শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

তুমি মায়ের কাছে বস বাবা। আমাকে শরণার্থী কার্ড দাও। আমি ঘুরে দেখে আসি কোথাও কিছু খাবার পাই কিনা। এই যে ট্রানজিস্টারটা রেখে গেলাম। নিউজ শোন। নতুন কিছু খবর থাকলে আমাকে জানিও।

– আচ্ছা যা, তাড়াতাড়ি ঘুরে আয়।

– মাকে ঘুম থেকে জাগিওনা বাবা। মা জেগে উঠলে তখন কথা বলবে। আনজুমও যেন মাকে ডিস্টার্ব না করে।

– ঠিক আছে, আমি তাঁবুর বাইরে এখানে বসে থাকছি। তুই খাবার নিয়ে ফিরে আয়, এই দোয়া করি।

অঞ্জন হনহনিয়ে হেঁটে যায়। ফুটে ওঠে নিজের ডাক্তারি সত্তা। চারদিকে তাকায়। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে কেউ চিকিৎসার জন্য ক্যাম্পে আনেনিতো? যাক, খুঁজতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটা হোক ওর যুদ্ধ। যশোর রোডে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় মারুফ এগিয়ে আসছে ওর দিকে। সীমান্তে পরিচয় হওয়ার পর থেকে মারুফকে ওর পছন্দ হয়েছে। বন্ধুত্বের অনাবিল আঁচ আছে ওর মধ্যে।

– কোথায় যাচ্ছেন অঞ্জন ভাই?

– যশোর রোডেই আছি। দূরে কোথাও যাব না। বাবা-মা-বোন ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছে।

– ও তাই। চাল-ডাল পাননি?

– না, পাইনি।

– কোথা থেকে নিতে হবে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাই।

– চলো, চলো। থ্যাঙ্ক ইউ মারুফ।

মারুফ হেসে অঞ্জনের হাত ধরে। আজ যশোর রোডে কোনো গাড়ি নেই। হাত ধরে নিয়ে যায় মারুফ। একজন ডাক্তার বন্ধুর হাত ছেড়ে দেয় না। ভারতীয় বন্ধুদের স্টক থেকে চাল-ডালসহ সবকিছু নিয়ে ফিরে আসে দুজনে। রান্নার জন্য দুটো মাটির হাঁড়ি সংগ্রহ করে অঞ্জন। হঠাৎ মনে হয় মাতো বেশকিছু হাঁড়ি, প্লেট, গ্লাস এনেছে।

মারুফ বলে, চলেন আমার তাঁবুতে। ভাত-তরকারি রান্না আছে।

– তাই! তাহলেতো খুব ভালো। তাবুতে গিয়ে মা-বোনকে ভাত খাওয়াব। মা পরে রান্না করবে।

দুই মাটির হাঁড়িতে অঞ্জনকে ভাত-তরকারি দেয় মারুফ।

– সব দিয়ে দিলে যে?

– এখনই আবার রান্না হবে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর বউ বলে, আমরা এভাবে সহযোগিতা করতে ভালোবাসি।

– তাহলে যাই। আমি থাকলে রান্না হতে দেরি হবে।

– আবার দেখা হবে অঞ্জন ভাই।

– কারো শরীর খারাপ হলে আমাকে খবর দিও।

– হ্যাঁ, দিবো। আপনি এখন আমাদের বড় ভরসার মানুষ।

অঞ্জন হেসে বেরিয়ে আসে। বেশ কিছুদূর হেঁটে আসার পরে দেখতে পায় একজন বৃদ্ধ গাছের নিচে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই। অঞ্জনের মাথা ঝমঝমিয়ে উঠে। পাশে বসে নাকে হাত দিলে বুঝতে পারে বেঁচে নেই। নিজের হাতের জিনিসপত্র বাড়িতে রেখে আবার আসবে এই চিন্তায় দ্রুত হেঁটে তাঁবুতে যায়। বাবার হাতে খাবার আর চাল-ডাল দিয়ে বলে, মা কি উঠেছে?

– হ্যাঁরে উঠেছি বাবা। আয় ভেতরে আয়। খালিদা ছেলের গায়ে হাত রেখে বলে, বস।

– না মা, এখন বসবনা। রাস্তার ধারে দৌড়ে যাব। একজন মানুষ পড়ে আছে সেখানে। দেখব কি হয়েছে। তোমরা ভাত খাও।

তোজাম্মেল তাঁবুর ভেতর মাথা ঢুকিয়ে বলে, আমি যাব তোর সঙ্গে?

– না, বাবা। তুমি ভাত খাও। আমি একটু পরে ফিরে আসছি।

তাঁবুর ভেতর থেকে বেরিয়ে ও দ্রুতপায়ে হাঁটে। চারদিকে তাকালে বুকের ভেতর অমিয়ার ছবি ভেসে ওঠে। ভারতে আসবে একথা ওকে বলা হয়নি। ও কোথায় আছে তাও জানেনা। অঞ্জন নিজেকে ধমকায়। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে ও কেন অমিয়ার কথা ভাবছে। গাছতলায় পৌঁছালে একজন মৃত মানুষকে দেখবে। ও নিজের ভেতরের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে ছুটে এসে বসে পড়ে বৃদ্ধের কাছে। ভাবতে থাকে, তার সঙ্গে কেউ কি শরণার্থী শিবিরে আসেনি? কেন কেউ খোঁজ করছে না তার? ও একটুপরে উঠে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চারদিকের লোকজনকে হাত ঈশারায় ডাকে। মানুষেরা এগিয়ে আসে।

– কি হয়েছে?

সমবেত কন্ঠের জিজ্ঞাসা।

– আমি ডাক্তার। যশোর রোডের শরণার্থী। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে চেক করলাম। উনি মারা গিয়েছেন।

চারপাশের দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন জিজ্ঞেস করে, ওনার কি কেউ নেই?

– আমিতো জানিনা।

– তাহলে আমরা কয়েকজন যশোর রোডের এদিক-ওদিক গিয়ে খোঁজ করি যে ওনার কেউ আছে কিনা। একজন বুড়ো মানুষ ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারবনা। ওনার নামওতো জানিনা।

অঞ্জন মাথা নেড়ে বলে, গিয়ে দেখেন। জিজ্ঞেস করেন বিভিন্নজনকে। তারা এসে ওনাকে দেখুক। এই খবর পেয়ে লোক চলাচলে সরগরম হয়ে ওঠে যশোর রোড। ছুটতে ছুটতে আসে অনেক মানুষ। কেউ তাকে চিনতে পারেনা। মারুফ বলে, তিনি হয়তো একাই এসেছেন। হাঁটতে হাঁটতে এসে এখানে হয়তো পড়ে গেছেন। কিংবা ওনার কেউ কলকাতায় যেতে পারে। ওনাকে এখানে থাকতে বলে গেছে।

সবাই মিলে জোরে জোরে বলে, আমরা এখন কি করব?

মারুফ বলে, ওনাকে এখানে ঢেকে রেখে দেই আমরা। কেউ যদি খোঁজ করতে আসে, সেজন্য। না আসলে কাল সকালে ওখানে কবর দেয়ার ব্যবস্থা করব।

– ভালো সিদ্ধান্ত। আজকেতো বিকেল হয়ে গেছে। একটুপরে রাত নামবে। অঞ্জন আপনি এখানে অপেক্ষা করেন। আমি একটা মাদুর জোগাড় করার ব্যবস্থা করছি। চলেন সবাই।
মারুফ কথা বলে এগিয়ে যায়। একজন মৃত মানুষকে আগলে রেখে বসে থাকে অঞ্জন। চারদিকে তাকায়। কেউ এখানে আসছে কিনা দেখতে চায়।

কিছুক্ষণ পর দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। যশোর রোডের সীমান্তের দিক থেকে নয়, উল্টো দিক থেকে আসছে। ওরা হয়তো দূরে কোথাও গিয়েছিল। ওদের দৌড়ে আসার গতি বিস্মিত করে অঞ্জনকে। ওর মনে হয় ওরা বাবাকে খুঁজতে আসছে। নাকি অন্য কোথাও যাবে? অল্পক্ষণে ওরা পৌঁছে যায় ওদের কাছে। দাঁড়িয়ে থেকে চিৎকার করে, বাবা, বাবা–

অঞ্জন নিজেও উঠে দাঁড়িয়ে বলে, তোমাদের বাবা মারা গেছেন। আমি ওনাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ওনাকে আগলে রেখে বসে আছি।

ওরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। চারদিক থেকে অন্যরা এসে জড়ো হয়।

বড় ছেলে সুরঞ্জন কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমরা বাবার জন্য খাবার খুঁজতে গিয়েছিলাম। অঞ্জন বলে, আমি ডাক্তার। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে কাছে এসে চেক করে দেখলাম উনি মারা গেছেন।

তখন মাদুর নিয়ে মারুফ আসে। মাদুর কাছে রেখে ওদের পাশে বসে পড়ে। অঞ্জন বলে, এরা এনার ছেলেমেয়ে।

– আমার বাবার নাম নিরঞ্জন বসু। আমি সুরঞ্জন, ও আমার ছোটভাই দেবপ্রিয়, আর আমাদের ছোটবোন মধুমালা। আমি পড়ালেখা শেষ করেছি। ওরা দুজন কলেজে পড়ে।

কথা শেষ করে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে তিনজন। মধুমালা বাবার গায়ের ওপর গড়িয়ে পড়ে বাবা, বাবা বলে চিৎকার করে। দুই ভাই ওকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয়। সুরঞ্জন মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, এখন আর কাঁদিসনা বোন। বাবাকেতো আমরা চিতায় তুলতে পারবনা। কি করব ভাবতে হবে। অঞ্জনদা আপনি কি বলেন?

– আমি কিছু বলতে পারবনা। এমন মৃত্যুতো আমি দেখিনি। দেশে হলে আমরা শ্মশানে নিয়ে যেতাম। বিদেশের মাটিতে আমরা কি করব? এটাতো একটা রাস্তা এখানে শ্মশান ঘাট নাই।
মারুফ এতক্ষণ চুপ করেছিল। অঞ্জনের কথা শেষ হলে বলে, আমার মাথায় একটা চিন্তা এসেছে।

মধুমালা কাঁদতে কাঁদতে বলে, কি চিন্তা দাদা?

– এখান থেকেতো আপনারা বাবাকে নিয়ে কোথায় যেতে পারবেন না।

– হ্যাঁ, তা পারবনা। আপনার চিন্তার কথা বলেন?

– আমি ভাবছি ওনাকে সামনের নদীতে ডুবিয়ে দেব। তাঁকেতো চিতায় ওঠানো হবেনা, সেজন্য নদীতে ডুবিয়ে দেব। তিনি জলের মধ্যে ডুবে থেকে নদীর মাটিতে তলিয়ে যাবেন।

সুরঞ্জন কান্না থামিয়ে বলে, আপনি ভালো চিন্তা করেছেন দাদা। চলেন আমরা বাবাকে নিয়ে নদীর ধারে যাই। সূর্য এখনো ডোবেনি। একটু পরে ডুবে যাবে।

– আমার কাছে একটি মাদুর আছে। ওনাকে মাদুরের ওপরে উঠিয়ে আমরা সবাই মিলে ধরে নিয়ে যাব।

– ঠিক, ঠিক কথা মারুফ। মাদুরটা বিছিয়ে দাও। ওনাকে মাদুরের ওপর ওঠাব তুমি আর আমি।

অঞ্জন তিন ভাইবোনকে বলে, তোমাদের ধরতে হবেনা। আমরা দুজনেই পারব।

দুজনে মাথা আর পা ধরে নিরঞ্জন বাবুকে মাদুরের ওপর ওঠায়। তখন সবাই মিলে মাদুরের চারপাশ ধরে রাস্তার উল্টোদিকে নদীর ধারে যায়। নদীর ধারে মাদুরের ওপর রেখে দিয়ে তিন ভাইবোন বাবার মরদেহ নিয়ে প্রার্থনা করে। নদীর স্রোতের কুলকুল ধ্বনি কান্নার ধ্বনি হয়ে যায় সবার কাছে। বাবাকে চিতায় ওঠানো হলোনা এজন্য তিন ভাইবোন আবার কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে তিনজনই মরদেহ নদীতে নামায়। স্রোতের টানে ডুবে যায় লাশ। সবাই জানে কিছুদূর গিয়ে ভেসে উঠবে। তারপর আবার তলিয়ে যাবে।

মধুমালা বলে, আমরা কি নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যাব। দেখব কতদূর গিয়ে ভেসে উঠবে বাবা?
অঞ্জন বলে, এটা ঠিক হবে না। একটুপরই অন্ধকার হয়ে যাবে চারদিক। আমাদের যার যার তাঁবুতে ফিরে যাওয়া উচিত।

আবার কান্নার তোলপাড় ওঠে। মধুমালা নদীর পানি দিয়ে নিজের মুখ ধোয়। অন্যরাও মুখে পানি দেয়। বলে, এই জলে ভেসে যাও বাবা। এই জল বাবার ভালোবাসা। অঞ্জন সুরঞ্জনের মাথায় হাত রেখে বলে, ঠিক আছে তোমরা এখানে কিছুক্ষণ হাত রাখ। আমরা যাচ্ছি।

ওরা কথা বলেনা। অঞ্জন আর মারুফ চলে আসে। একটুখানি এসে, আবার নদীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়ায়। সূর্যের শেষ অপরূপ আলোর দিকে তাকিয়ে অঞ্জনের বুকে স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে। ভাবে, এই আলোতে জ্বলজ্বল করছে বঙ্গবন্ধুর চেহারা। অন্যদিকে একজন মানুষ যুদ্ধের শরণার্থী হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অঞ্জন নিজেকে বিড়বিড়িয়ে বলে, মৃত্যু ও স্বাধীনতা একই আলোর ছায়া। নদীর বুকে এই ছায়া শরণার্থী শিবিরে সবখানে স্বাধীনতার আলো ফেলে।

অঞ্জন হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসে নিজের তাবুতে। মারুফ চলে যায় ওর তাঁবুতে। দুজনে হাত ধরে বলে, মুক্তিযুদ্ধই আমাদের শেষ ঠিকানা।

বাতাসে উড়ে যায় শব্দ মুক্তিযুদ্ধ। শরণার্থী শিবিরে ছেয়ে যায় শব্দের বাতাস।

চলবে....

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ