সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ | ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রবন্ধ / বাঙালি সংস্কৃতির বাড়ন্ত প্রতিপক্ষ

বাঙালির জীবনে উৎসব-পার্বণের কমতি ছিলোনা আগেও, বেশির ভাগই ছিল নানা ধর্মসম্প্রদায়ের আবাহন থেকে। ভাগ্যাহত বাঙালি জীবনের কঠিন সংগ্রামের ফাঁকে উৎসবের আয়োজন করেছে। এরপরেও ঈদ, পুজা ইত্যাদি উৎসবগুলি সার্বজনীন সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সময়ের পালাবদলে দেশ ভাগ হয়েছে, বঙ্গের একাংশকে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। উনিশশ’ ষাটের দশকে রাষ্ট্রযন্ত্রের রবীন্দ্র বিরোধীতার প্রতিবাদের পথ ধরে বাঙালি শেকড়ের সন্ধানে নেমেছে। ঢাকার রমনা উদ্যানের সেই সংগ্রাম ছোট থেকে বড় হয়েছে। ক্রমান্বয়ে পহেলা বৈশাখ ধর্মবর্ণ মিলে বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

প্রথম দিকে শহর-কেন্দ্রিক হলেও ক্রমান্বয়ে নববর্ষের আমেজ গ্রামগঞ্জে ছাড়িয়ে, ধনাট্যের চৌকাঠ পেরিয়ে মধ্যবিত্ত, এমন কি নিম্নবিত্তের দুয়ারে পৌছেছে। এই উপলক্ষ্যে এখন বাঙালির অবিভাজ্য সাংস্কৃতিক চেতনা অন্বেষণের গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। যে বাংলা সন মোঘল আমলের কৃষিপণ্যের খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে প্রবর্তন করা হয়েছিল, তা আজ পরিবর্তিত রূপে আবির্ভূত হয়েছে। পুরনো দিন বদলেছে; সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো বদলেছে। অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ নববর্ষকে কেবল নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ করেই নেয়নি, সময়ের পড়তে তা সমাজ-সংস্কৃতিরও অঙ্গ হয়েছে। সময় ও পরিবর্তণের যা দাপট, অন্যথায় বাংলার লোকসংস্কৃতি কিংবা বাংলা ঋতুর কথা বাঙালির নতুন প্রজন্ম হয়তো ভুলেই যেত!

নানা অনুসঙ্গ এসেছে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে; যুক্ত হয়েছে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ডালি, স্বৈরশাসন ও ধর্মান্ধতার কুলষতা বিরোধী চেতনার নতুন সংযোজন এসেছে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। এই শোভাযাত্রা, অশুভের বিনাশ কামনায়, সত্য ও সুন্দরের প্রার্থণায় শামিল হয়েছেন ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ নির্বিশেষে সব পেশার, সব শ্রেণীর মানুষ। নানা রংয়ের শাড়ি, মুখে আলপনা, বাহারি পাঞ্জাবি, ফুলের বিচিত্র শোভা, এসবের সঙ্গে তরুণদের হাতে জাতীয় পতাকা দেখে আমাদের প্রজন্মের কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। তারুণ্যের এ প্রত্যয় মানব ধর্মের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িকতা পক্ষে, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, অশুভের বিরুদ্ধে; এ যেন অন্ধকার থেকে আলোতে এগিয়ে যাওয়া।

রমনার বটমূলে সাহসী বাঙালিদের নেতৃত্বে নবজাগরণের যে ডঙ্কা বেজেছিল, আজ অর্ধশতাব্দিরও বেশি সময় পরে সে ডঙ্কার দোলা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মাঝ দিয়ে বাঙালির শাশ্বত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দেশের গন্ডির বাইরে বেরিয়ে বিশ্বের দুয়ারে পৌঁছেছে। আরও আনন্দের বিষয় যে, বোমা মেরে, ধর্মান্ধতার শিকল পরিয়ে কিংবা ভয়ভীতিতে এ উৎসব বন্ধ করা যায়নি; ধর্মীয় অপব্যাখ্যার আঘাতেও ঠেকানো যায়নি।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-এতেই কী তুষ্ট থাকবে বাঙালি? সে সুযোগ কি আছে? একবারে নেই। কারণ অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তার বিরোধীতা আজও আত্মসমর্পন করেনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে রমনার উদ্যানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পন করেছিল কেবল পরাজিত পাকিস্তানি সৈন্যরা, তাদের এদেশীয় অনুচরেরা নয়। সময়ের ব্যবধান এবং মুক্তিযুদ্ধপন্থি প্রগতিশীলদের আত্মতুষ্টির সুযোগে পুরনো প্রতিক্রিয়াশীলরা নতুন করে সুগঠিত হয়েছে, সংস্কৃতির জগতে পরাস্থদের ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ফলে নতুন আদলে ধর্মীয় উগ্রতা আবারও মানুষকে বিভাজিত করে চলেছে; আক্রান্ত হচ্ছে এক বাঙালি আরেক বাঙালির অসহিষ্ণুতায়।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই পূর্ববঙ্গের বাঙালিরে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা জেগে ওঠে। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ সেই চেতনাকে বেগবান করে। ক্রমান্বয়ে লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে নাগরিক জীবনের সেতুবন্ধ ঘটে। ১৯৭১এর সশস্ত্র-মুক্তিযুদ্ধসহ পালাক্রমিক জনসংগ্রাম সেই উপলব্ধিকে অপ্রতিরুদ্ধ করে। সাহিত্য ও শিল্পকলায় সে দ্যোতনা ছড়িয়ে পড়ে; নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য মিলে পহেলা বৈশাখ প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। তবে অনুধাবন করা সঙ্গত যে, ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়েও বাঙালি আমাদের রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডে একক নয়; আমাদের আছে আদীবাসী, নানা নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠি, যাদের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি আছে, আছে বৈশাবিসহ নিজস্ব সাংস্কৃতির আবাহন। অতএব বাঙালির নববর্ষ তখনোই পূর্ণতা পাবে যখন সকলের নববর্ষকে আমরা সম্মান জানাতে শিখবো।

অনস্বীকার্য, পূর্ণ মনে হলেও বাংলাদেশে আমরা বাঙালি সংস্কৃতির খণ্ডিত অংশ ধারণ করি। বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপরা, আসাম, এমন কি ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ৩০ কোটিরও বেশি বাঙালি পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে। পূর্ববঙ্গ-পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের জন্ম প্রাসঙ্গিকতায় আমাদের পহেলা বৈশাখ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে নিশ্চয়ই, কিন্তু এর শ্বাশত আবেদন এপার-ওপারে সমান। দূর্ভাগ্য যে, পঞ্জিকার হেরফের ঘটিয়ে বাঙালির সর্বজনীন উৎসবটিকেও খন্ডিত করা হয়েছে! এমনকি ভাগ হয়ে গেছে রবীন্দ্র-নজরুলের জন্ম ও মৃত্যুতিথি। ভাগ হয়েছে ব্যবসায়ী মহলের হালখাতা, সন গণনা! এই বিভাজন দূর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা ঢাকঢোল বাজিয়ে, নৃত্যগানে মেতে পহেলা বৈশাখ গ্রহণ করি বটে, কিন্তু বাঙালির শ্বাশত সংস্কৃতি কতটা লালন করি? বাংলাভাষা,এর সন-তারিখকে কতটা সমাদর করি আমরা? এককালে বাঙালির জীবনজীবিকা বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী সম্পন্ন হতো; আজ তা নেই। এককালে বাঙালির পারিবারিক ও সামাজিক কাজকর্ম, বিবাহ, জন্ম-মৃত্যুসহ জীবনের সব প্রয়োজনে বাংলা সনতারিখ ছিল অনস্বীকার্য; আজ নেই! দূর্ভাগ্য যে, যে নবীনেরা পহেলা বৈশাখের উৎসবে মাতেন তাদের কাছেও বাংলা সনতারিখ অপ্রয়োজনীয় হয়েছে! ইংরেজির বিশ্ব আধিপত্ত অনস্বীকার্য, পরিবর্তন মেনে নিতে হবে, কিন্তু আপন ভাষা-সংস্কৃতির বিনিময়েও কি?

শুধু তাই নয়, বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিজাতীয় আগ্রাসন আজ নতুন মাত্রা পেতে শুরু করেছে। শিক্ষাব্যবস্থায় এ আগ্রাসন বহুল দৃশ্যমান। ধর্মান্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির এই পূনরাভিযান শিক্ষার্থীদের তাৎপর্যময় অংশে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। অথচ এই দুষ্ট প্রবনতাকে প্রতিরোধ করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ভুললে চলবেনা দেশের পাঠ্যপুস্তকে রবীন্দ্রনাথ, জীবনান্দকে নির্বাসন দেওয়ার চেষ্টাও কম নেই! অতএব শিক্ষা ব্যবস্থায় এই আগ্রাসন ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।

শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, বহু শাখাতেই আজকাল দৃশ্যমান হচ্ছে বাঙালির সংস্কৃতি বিরোধী আগ্রাসন। সমাজের স্তরগুলিতে উগ্রবাদ ও ধর্মান্ধতা নতুন মাত্রা লাভ করার দ্বারপ্রান্তে এসেছে।

স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী গোপনে, কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেও, তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এসবের বিপরীতে দরকার রাষ্ট্র ও সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট বা কার্যকর উদ্যোগ, যার অনপস্থিতি আতংকজনক। মোটকথা, বাঙালির সাংস্কৃতিক শক্তি ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হচ্ছে। দেশে মাটিতে প্রভূত অর্থনৈতিক অগ্রগতির আলো জ্বাললেও ধর্মান্ধ সংস্কৃতির অন্ধকার ঠেকানো যাচ্ছে না। অথচ এ অন্ধকার রোধ করা না গেলে প্রগতির সব আলো নিভে যাবে।

লক্ষ্য করার মতো যে, রাজনৈতিক অঙ্গনে ধরাশায়ী হলেও ধর্মীয় উগ্রবাদ ও ধর্মান্ধতা নিত্য নতুন চেহারায় অগ্রসরমান। যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ উপড়ানো হয়েছে বলে অর্ধশতক আগে প্রশান্তি লাভ করা গেছে, সেই সাম্প্রদায়িকতা নানা কৌশলে আজ বিস্তৃত হচ্ছে। রাজনৈতিক ধর্মবাদীরা সাধারণ মানুষের আবেগ কাজে লাগিয়ে তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ কথা বলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। এ যেন এক নি:শব্দ গ্রাস-যা ঠেকাতে না পারলে সমূহ দুর্গতি ঠেকানো যাবে না। মনে রাখা দরকার, যে সমাজে উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধরা মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রন হাতে নিতে সক্ষম হয়, সে সমাজে ধর্মের পবিত্রতা যেমন খর্ব হয়, তেমনি তৈরি হয় উন্মাদনার অশূভ ও সম্প্রসারিত ক্ষেত্র, যার কুফল দৃশ্যমান হয় সকল ক্ষেত্রে।

শুধু এই নয়, উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো বাঙালির উদার অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতিকে আঘাত হানছে, কখনো সরাসরি। যাত্রাপালার গ্রামীণ সংস্কৃতি প্রায় বিলুপ্ত হবার পথে। লোক ঐতিহ্যের উৎসবগুলিতে প্রতিবন্ধক তৈরির অযুহাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওরা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস, আইন, সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাবারও উদাহরণ তৈরি করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মান্ধরা প্রশাসনের আশকারা পাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। মাঠ প্রশাসনের উদাসীনতায় সমাজে মৌলবাদ ভীতি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। বাউলরা আজ ধর্মব্যবসায়ীদের ভয়ে তটস্থ। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও অপতৎপরতা চালানোর অভিযোগ মিলছে। বলা বাহুল্য, হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতিকে ‘বিধর্মীদের সংস্কৃতি’ বলে মিথ্যাচার করে রাজাকার-আদবদরের অনুসারীরা নিত্যনতুন উদ্যোগে সফল হতে চাইছে। সব মিলিয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছে নি:শব্দ মৌলবাদ।

ইত্যকার অশুভ দৃষ্টান্ত নিয়ে নাগরিক সমাজের উদ্বেগের শেষ নেই। আরও উদ্বেগের বিষয় যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরেও রাষ্ট্রকে সামাজিক অন্ধকারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করা যায়নি। অথচ রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধর্মান্ধ বা মৌলবাদী গোষ্ঠি অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হলে বড় ক্ষতির কারণ হবে। অতএব বাঙালির সংস্কৃতিক সংগ্রামকে, মানবিক সংস্কৃতির ধারাকে বেগবান করতে হবে, শিক্ষাধারায় পাঠ্যসূচি থেকে ঘৃণা সঞ্চারি রচনা বাদ দিতে হবে, বিজ্ঞানভিত্তিক সমতার সমাজ গড়তে হবে।

দৃশ্যতই ধর্মান্ধ এবং রাজনৈতিক ধর্মবাদীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অভ্যন্তরে শিকড় বিস্তার করতে ব্যস্ত, কারণ তারা মনোজাগতিক বৈকল্য চায়। সে কারণে এ প্রবণতার শিকড় উৎপাটন অত্যাবশ্যকীয় জাতীয় দায়িত্ব। কারণ এ বিপর্যয় সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। প্রার্থণা করি, বাঙালি মানুষ হোক, বাঙালির দেশপ্রেম জাগ্রত হোক, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

 

 

 

Header Ad

নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে মহিম বাবু নামে ছয় বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। মাহিম উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের গ্রামের খুকশিয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলামের ছেলে। শিশুটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে নিখোঁজ ছিল।

স্বজনরা জানান, নিখোঁজের পর থেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও মাহিমের কোন সন্ধান পাওয়া যচ্ছিলো না। এরই এক পর্যায়ে রবিবার বিকেলে আনুমানিক ৪টার দিকে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী নলেয়া নদীতে একটি শিশুর মরদেহ ভেসে ওঠার খবর পান তারা। মাহিমের পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশটি মাহিমের বলে শনাক্ত করে।

খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, পানিতে পড়ে শিশু মাহিমের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে।

Header Ad

নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলো কাজ সেরে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা রেল লাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি। আর তা হবে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রোববার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা জানান।

নির্বাচন কবে হবে এই প্রশ্ন সবার মনেই আছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। তারপর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তাবে।

তিনি বলেন, একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিলেই নির্বাচন আয়োজনে আমাদের দায়িত্ব শেষ। রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সংস্কার আমাদের এই সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার। আপনারাই আমাদেরকে এই ম্যান্ডেট দিয়েছেন। যে ছয়টি সংস্কার কমিশন আমরা শুরুতে গঠন করেছিলাম তারা ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। যার মধ্যে একটি হলো নির্বাচন সংস্কার কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই কমিশনের সুপারিশমালা অত্যন্ত জরুরি। তাদের প্ল্যাটফর্মে যান। আপনার মতামত খোলাখুলিভাবে তুলে ধরুন। আপনি দেশের মালিক। আপনি বলে দিন আপনি কি চান। কীভাবে চান।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনাদের সকল বক্তব্য বিনাদ্বিধায় বলতে থাকুন। সবার মনের কথা তুলে ধরুন। আমার অনুরোধ সংস্কারের কথাটাও একই সঙ্গে বলুন। সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে যাবেন না। নির্বাচনের কথা বলার সঙ্গে নির্বাচন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের কথাটিও বলুন। সংস্কার হলো জাতির দীর্ঘ মেয়াদি জীবনী শক্তি। সংস্কার জাতিকে বিশেষ করে আমাদের তরুণ-তরুণীদের নতুন পৃথিবী সৃষ্টির সুযোগ দেবে। জাতিকে বঞ্চিত করবেন না।

নির্বাচন আয়োজনে যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালায় রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশের সব মানুষের মতামত অপরিহার্য সে কমিশন হলো সংবিধান সংস্কার কমিশন। এই সুপারিশমালার কোন অংশ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে তার ভিত্তিতে নির্বাচনী আইন সংশোধন করতে হবে। সমান্তরালভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া চলতে থাকবে, বলেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, আমি নিশ্চিত নই, সংস্কার প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের সুযোগ আমরা কতটুকু পাবো। তবে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার কাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আয়োজন করবো। ততদিন পর্যন্ত আমি আপনাদের ধৈর্য্য ধারণ করার অনুরোধ করবো। আমরা চাইবো, আমরা যেন এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারি যা যুগযুগ ধরে অনুসরণ করা হবে। এর ফলে সাংবাৎসরিক রাজনৈতিক সংকট থেকে আমাদের দেশ রক্ষা পাবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সময়টুকু আমি আপনাদের কাছে চেয়ে নিচ্ছি। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সৃষ্টি হয়েছে রাজনীতিকে নীতির কাঠামোয় আনার জন্য, এবং রাজনীতির জন্য নতুন পরিবেশ সৃষ্টির নিবিড় আকাঙ্ক্ষা থেকে। এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা থেকে জাতিকে বঞ্চিত করবেন না।

Header Ad

ঢাবি ছাত্রদলের ৬ নেতাকে অব্যাহতি

ছবি: সংগৃহীত

সদ্যঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে থেকে ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ওই ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, গত ১৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পর কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হলে কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ছয়জনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পাওয়া সাইফুল ইসলাম রিমন ও মাহাদী ইসলাম নিয়ন, জেন্ডার ন্যায্যতা ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সুকাইনা নাফিসা তরঙ্গ, সহ-পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন এবং সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রায়হান হোসেন।

গত ১৪ নভেম্বর ২৪২ সদস্যবিশিষ্ট ঢাবি শাখা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এ কমিটিতে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপকারী এক শিক্ষার্থী পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই দিনই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি জহির রায়হান আহমেদ ও এবিএম ইজাজুল কবির রুয়েলের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাজ চলমান থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নিখোঁজের চারদিন পর নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার
নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাবি ছাত্রদলের ৬ নেতাকে অব্যাহতি
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কারাগারে
নখের পাশে চামড়া ওঠে কেন, করণীয় কী?
মেট্রোরেলের এমআরটি-৫ প্রকল্পে ব্যয় কমলো ৭ হাজার কোটি টাকা
সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তাঁর স্বামীর পাসপোর্ট আবেদন স্থগিত
বন্ধু ছাঁটাই করার দিন আজ
বিমানবন্দর থেকে দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান গ্রেফতার
মাওলানা ভাসানী সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের প্রেরণাদাতা: তারেক রহমান
ইসরায়েলের পাঁচ সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর রকেট হামলা
পরীক্ষায় ফেলের হতাশা থেকে স্কুলে হামলা, নিহত ৮
মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
উত্তরের জনপদে শীতের আমেজ, পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
নতুন প্রেমে মজেছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা
এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার
ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকের কথা নাকচ করেছে ইরান
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ইসলামি বক্তা আব্দুল হাই সাইফুল্লাহ
পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৭ সেনা নিহত