োগ করে পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে তৈরি হয় প্যাপিরাসের ছোট ছোট পাতা। অতীতকালে পাতাগুলো দীর্ঘ সময় ভারি পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখা হলেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুটি কাঠের পাটাতনের মাঝে ফেলে যান্ত্রিক চাপে চ্যাপ্টা হয়ে বেরিয়ে আসে এক একটি প্যাপিরাসের কাগজ। আজকাল নাকি কলা গাছের ছাল বাকল তুলেও তৈরি হচ্ছে নকল প্যাপিরাস!

আসল নকলের তফাৎ বোঝাটা আমাদের সাধ্যে কুলাবে না, কিন্তু ‘নিউ ডেলটা প্যাপিরাস’ থেকে তাদের কথিত আসল প্যাপিরাসের চিত্রকর্ম যথোপোযুক্ত মূল্য পরিশোধ করে কেনা যে আমাদের মতো পর্যটকের পক্ষে সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরে দ্রুত বেরিয়ে পড়া ভালো মনে হলো। বেরোতে চাইলেও সহজে বের হওয়া যায় না। অন্ধকার কক্ষে প্যাপিরাসের উপর জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকা শিল্পকর্ম, আধুনিক ক্যালিগ্রাফি ও হায়রোগ্লিফিক লিপি এবং ফারাও যুগের সম্রাট থেকে ক্রীতদাস পর্যন্ত নানা কথা ও কাহিনির রঙিন দৃশ্যপট এবং তার সঙ্গে বিক্রেতা পক্ষের আহবান কেবলই প্রলুদ্ধ করতে থাকে। তারপরেও শ পাঁচেক ঈজিপশিয়ান পাউন্ডের বিনিময়ে সবচেয়ে ছোট আকারের চিত্রিত প্যাপিরাস সংগ্রহ করা দুঃসাধ্য বলেই শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে পড়লাম। শেষতক দেখা গেল বাহরাইন মরোক্কো তো বটেই, দুবাইওয়ালারাও দিরহাম খরচ করে কাগজ কিনতে রাজি নয়। মোস্তফার আধাঘণ্টার ব্যর্থ মিশন শেষে গাড়ি আবার চলতে শুরু করলো লুক্সরের পথে।

রাতের লুক্সরের পথে পথে জ্বলে উঠেছে সন্ধ্যাবাতি। নীল নদের পূর্ব তীর ধরে এক পাশে নদীকে রেখে আমরা শহরের দিকে এগোতে থাকলে ক্রমেই আলোর উজ্জ্বলতা এবং রঙের বৈচিত্র্য বাড়তে থাকে। আলো ঝলমলে বিপনী বিতানগুলো তাদের পশরা সাজিয়ে বাইরে নিয়ন সাইন জ্বালিয়ে আকর্ষণ সৃষ্টি চেষ্টা করলেও ক্রেতার তেমন ভিড় নেই। নীলনদের পশের ফুটপাথে মাথা ভর্তি সবুজ পাতার সারি সারি গাছ এবং ছোট ছোট ছাউনি দেখে নীলের তীর ধরে হাঁটতে ইচ্ছে করে। কিন্তু নদীর পাড়ে পায়ে চলার পথেও তেমন চলাচল চোখে পড়ে না। মিশরীয় তরুণ তরুণীরা কি দুদণ্ড অবসর কাটাতেও এ মুখো হয় না! শহরের পথে ধীর গতির অলস টাঙ্গা এবং মধ্য গতির গাড়ির পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে ফারাও যুগের সারি সারি স্তম্ভ, প্রাচীন ভবনের ধ্বংসাবশেষ এবং পাথরের স্তূপ দেখে লামিয়ার কথার সত্যতা আরও একবার বুঝতে পারি। লুক্সর শহরটা আসলেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত মিউজিয়াম।

আধুনিক লুক্সর শহরের প্রাণকেন্দ্রের লুক্সর মন্দিরটি মিশরীয় ভাষায় ‘ইপেত রিসাইত’ নামে পরিচিত, যার অর্থ দাঁড়ায় দক্ষিণের পবিত্রভূমি! যুগে যুগে পবিত্র ভূমি, পবিত্র পীঠ বা পবিত্র উপাসনালয়ের স্থান বদলেছে, সংজ্ঞাও বদলে গেছে। কিন্তু লুক্সর এখনো পবিত্র তো বটেই! তা না হলে শতকরা নব্বই ভাগ সুন্নি মুসলমানের দেশে ফেরাউনের পবিত্র মন্দির এখনো এতো যত্নে এতোটা সতর্কতার সঙ্গে কেউ সংরক্ষণ করে! ফারাও যুগে একটি বার্ষিক উৎসব ছিল এই পবিত্র মন্দিরের প্রধানতম আকর্ষণ। উৎসবের সময় আমুন, মুত ও খনসুর মূর্তি এবং স্ফিংসের সারি কর্নাক থেকে লুক্সরে এনে জড়ো করা হতো। সাধারণত নীল নদের প্লাবনের সময় মূর্তি স্থানান্তরের কাজ করা হলেও সেই অযান্ত্রিক যুগে পাথরের বিশাল মূর্তিগুলো কিভাবে বয়ে আনা হতো, ভাবতেও অবাক লাগে! সারা মিশরের সবগুলো সংরক্ষিত পুরাকীর্তির মধ্যে লুক্সর মন্দিরের সংরক্ষণ কাজ সম্ভবত সবচেয়ে ভালোভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। তিন হাজার বছর আগের বিস্তৃত অবকাঠামো, সারি সারি দীর্ঘ স্তম্ভ, সুবিশাল মূর্তি এবং চমৎকার খোদাই ও রিলিফের কাজ এখনো পর্যটকদের বিস্ময় জাগায়। লুক্সরের মন্দির না দেখে দেশে ফিরে গেলে আসলে মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

আমাদের বাহন এসে লুক্সর মন্দিরের প্রবেশ পথে এসে থামলে আমরা নেমে যাই। অন্য সকল প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় যেমন ভেতরে প্রবেশের আগে একটা দীর্ঘ চত্বর দেখেছি তেমন কোনো উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ এখানে নেই। হতে পারে শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে বলে বাড়তি জায়গা বের করা সম্ভব হয়নি। কাজেই মোস্তফা টিকেট নিয়ে আসার পরে পায়ে হাঁটার কোনো প্রয়োজন হলো না। আমরা সরাসরি মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ফ্লাড লাইটের উজ্জ্বল আলোয় চারিকি ঝকঝক করছে। তবে সংস্কার কাজের জন্য ভেতরের পায়ে চলার পথের অনেকটাই প্লাস্টিকের চাদরে মোড়া আবার কোথাও পথ বন্ধ করে ডাইনে বাঁয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা দল বেধে ঢুকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যে যার মতো এগোতে থাকি। মূল মন্দিরের বিশাল তোরণ পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশের পরে আমার কানে আসে কোরআন থেকে তেলাওয়াতের সুর। দুপাশে দ্বিতীয় রামেসেসের প্রকাণ্ড প্রস্তর মূর্তি রেখে আরও সামনে এগোলে সুরেলা কণ্ঠে কোরআনের পরিচিত সুরার আবৃত্তি স্পষ্ট হতে থাকে।

কোরআন তেলাওয়াতের উৎস খুঁজতে এদিক সেদিক তাকিয়ে চোখে পড়ে এক জায়গায় মন্দিরের একটি অংশে ঢুকে পড়েছে মসজিদ। উঁচু মিনার আলোকমালায় সাজানো আর সেখান থেকেই ভেসে আসছে তেলাওয়াতের সুর। নুবিয়া থেকে বয়ে আনা বেলে পাথরে নির্মিত লুক্সর মন্দিরে চারিদিকে ইটের তৈরি দেয়াল ঈশ্বর এবং মানুষের জগৎকে পৃথক করে রেখেছিল। সম্ভবত মিশরে ইসলামের আবির্ভাবের পরে গড়ে উঠেছিল মসজিদ আর তখনই সেই আভিজাত্যের দেয়াল ভেঙে মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পড়েছে মসজিদ। মানুষের প্রার্থনার জন্যে নির্মিত হলেও এটিও তো আসলে ঈশ্বরেরই ঘর। ফারাও দেবতাদের প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়ার পরে ইসলামের পতাকাবাহীরা যে পুরো মন্দিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়নি সে জন্য পুরো মানব সভ্যতা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

তবে মন্দিরটি প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার সকল ভাব গাম্ভীর্য এবং বিশালতা নিয়ে নির্মিত হলেও লুক্সরের মন্দিরটি কোনো বিশেষ সম্রাট বা দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত নয়, বরং ফারাও রাজত্বের পুনরুত্থানকে মহিমান্বিত করতেই এটি নির্মিত হয়েছিল। অনেক অনেক সম্রাটের অভিষেক হয়েছিল এই মন্দিরে, হয়তো কখনো তা বাস্তবে আবার কখনো কেবলই ধারণায় কল্পিত আনুষ্ঠানিকতায়। অনেকেই দাবী করেন আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটকেও মুকুট পরানো হয়েছিল এখানে লুক্সরের মন্দিরে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি কখনোই প্রাচীন নগরী মেমফিস অর্থাৎ বর্তমানের কায়রো শহরের দক্ষিণে আসেননি।

দ্বিতীয় রামেসেসের অতিকায় মূর্তির পায়ের কাছে দাঁড় করিয়ে যখন আমার সফর সঙ্গিনীর ছবি তোলার চেষ্টা করছি তখন একজন জোব্বাধারী একাধিকবার ইশারা করে আমাদেরকে একটু বাঁ দিকে সরে ভেতরের দিকে এসে ছবি তোলার জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছিলেন। এই জোব্বাধারীরা আর্কিওলজিক্যাল সাইটের এক ধরনের নিরাপত্তা প্রহরী। রামেসেসের পায়ের কাছে রাতের অপর্যাপ্ত আলোর কারণে ভাবলাম যাই দেখি জোব্বাধারী নির্দেশিত জায়গায়। জায়গাটা আরও বেশি অন্ধকার বলে ছবি তোলার তো প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু রাজ প্রহরী এবারে তার হাতের বৃদ্ধঙ্গুলি এবং তজর্নীতে ঘষা দিয়ে ইশারায় কিঞ্চিত বখশিশ দাবী করে বসলো। জায়গাটা আলো আঁধারি, তাই তাড়াতাড়ি আলোয় এসে বাংলায় বললাম, ‘তোমার উদ্দেশ্য মহৎ হলে কিছু বখশিশ দেওয়া যেতো, কিন্তু তুমি লোকটা খুব সুবিধার না।’ এরপরে দ্রুত তোরণ পার হয়ে পৌঁছলাম পরবর্তী প্রাঙ্গণে।

প্রাচীন মিশরের অন্যতম প্রধান স্থপতি ফারাও তৃতীয় আমেন হোটেপ লুক্সর মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। পরবর্তী ফারাও বংশধরদের মধ্যে তুতেনখামেন এবং হোরেমহেব নির্মাণ এবং সম্প্র্রসারণে যুক্ত থাকলেও কাজটি সম্পন্ন করেছেন আবার সেই দ্বিতীয় রামেসেস। সম্রাট তাঁর দীর্ঘ রাজত্বকালে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন, নতুন নির্মাণ করেছেন, পুরাতনের সংস্কার করেছেন সন্দেহ নেই। তবে তিনি একই সঙ্গে নিজের বীরত্ব, খ্যাতি ও গৌরবগাথা ইতিহাসে যুক্ত করার আকাক্সক্ষা থেকে বিদ্যমান অনেক মূর্তি ও পুরোনো ুনির্মাণ থেকে অন্যদের হটিয়ে দিয়ে নিজের মূর্তি পুনঃস্থাপন করেছেন। ফলে মূর্তি, দেয়াল চিত্র এবং খোদাইয়ের কাজের প্রায় সবটা জুড়েই আছেন দ্বিতীয় রামেসেস। অর্থাৎ ক্ষমতা হাতে পেলে পুরাতন স্থাপনা, সড়ক, সেতু কিংবা মাঠ ময়দানের নাম বদলে দেওয়া বা পুরোনা কীর্তিমানদের ভাস্কর্য সরিয়ে দিয়ে নিজেদের অহংকারের ইতিহাস তুলে ধরার যে সংস্কৃতি চারিদিকে দেখা যাচ্ছে, হাজার বছর আগেও তা বেশ প্রচলিত ছিল বলেই মনে হয়।

লুক্সরের মন্দিরের ভেতরে পুরো চত্বর জুড়ে অস্থায়ী কিছু নির্মাণ কাজ, বা আরও স্পষ্ট করে বললে বলা যায় সাজসজ্জার কাজ চলছে। কাঠের কাঠামো এবং হার্ডবোর্ড ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে তোরণ, আঙ্গিনা জুড়ে পাতা হয়েছে ঢাকনা দেওয়া বিলাসবহুল কুরসি। রাতেও কাজ চলছে বলে মিস্ত্রিদের হাতুড়ি ঠোকাঠুকির শব্দে কারো কথাই ঠিক শোনা যায় না। তাই রানা ভাই যখন বললেন, ‘সিসি আসছেন, তাই সাজ সাজ রব’ কথাটা প্রথমে বুঝতেই পারলাম না। এরপর রানা ভাই কাছে এসে খোলাসা করে বললেন,ও লুক্সর থেকে কর্নাকের প্রাচীন সড়ক সংস্কারের পরে নতুন করে উদ্বোধন করতে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সাঈদ হুসেন খলিল এল সিসি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ সাঈদ হুসেন খলিল এল সিসি লুক্সর আসবেন, তারই প্রস্তুতি চলছে।’ নামের বাহার দেখে মনে হলো প্রেসিডেন্ট হবার উপযুক্ত নামই বটে! যে কোনো মহামহিমের শুভাগমন উপলক্ষে আমাদের দেশে যেমন তোরণ, মঞ্চসজ্জা, ব্যানার ফেস্টুন সামিয়ানা এবং চামচা মোসাহেবদের সদর্প পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে, এ্যারাব রিপাবলিক অফ ঈজিপ্টই বা তার ব্যতিক্রম হতে যাবে কেন!

লুক্সরের মন্দিরটি ফারওদের নব রাজত্বের যুগের অনেক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে আছে। বিশাল হল ঘর, তিন দিক বেষ্টিত স্তম্ভের সারি, হল পেরিয়ে অপরিসর প্রবেশ দ্বারের ওপারে পাথরের চওড়া দেয়াল ঘেরা অভ্যন্তরীন কক্ষ। দেয়াল এবং স্তম্ভগুলোর চিত্রমালায় ফুটে উঠেছে সে যুগের বীরত্বগাথা, নানা যুদ্ধ জয়ের কাহিনি। আমরা একের পর এক ছোট বড় নানা প্রাসাদ প্রাকার অতিক্রম করে শেষ প্রান্তে পৌঁছে দেখতে পাই পিলার ঘেরা প্রাসাদের বাইরেও সাজানো রয়েছে হাজার হাজার বছর আগের ছোট বড় ভাস্কর্যের ভগ্নাবশেষ, চিত্রিত প্রস্তর খণ্ডের ছোট বড় টুকরো ও শিলালিপি। অপর্যাপ্ত আলো এবং সময়ের স্বল্পতার জন্যে এই অবহেলিত অংশ পুরোটা ঘুরে দেখা সম্ভব হলো না। মোস্তফার বেধে দেওয়া সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও বাইরে এসে দুই দুবাইবাসীর জন্যে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে হলো আরও মিনিট দশেক।

চলবে...

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল ও ১০৪টি খালি চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব চাল একটি ধান ভাঙ্গা মিলের গুদামে মজুদ করা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ এপ্রিল, শনিবার রাতে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করেন।

গুদামটির মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, তার বিরুদ্ধে চাল মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে তার মিলের গুদামে এসব চাল মজুদ ছিল। অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়, তবে অভিযানের সময় মিল মালিক এবং কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তাকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চাল মজুদ করা বেআইনি এবং এটি অপরাধ। উদ্ধারকৃত চাল উপজেলা খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত মামলায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খালেদা খাতুন জানিয়েছেন, মামলাটি রবিবার বিকালে থানায় করা হবে, যেখানে আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামী হিসেবে দায়ের করা হবে।

এদিকে, আসাদ আগেও বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম। 

আনাস আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও আবাসিক হলের সীট বাতিল এবং শামীম ভুঁইয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "গণমাধ্যমে আনাসকে নিয়ে রিপোর্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তার চুরির সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাকে এক বছরের বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। আগামীকাল বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে।'

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'শৃঙ্খলা বোর্ড দুইটি সিদ্ধান্তের সুপারিশ করেছে। এখনো সাইন হয়নি পেপারে। আগামীকাল সিন্ডিকেটে ফাইনাল হবে বিষয়টি।'

উল্লেখ্য, এর আগে কুমিল্লার একটি অভিজাত হোটেল থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরি করে আনাস এবং শামীম। সিসি ফোটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ এপ্রিল রাতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত এসে ক্যাম্পাসে আনাসকে মারধরও করে।

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলছে। তবে এই ইস্যুতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে বাংলাদেশ। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে তার আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা শান্তি চাই দক্ষিণ এশিয়ায়। আমরা জানি, বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমরা চাই না এখানে কোনো বড় কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, যাতে এটা এ অঞ্চলের মানুষের কোনো বিপদের কারণ না হয়ে উঠতে পারে। ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাইব তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করে ফেলুক। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, দু’একটি দেশের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছে। যেভাবে হোক মধ্যস্থতার মাধ্যমে হোক, দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হোক, আমরা চাই উত্তেজনা প্রশমিত হোক এবং শান্তি বজায় থাকুক।

ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইরান ও সৌদি আরব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারি কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি মনে করি না এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যস্থতা করার মতো কোনো ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমরা চাইব, তারা নিজেরা নিজেরা সমস্যার সমাধান করুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা চায়, আপনারা মধ্যস্থতা করুন তাহলে হয়ত আমরা যাব। কিন্তু তার আগে আমরা আগবাড়িয়ে কিছু করতে চাই না।

ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে কি না– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক জামানায় সবকিছু সবাইকে কমবেশি প্রভাবিত করে। কাজেই কোনো কিছু আমাদের একটুও প্রভাবিত করবে না, সেটা আমি বলি না। তাদের যেই সংঘাত সেটা আমাদের সরাসরি প্রভাবিত করার কিছু নাই। কারণ, আমরা এতে কোনো পক্ষ নিইনি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেকোনো সংঘাত বা সম্পর্ক খারাপ হলে প্রভাব পড়ে।

‘তবে তাদের কাছ থেকে আমাদের যদি কোনো স্বার্থ থাকে আমদানি করার, আমরা করব।’, যোগ করেন তৌহিদ হোসেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, এটা হয়ত নিরাপত্তা নিয়ে যারা সরাসরি কাজ করেন তারা বলতে পারবেন। এই মুহূর্তে আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত