প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩
বাইশ বছর আগে আমার ইজিপ্টশিয়ান বন্ধু লামিয়ার সাথে যখন পরিচয় হয়েছিল তখনই তার কাছে থেকে প্রথমবারের মতো জেনেছিলাম লক্সর না এলে মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বাইরের পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ কায়রো এসে পিরামিড এবং স্ফিংস দেখে, জাতীয় মিউজিয়াম এবং খানে খলিলি বাজারে একটা চক্কর দিয়ে, বড় জোর আলেক্সান্দ্রিায়ার নিমজ্জিত বাতিঘর এবং হাজার বছরের পুরোনো লাইব্রেরি দেখেই ফিরে যায়। কিন্তু ফারাও সম্রাটদের প্রাচীন মিশরকে জানতে হলে আবু সিম্বেল, কোমওম্বো এবং বিশেষ করে লক্সর আসতেই হবে। লামিয়ার ভাষায়, প্রাচীন লক্সরের পুরোটাই আসলে ওপেন এয়ার মিউজিয়াম। বিকেলের দিকে আমাদের জাহাজ সেই উন্মুক্ত জাদুঘরের শহরে এসে নোঙ্গর করলো। জাহাজ ঘাটে ভেড়ার পরপরই আমরা দ্রুত জলযান ছেড়ে আমাদের নির্ধারিত মাইক্রোবাসে উঠে পড়লাম। এবারেও পথপ্রদর্শক মোস্তফা এবং সঙ্গী সাথী বলতে সেই পুরোনো ছয়জন। আমাদের প্রথম গন্তব্য কর্নাক। দূর অতীতে লক্সরের নাম ছিল থিবস। থিবস নগরীর পথ দিয়ে কর্নাকের পথে ছুটতে ছুটতেই প্রায় ভুলে যাওয়া ব্রেখটয়ের একটি কবিতার কয়েকটি লাইন মনে পড়ে গেল।
Who built Thebes of the seven gates?
In the books you will find the name of kings.
Did the kings carry the lumps of rock?’
সত্যিই আমরা তো পিরামিড বা থিবস নগরীর নির্মাতা হিসাবে ফারাও সম্রাটদের কথাই জানি। যেমন তাজমহলের নির্মাতা হিসাবে জানি সম্রাট সাজাহানের নাম। কত সহস্র শ্রমদাসের কত বছরের উদয়াস্ত নিরলস কর্মযজ্ঞের শ্রমে ঘামে গড়ে উঠেছিল লক্সর তার হিসাব কেউ রাখেনি। অতীতের গৌরবোজ্জ্বল থিবস হাজার চারেক বছর পরে নাম বদলে লক্সর হলেও শহরটি তার অতীতের মতোই এখনো সুন্দর সাজানো একটি জনপদ। ফুটপাথের দুপাশে গাছের সারি, সড়ক দ্বীপের পুষ্পোদ্যান এবং মাঝে মাঝেই সবুজ তরু পল্লবের ফাঁকে দূরে উঁকি দিয়ে যায় উঁচু নিচু ধূসর পাহাড়ের সারি। কিছু পরেই আমরা যখন নীল নদ হাতের বাঁ দিকে রেখে এগোচ্ছি, তখন বাঁ দিকের পায়ে চলার পথ জুড়ে নাম না জানা একটি ঝাঁকড়া গাছের সারি আমাদের সাথে সাথে চলতে থাকে। জাহাজ থেকে নামার মিনিট পনের পরেই পৌঁছে গেলাম কর্নাক টেম্পল কমপ্লেক্স।
বিপুল সংখ্যক বিস্ময়কর প্রাচীন স্থাপনা ও বিশালাকৃতির স্মৃতিস্তম্ভের সমাবেশ ঘটেছে কর্নাকের মন্দিরে। আরবিতে কর্নাক শব্দের অর্থ সুরক্ষিত। এই নাম থেকেই ধরে নেয়া যায় নীল নদের পূর্ব তীরে বর্তমান লক্সর প্রশাসনিক অঞ্চলের কর্নাক অতীতে কোনো এক সময় ছিল দুর্গ-দেয়াল, প্রহরা-পরিখা বেষ্টিত একটি সুরক্ষিত নগরী। কর্নাক মন্দির কম্প্লেক্সটি পুরাকালের একটি পুর্ণাঙ্গ গ্রামের আকারে মন্দির, উপাসনালয় এবং অন্যান্য ভবন নিয়ে খ্রিস্টপূর্ব ২০৫৫ অব্দ থেকে শুরু করে ১০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দুই হাজার বছরের বেশি সময় ধরে তিলে তিলে তিলোত্তমা হয়ে গড়ে উঠেছিল। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল সম্ভবত দেবতা আমুন, মুত এবং খানসুকে উৎসর্গ করা একটি ধর্মীয় মন্দির হিসাবে। ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নির্মিত প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এলাকা জুড়ে থাকা বৃহত্তম ভবন হিসাবে প্রাচীন মিশরীয়দের কাছে কর্নাকের পরচিতি এবং গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
সৌরভ আগেই বলেছিল মিশরের প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে কর্নাক এবং ফিলাই তার সবচেয়ে পছন্দের দুটি জায়গা। ফিলাই ছোট্ট একটি দ্বীপে এবং কর্নাক তার বিশাল পরিসরে ফারাও যুগের অনন্য প্রত্মতাত্ত্বিক নির্দশন হিসাবে সারা বিশ্বের প্রত্মপ্রেমিক মানুষের কাছে এই একবিংশ শতাব্দীতেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। আমরা কর্নাক মন্দির কমপ্লেক্সের বিশাল চত্বরে নামার পরপরই মোস্তফা যথারীতি প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে এনেছে। ভেতরে ঢুকেই একটা বড় হলঘরে পুরো মন্দির এলাকায় রেপ্লিকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এখান থেকে প্রাথমিক ধারণা পাবার পরে কোন অংশে কতোটা সময় দেয়া দরকার সে ব্যাপারে পর্যটকেরা ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমাদের হাতে সময় কম, মডেল দেখে সময় নষ্ট করার চেয়ে আমি বাস্তব নিদর্শনগুলো যতোটা সম্ভব দেখে নিতে চাই। কাজেই হলঘর থেকে বেরিয়ে আবারও একটা দীর্ঘ বাধানো চত্বর পেরিয়ে আমরা এগোতে থাকি।
কর্নাক মন্দির চত্বর তিনটি পরস্পর সংযুক্ত এলাকায় ভাগ করা। আমুনের সীমানা, মুটের সীমানা এবং মনটুর সীমানায় বিভক্ত মন্দির চত্বরটির মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং বিচিত্র নির্মাণ শৈলীতে পরিপূর্ণ আমুনের চত্বরটিই সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বেশিরভাগ পর্যটক এই এলাকাটি ঘুরে দেখেই তাদের কর্নাক পরিদর্শন শেষ করেন। আমুনের সীমানায় প্রবেশের আগেই হাতের ডান দিকে একটা মসজিদ দেখে কৌতূহলী হয়ে মোস্তফার কাছে এর ইতিবৃত্ত জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আরবি ভাষাভাষী মুসলমান ভাই সম্ভবত ফারাওদের সম্পর্কে যতোটা জানেন মসজিদ সম্পর্কে তাঁর ধারণা ততোটা স্পষ্ট নয়। তাই তার কাছে থেকে তেমন সদুত্তর না পেয়ে আমরা একটি সেতুর উপর দিয়ে পরিখা পেরিয়ে মূল মন্দির চত্বরের প্রবেশ পথে পৌঁছে গেলাম। এখানে দুপাশে দীর্ঘ সারিতে অসংখ্য স্ফিংস মৃর্তি থাবা পেতে বসে আছে। থাবা সিংহের মতো হলেও আসলে তাদের চেহারা যে কার বলা কঠিন। সারিবদ্ধ মূর্তিগুলোর অনেকেরই মুণ্ড কাটা পড়েছে, তবে ভালো করে দেখলে বোঝা যায় এরা যাদের প্রতিনিধিত্ব করছে, তারা ছাগল বা ভেড়ার চেয়ে উন্নততর কোনো প্রাণী নয়।
ডমশরের নিউ কিংডোম যুগে শুরু করে পরবর্তী কয়েক শতাব্দী ধরে ফারাও শাসকরা একে একে দশটি তোরণের একটি সিরিজ নির্মাণ করে। দেয়াল দিয়ে যুক্ত তোরণগুলোর ধারণা অনেকটা সিংহ দুয়ারের মতো, একটিকে ভবন বা স্থাপনাকে অতিক্রম করে পরবর্তী প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যায় এই বিশাল তোরণের ভেতর দিয়ে। আমরা প্রথম তোরণ পেরিয়ে ঢুকে পড়ি একশ চৌত্রিশটি প্রকাণ্ড কলাম বিশিষ্ট আমুনের চত্বরে। এই হাইপোস্টাইল হল মিশরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনা। বিপুলায়তন জটিল এবং দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন জগৎ ঘুরে দেখে বিস্মিত হবার সুযোগ যখন পেয়েছি, তখন মোস্তফাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ইতিকথা শোনার কোনো মানে হয় না। এক একটি পিলারের কাছে দাঁড়ালে নিজেকে ভীষণ ক্ষুদ্র বলে মনে হয়। আড়াই কিংবা তিন হাজার বছর আগে যখন এই বিশাল পাথরের কাঠামো নতুন করে তৈরি হয়েছে, তখন কি তা সে যুগের মানুষের কাছে আশ্চর্যজনক কিছু বলে মনে হয়েছে! বড় বারোটি স্তম্ভ সত্তর ফুট এবং বাকি একশ বাইশটি স্তম্ভের প্রতিটির উচ্চতা চল্লিশ ফুট। সম্রাট সেতির রাজত্বকালে, অর্থাৎ ১২৯০ থেকে ১২৭৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নির্মিত হয়েছিল এই বিশাল মিলনায়তন। হলের দেয়ালে সেতি এবং তার উত্তরসূরী দ্বিতীয় রামেসেসের লিবিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধ শত্রæদের পরাজিত করার দৃশ্য চিত্রিত হয়েছে।
আমরা দেয়ালের এবং স্তম্ভের শরীরে আঁকা শিল্পকর্ম দেখতে দেখতে প্রথমে বাঁ দিকের ভগ্নদশা ভবন এবং পরে ডান দিকের সুরক্ষিত চত্বর ঘুরে আসি। মন্দিরের ভেতরে তেমন কোনো গাছপালা না থাকলেও এখানে সেখানে দুই একটা খেজুর গাছ মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে খেজুর গাছের উচ্চতা ছাড়িয়ে যে বিশাল প্রস্তর মূর্তি, সেটি সম্রাট দ্বিতীয় রামসেসের। তাঁর দুই চরণযুগলের মাঝখানে একটুখানি জায়গা করে নিয়েছেন রাণী নেফারতারি! রাজার প্রিয়তমা পত্মীরই যদি এই দশা হয় তাহলে তাঁর অন্যান্য রাণীদের অবস্থান যে কোথায় ছিল তা বলা নিষ্প্রেয়োজন। সম্রাটের সমাজ্ঞী কিংবা সাধারণের স্ত্রী, সকল নারীর অবস্থান আগে যেমন ছিল এখনো তাই আছে। আমাদের দুজনের সাথে রামসেস এবং নেফারতারিকে একফ্রেমে রেখে রানা ভাই খুব কষ্ট করে কয়েকটা ছবি তুললেন। কিন্তু ফারাওয়ের বিশালত্বের কাছে খর্বকায় আমাদের ছবিতে খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে গেল।
মন্দিরের চতুর্থ পেরিয়ে আমরা ওয়াতজেত হলে। চতুর্থ এবং পঞ্চম তোরণের মাঝে ওয়াতজেত হলটি তৈরি হয়েছিল সম্রাট প্রথম থুতমোজের সময়কালে। হাইপোস্টাইল হলের মতো বিশাল না হলেও এর দৈর্ঘ্য প্রস্থও নেহায়েত কম নয়। রাজার অভিষেক, হেব-সেড ফেস্টিভ্যাল অথবা ধর্মীয় উৎসব আনন্দের সমাবেশ ঘটতো এই মিলনায়তনে। তবে পরবর্তী সময়ে বৃহত্তম হলটি নির্মিত হলে গুরুত্বপূর্ণ আচার অনুষ্ঠান হাইপোস্টাইল হলে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। কোনো একজন রাজাধিরাজ তাঁর রাজত্বকালের ত্রিশতম বছরে হেব-সেড উৎসবটির আয়োজন করতেন। পুরোহিতদের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিপরীতে ফারাওদের ঐশ্বরিক ক্ষমতা প্রদর্শন এবং ধর্মীয় নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে সম্রাট চতুর্থ আমেনহোটেপ তাঁর রাজত্বকালে দেবতা অ্যাতনকে উৎসর্গ করে এই উৎসবের প্রচলন করেছিলেন। বলা যায় ত্রিশ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন সুশাসন নিশ্চিত করার পরে এটি রজত জয়ন্তী বা সুবর্ণ জয়ন্তীর মতো একটি অনুষ্ঠান। এই উৎসবের মাধ্যমে রাজা তাঁর শক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শন করে পরবর্তী বছরগুলোতে তাঁর শাসন সুসংহত করতেন। এরপর থেকে তেত্রিশ, ছত্রিশ, ঊনচল্লিশ এমনি করে প্রতি তিন বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হতো এই উৎসব। ধর্মীয় উদ্দেশ্য বা দেব দেবীদের খুশি করার এই আয়োজনের আবরণ আসলে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার একটি প্রক্রিয়া মাত্র।
মিশরের ‘নিউ কিংডোমে’ যুগে কর্নাক ছিল ধর্ম বিশ্বাসের কেন্দ্রভূমি কিন্তু ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত ছিল সেই থিবস নগরীতে। কর্নাকের তাৎপর্যের প্রতিফলন ঘটেছে এর নির্মাণের আড়ম্বরে এবং বিশাল আকার আকৃতিতে। কর্নাকের মন্দিরটিও এখন প্রকৃতপক্ষে একটি উন্মুক্ত জাদুঘর। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে নির্মিত ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর মধ্যে কর্নাক আজও বৃহত্তম হিসাবে স্বীকৃত। এর চুয়ান্ন হাজার বর্গফুটের মহা মিলনায়তন নটরড্যাম ক্যাথেড্রালের চেয়েও বড়। ধর্মীয় গুরুত্ব ছাড়াও ফারাওদের নতুন রাজত্বকালে কর্নাক খকনো কখনো প্রশাসনিক কেন্দ্র, সম্রাটদের প্রাসাদ এবং কোষাগার হিসাবেও ব্যবহৃত হয়েছে। আশি হাজার পরিচারক এবং ক্রীতদাস আমুন রা’র সেবায় সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত ছিল। মহামহিম দেবতার সম্মানে নির্মিত হয়েছিল পাঁচ হাজার মূর্তি। সন্ধ্যা হয়ে আসছিল বলে ষষ্ঠ ও সপ্তম তোরণের মাঝের চত্বরে দ্রুত একটি চক্কর দিয়ে বাইরের পথ ধরলাম। আরও অনেকটা সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে প্রতিটি দেয়াল প্রতিটি স্তম্ভ খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হলে ভালো হতো। দুই হাজার বছরের বেশি সময় নিয়ে গড়ে ওঠা কোনো স্থাপত্য, কোনো মন্দির বা কোনো শিল্পকর্ম দু চার ঘণ্টা বা দু চার দশ দিনে হয়তো চোখের দেখা দেখে শেষ করা সম্ভব। কিন্তু গভীরভাবে বুঝতে পারা বা উপলব্ধি করা হয়তো কখনোই সম্ভব নয়।
আমরা বাইরে বেরিয়ে আসার আগেই কর্নাকের মন্দির সংলগ্ন মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসতে শুরু করেছে। তবে সে আজানের আহবান এতোটাই মৃদু যে আজানে অনভ্যস্ত পর্যটককে তা হঠাৎ করে চমকে দেয় না। কর্নাকের তোরণ পেরিয়ে মসজিদের পাশ দিয়ে আমরা পশ্চিমের রক্তিম আকাশের দিকে হেঁটে যাই।
চলবে...
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩