শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা

ঝড়ের আগেই আরেফিন তার বন্ধুর গাড়িতে করে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুটা পথ এগোবার পরই শুরু হয় উন্মাতাল ঝড়। ধুলোবালি আর শিলা-বৃষ্টির প্রতাপে সওগাত গাড়ি চালাতে পারছিলেন না। মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু একেবারে অন্ধকার হয়ে গেলো। গাড়ির লাইট জ্বালিয়ে ডিপার দিয়ে কোনো মতে একটা বাড়ির সামনের শেটে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলেন। অনেকক্ষণ সেখানেই অবস্থান করেন। সেখানেও গাড়ি রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। গাছের ডালপালা ভেঙে গাড়ি ওপর পড়ার উপক্রম হলো। কী আর করা। তখন বাধ্য হয়েই তাদের বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দিতে হলো। সওগাত আস্তে আস্তে গাড়ি টানতে শুরু করলেন।

সওগাত আলী খুব সাবধানী মানুষ। গলা পর্যন্ত মদ গিললেও গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার পর যেন স্বাভাবিক হয়ে যান তিনি। পথ চলতে তার কোনো অসুবিধা হয় না। গাড়ি চালাতে চালাতে তিনি ঠিকই আরেফিনের বাসার কাছ পর্যন্ত চলে গেলেন। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে বললেন, আরেফিন ওই তো তোর বাড়ির গেট। এখন যেতে পারবি না?

আরেফিন গাড় নেড়ে সায় দেন। তার কথা বিশ্বাস করে তিনি রাস্তার পাশে তাকে নামিয়ে দেন। আরেফিন গাড়ি থেকে নামার পর বার বার তাকে সতর্ক করেন। খুব সাবধানে যা। দেখিস আবার কোথাও পড়ে যাস না যেন!

আরেফিন টলতে টলতে সামনের দিকে আগান। সওগাত গাড়ি নিয়ে নিজের বাসার উদ্দেশে চলে যান। আরেফিন বেশ কিছুক্ষণ বাড়ির গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। ঘূর্ণিঝড়ের মতোই তার মাথা ঘুরছেন। তিনি আর একা হাঁটতে পারছেন না। বাতাসের বেগের সঙ্গে বেড়েছে মদের তেজ। এমন তেজ আগে কখনো টের পাননি আরেফিন।

গেটে মানুষের উপস্থিতি টের পায় দারোয়ান সুরুজ মিয়া। তিনি উঁকি দিয়ে দেখেন। চোর-ডাকাত নাকি বাসার কেউ তা বোঝার চেষ্টা করে। মনে মনে তিনি ভাবেন, বাসার কে হতে পারে? ইদানিং নিয়মিতভাবে দেরিতে বাসায় ফেরেন আরেফিন সাব। উনি কি না কে জানে!

সরুজ মিয়া সাতপাঁচ ভেবে ঝড় উপেক্ষা করে গেটের দিকে এগিয়ে যায়। আরেফিনকে সে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, স্যার আপনে! এই জরের মইধ্যে কই আছিলেন?

আরেফিন কোনো কথা বলেন না। তিনি সুরুজ মিয়ার কাঁধে হাত দিয়ে গেটের ভেতরে পা বাড়ান। টলতে টলতে লিফট পর্যন্ত গিয়ে বলেন, সুরুজ মিয়া, তোমার আসার দরকার নাই। এখন আমি যেতে পারব।

কথা বলতে গিয়ে বার বার জড়িয়ে যাচ্ছিল। তিনি চেষ্টা করেও ঠিকঠাকভাবে কথাগুলো বলতে পারেননি। সুরুজ মিয়া স্পষ্ট বুঝতে পারে, আরেফিনের টাল অবস্থা।

সুরুজ মিয়া বলল, স্যার যাইতে পারবেন তো!

তুমি চিন্তা কোরো না সুরুজ মিয়া। আমি পারব।

সুরুজ মিয়া আর সামনে আগায়নি। কিন্তু আরেফিনের অবস্থা দেখে সে বেশ উদ্বিগ্ন। সে লিফটের সামনে পায়চারি করে আর ভাবে, স্যারের এমন অবস্থা কেন হইল? স্যারকে তো কোনো দিন মদ খাইতে দেখি নাই! কোনো সমস্যা হইছে নাকি কে জানে। আমার কি উপরে গিয়া দেখা উচিত স্যার যাইতে পারল কি না! না থাক।

সুরুজ মিয়া লিফটের সুইসে চাপ দিল। সে দেখল, লিফট খালি এসেছে। এতেই সে নিশ্চিত হলো আরেফিন ঠিকঠাক মতোই পৌঁছেছে। সুরুজ মিয়া নিজের শোবার ঘরে যায়। বিছানা ঠিকঠাক করে। মনে মনে বলে, ঝড় থামার তো কোনো লক্ষণ দেহি না। এর মইধ্যে ঘুমামু কি কইরা? বিস্টিও নামছে এক্কেরে আকাশ ভাইঙ্গা। কহন থামব কেডা জানে!

সুরুজ মিয়ার চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে। হাই তুলতে তুলতে সে ঘুমাতে যায়। টানা বৃষ্টি আর থেমে থেমে বিদ্যুৎ চমকানির শব্দে তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। ছোট্ট বিছানায় শুয়ে সে কেবল এপাশ ওপাশ করে। কিছুতেই সে চোখের পাতা এক করতে পারে না।

যে মানুষটির চিন্তায় সুরুজ মিয়ার ঘুম হারাম সে মানুষটির দিনদুনিয়ার কোনো খবর নেই। সে বাসার সামনে এসে আছড়ে পড়ে। দরজায় যে কলিং বেল চাপবে সেটাও আর হয়ে ওঠে না। ঘুম নাকি মদের নেশায় চুড় হয়ে থাকা তা বোঝার উপায় নেই। জ্ঞান হারালে যে অবস্থা হয় মানুষের; আরেফিনের সে রকম অবস্থা! কিছুক্ষণ পর গোঙানির শব্দ পাওয়া যায়। বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। তাই আরেফিনের গোঙানির শব্দও কারো কানে যায় না। তিনি পড়ে আছেন মরার মতো। যেন একটা মরা লাশ বাসার সামনে পড়ে আছে।

বনানীর নীল ময়ুরীর ফ্ল্যাট বাড়িতে সবচেয়ে ভদ্র এবং অমায়িক হিসেবে পরিচিত মোহিনীদের পরিবার। সেই পরিবারের কর্তা আজ বাড়ির দরজার ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাকে দেখার কেউ নেই। ধরার কেউ নেই। রাস্তার টোকাইয়ের মতো, ছিন্নমূল মানুষের মতো অবস্থা হয়েছে তার। যেখানে রাত সেখানে কাত।

মানুষ কেন এভাবে নিজেকেই নিজে নিঃশেষ করে দেয়! কেন সে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারে না! কেন সে নিজের অবস্থান বোঝে না! কেন সে ভুল পথে পা বাড়ায়! কেন সে ঈর্ষার আগুনে পোড়ে! কেন সে একটা কাজ করার আগে দশবার ভাবে না? এসব প্রশ্ন প্রশ্নই থেকে যায় আরেফিনের কাছে। তিনি মোহিনীকে বুঝতে ভুল করছেন। তিনি যে তার কাছে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসাটুকু চেয়েছিলেন, তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টো যে মোহিনীকে অবহেলা অবজ্ঞা করেছেন। অথচ মোহিনী কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েও আরেফিনকে ফেলে দেননি। তাকে আগলে রাখার প্রানান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

কথায় আছে না, কপালে না থাকলে পাওয়া জিনিসও হারিয়ে যায়। মোহিনী আরেফিনের জন্য এক হিরের টুকরো ছিল। তাকে একটুখানি যত্ন করলেই আরেফিনের জীবন পাল্টে যেত। তিনি সেটা চিনতে পারেননি। নিজের ভুলে তিনি যে শুধু নিজেকেই নিঃশেষ করছেন তা নয়, তিনি মোহিনীর জীবনকেও দুর্বিসহ করে তুলছেন।

আরেফিন কি শেষ পর্যন্ত তার ভুল শুধরে আবার নতুনভাবে শুরু করতে পারবেন? নাকি এটাই তার জীবনের শেষ পরিণতি? কি হবে তা কেউ জানে না। আরেফিনও না।

চলবে...

এসএ/

আরও পড়ুন

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর আত্রাইয়ে বিষ প্রয়োগ করে দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে সানজিদা (১৬) নামে এক কিশোরীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন নিহত কিশোরীর স্বজনেরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত কিশোরীর মামা ফজলুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে ওই কিশোরীর মা খুশি বেগম, নানা মোসলেম প্রামাণিক, চাচা সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মামা হামিদুল প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্য ফজলুর রহমান বলেন, নিহত কিশোরী সানজিদা আত্রাই উপজেলার আন্দার কোটা গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শামসুল মন্ডলের মেয়ে। সানজিদা উপজেলার ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা কাজের সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে সৗদি আরবে ও আরব আমিরাতে (দুবাই) অবস্থান করছেন। শামসুল মন্ডলের স্ত্রী খুশি বেগম মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বাস করে আসছিলেন। শামসুল বসতবাড়ির বসতভিটার উত্তর পাশে বাবা মোসলেম মন্ডলের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়ে ৪ বছর আগে মাটির বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতেই সানজিদা ও তার মা বসবাস করতো। পরে ওই জায়গায় পাকা বাড়ি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলে শামসুলের বাবা মোসলেম ও ভাই সাজিম মন্ডল বাঁধ সাজে। সানজিদার দাদা শামসুলকে বসতভিটার উত্তর পাশে পাকা বাড়ি না করে দক্ষিণ পাশে নীচু জায়গায় বাড়ি করার জন্য বলে আসছিল। এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। সানজিদার বাবা ও ভাই বিদেশে থাকায় বাড়ি করা নিয়ে বিরোধের জেরে সানজিদা ও তার মায়ের সঙ্গে তাঁর দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিমের প্রায় পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। এই কলহের জেরে দাদা মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল হত্যার উদ্দেশ্যে গত ৯ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে সানজিদা বলে গেছে তার দাদা ও চাচা তাঁর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করেছে। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করা আছে। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল পলাতক রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ এপ্রিল সকালে সানজিদা প্রাইভেট পড়ার জন্য ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। প্রাইভেট পড়ে সে বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে আসে। এ সময় সাংসারিক কাজে সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সানজিদার দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিম সানজিদার ঘরের ভেতরে যায়। দাদা মোসলেম সানজিদার পাশে বসে একপর্যায়ে তাকে জাপটে ধরে এবং চাচা সাজিম পকেট থেকে বিষের ইনজেকশন বের করে তার বাম হাতের শিরায় জোর ইনজেকশন প্রয়োগ করে। তারা সানজিদাকে হুমকি দিয়ে বলে এ কথা কাউকে বললে তার মতো বাবা ও ভাইকেও হত্যা করবে। সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়িতে এসে মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মেয়েকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওই দিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সানজিদার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মোসলেম ও সাজিমের ফাঁসি দাবি করা হয়।

সাজিম মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, ‘যে মেয়েটি মারা গেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। সেখানেই নিহত কিশোরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম