বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ | ৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

জান্নাত লাবণ্য

ফারুক মঈনউদ্দীনের ভ্রমণপিয়াসী মনের প্রতিচ্ছবি

একজন  ভ্রমণপিয়াসী মানসিকতার মানুষ ছাড়া ভ্রমণকাহিনি লেখা সম্ভব নয়। কল্পনা করে আর যা-ই হোক, ভ্রমণকাহিনি লেখাও সম্ভব নয়। কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক ফারুক মঈনউদ্দীনের ভ্রমণগ্রন্থ পাঠ করলে সাহিত্যের এ ধারা সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ও আকর্ষণীয় ধারণা যায়, বোঝা যায় ভ্রমণকাহিনি বিশ্বসাহিত্যেরই গুরুত্বপূর্ণ শাখা।

‘সুদূরের অদূর দুয়ার’ ফারুক মঈনউদ্দীন রচিত সপ্তম ভ্রমণগ্রন্থ। এ গ্রন্থে লেখক মিয়ানমার, শ্রীলংকা, হংকং এবং অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি ভ্রমণকাহিনি রচনার ক্ষেত্রে সবকিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করতে ভালোবাসেন। এ গ্রন্থের প্রথম পর্ব ‘বার্মা মুলুক মান্দালয়ে’ শুরু হয়েছে মান্দালয় বিমানবন্দরে অবতরণের গল্প থেকে। এরপর লেখক পাঠককে নিয়ে ঢুকে গেছেন মান্দালয়ের পথে, দর্শনীয় স্থানে, ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে।

ফারুক মঈনউদ্দিন যা দেখেন তার বর্তমান-অতীত সব তথ্য প্রকাশে তৎপর থাকেন। মান্দালয় শহরের সরলরেখার মতো সড়ক, শহরের বর্ণনা, মান্দালয় রাজধানী প্রতিষ্ঠার পেছনে গৌতম বুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে জনশ্রুতি, ইরাবতী নদীতে নৌ-বিহার, প্যাগোডা দর্শন, উবেইন সেতু ভ্রমণ, পুতুল নাচ দর্শনের কথা দিয়ে এই অংশটি শেষ হয়েছে। এর মাঝেই লেখক আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন সেখানকার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে বিভিন্ন কথা। লেখক এমন সব তথ্য পেশ করেছেন যা সাধারণ ভ্রমণকারীদের হয়তো জানা সম্ভব নাও হতে পারে।

এখানে শাসকদলের মদদপুষ্ট ধনকুবেরদের ক্রোনি বলে ডাকা হয়। বার্মিজ মেয়েরা থানাকা নামক গাছের কান্ড পানিতে ভিজিয়ে পাথরে ঘষে গুড়ো দিয়ে তৈরি মন্ড মুখে প্রলেপ দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। রয়্যাল প্যালেসে ঘুরতে গিয়ে লেখক বলে ফেলেন সিংহাসন দখলের ইতিহাস, ইরাবতী নদীর উৎপত্তি, প্যাগোডা তৈরি ইতিহাস, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ণনা,বর্মি নারীদের আচরণ ইত্যাদি বিষয় লেখক গল্প বলার মতো করে উপস্থাপন করেছেন।

দ্বিতীয় পর্বের নাম ‘মঠের সোনালি শহর বাগান’। এখানে উঠে এসেছে ঈদুল আজহার দিনের চেহারা, গ্রামের বর্ণনা, সাধারণ মানুষের জীবন যাপনের ছবি। সেখানকার খাবারের বিষয়েও জানা যায়। ভিন্নধর্মী খাবার যেমন চা পাতার সালাদের রেসিপি বলা হয়েছে। যা ‘লাপেতো’ নামে পরিচিত। ফারুক মঈনউদ্দীন কোথাও ভ্রমণে গেলে সবসময় সেখানকার ইতিহাস ও তথ্য জানতে যে ইন্টারনেটের সাহায্য নেন এবং বেশ হোমওয়ার্ক করেন, তা এখানে উল্লেখ করেছেন। এ অংশে বর্মি পোশাক, হস্তশিল্প বিশেষ করে বাঁশের তৈরি জিনিস পত্রের বর্ণনা পাওয়া যায় বিস্তারিতভাবে।

তৃতীয় পর্বের নাম ‘রঙ্গিলা রেঙ্গুন’। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত হওয়ার পর থেকে  বার্মার শাসন, শোষণ, প্রশাসক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের অবয়ব লেখক এখানে বর্ণনা করেছেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সাথে রাজনৈতিক অবস্থার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য  গুলো খুঁজেছেন। যেমন, ১৯৬২ সালে রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনা মোতায়েন করে হামলা চালিয়ে ছাত্রদের দমন করা হয়। তখন দুই বছর বার্মার সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক চক্র বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে নিরীহ ছাত্রদের। তারপর মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সব বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রেখে বিশ্বকে দেখাতে চেষ্টা করে যে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বাংলাদেশের সামরিক শাসকেরা অসাংবিধানিক ক্ষমতা দখল করার পর সেটাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দল গঠন করে। নে উইনও সেটাই করেছিলেন। তবে তার পদক্ষেপটা ছিল রাডিক্যাল। বাংলাদেশের অবৈধ শাসকেরা প্রভাবশালী রাষ্ট্রের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। নে উইন সেখানে কারও তোয়াক্কা করেননি। দেশকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার দুঃসাহস দেখিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিস্তৃত বর্ণনার পাশাপাশি লেখক এ অংশে চট্টগ্রামের সাথে বার্মার সংস্কৃতি, ভাষার মিল বন্ধন, শোয়েডাগন প্যাগোডার উৎপত্তি ও বিকাশ বিষয়ে লিখেছেন। সর্বশেষ মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের সমাধি স্থানে ভ্রমণ করার বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক পাঠককে জানিয়ে দেন মোগল শাসন ব্যবস্থার শেষ সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাস।

তারপর হংকং ভ্রমণের ইতিবৃত্ত লিখেছেন লেখক। এই পর্বের নাম ‘হংকংয়ের গ্রামে তিন হাউ পরব’। হংকংয়ের রেলস্টেশনে চিত্র, সাধারণ মফস্বল শহর, সরু রাস্তা ঘাট, অলিগলি, বাড়িঘরের বর্ণনা দিতে দিতেই লেখক একাদশ শতাব্দীর চীন থেকে আসা তাং গোত্রের আগমন, গ্রাম গঠন, হংকংয়ের উপর ব্রিটিশ শাসন, চীন থেকে শরনার্থী আগমন ইত্যাদি সহ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের গল্প করতে করতে তুলে ধরেন তিন হাউ পরবের মিছিল দেখার অভিজ্ঞতা।

তার পরের পর্বের নাম ‘হংকংয়ের গ্রামের ইচ্ছাপূরণ বৃক্ষ’। বিখ্যাত লাম সুয়েন উইশিং ট্রি দেখার বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখক অবহিত করেন সেখানে যাতায়াতের যানবাহন,  হংকংয়ের মফস্বল শহরের স্বরূপ, সেখানকার মানুষের আচার-আচরণ, তিন হাউ মন্দিরের বিবরণের চিত্র।

ইচ্ছা পূরণ বৃক্ষের উদ্ভব নিয়ে তৈরি বিভিন্ন লোককথাও লেখক গল্পচ্ছলে পাঠককে জানিয়ে দেন।  পূর্বে রীতি ছিল ইচ্ছা পূরণের মানত করার জন্য মন্দির থেকে ছাপানো কাগজে নাম, জন্ম তারিখ আর ইচ্ছের কথা লিখতে হয়। তারপর কমলার সাথে কাগজটি বেঁধে গাছের দিকে ছুঁড়ে মারতে হবে। ছুঁড়ে মারা কাগজটা কমলাসহ গাছের ডালে আঁটকে গেলে বুঝতে হবে ইচ্ছা পূরণ হবে। কিন্তু একবার চীনা নববর্ষে মানুষ এতো কমলা ছুড়ে মেরেছিল, যে গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে এবং এক বৃদ্ধ ও এক কিশোর আহত হয়। এরপর এই রীতি বন্ধ করা হয়। লেখক দেখতে পান, একটি নোটিশ বোর্ডে সারি সারি হুক গেঁথে দেওয়া, সেখানেই ইচ্ছার কাগজ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। লেখক ‘ জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এই ইচ্ছা পোষণ করেন। এখানেই  শেষ হয় লেখকের হংকং ভ্রমণের ইতিবৃত্ত।

পরের পর্বের নাম ‘ভিক্টোরিয়ার স্বর্ণখনির সন্ধানে’। অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের গল্প শুরু হয়েছে, মেলবোর্ন থেকে প্রায় দেড়শ মাইল দূরে বালারাত শহরের স্বর্ণখনি সোভরেনের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থার বর্ণনা দিয়ে। সেই সাথে স্বর্ণ আহরণকে ঘিরে জনবসতির রাজনীতি ও প্রেক্ষিত, খনির ভিতরে প্রবেশের অভিজ্ঞতা, শ্রমিক পল্লী অবস্থা,  খনিতে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় নিহত মানুষের তথ্য ইত্যাদি বিষয় লেখক চমৎকারভাবে প্রকাশ করেছেন।

ফারুক মঈনউদ্দীনের লেখনীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি ভ্রমণ করা স্থানটি সম্পর্কে অন্য বিখ্যাত মানুষদের রচনার উদ্ধৃতি দিয়ে থাকেন।  এই অংশে তিনি ব্রিটিশ লেখিকা এলেন ক্লাসির (১৮৩০-১৯০১) অভিজ্ঞতালব্ধ ‘অ্যা লেডিজ ভিজিট টু দ্য গোল্ড ডিগিংস অভ অস্ট্রেলিয়া ইন’, জন শেরার ‘ গোল্ড ফাইন্ডার অভ অস্ট্রেলিয়া’ বইয়ের উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন। বার্মা মুলুক মান্দালয়ে লেখক ইংরেজ কবি রুডইয়ার্ড কিপলিং এর ১৮৯০ সালে কলকাতা থেকে বার্মা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা ‘মান্দালয়’ নামক কবিতাটি তুলে ধরেছেন। ‘মঠের সোনালি শহর বাগান’ অংশে লেখক জুডিথ গ্রেগরি স্মিথের ভ্রমণস্মৃতি গ্রন্থ  ‘মিয়ানমার: অ্যা মেমোয়ের অভ লস অ্যন্ড রিকভারি’ থেকে তথ্য বর্ণনা করেছেন।

ফারুক মঈনউদ্দীন নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানে বিখ্যাত মানুষদের অভিজ্ঞতার তথ্যও তুলে ধরেন। যেমন, তিমির দর্শনের কথা বলতে গিয়ে লেখক উল্লেখ করেছেন ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসে শরৎচন্দ্র মূল চরিত্রের জবানিতে লিখেছিলেন, ‘যাহাকে সমুদ্রপীড়া বলে, সে উপসর্গটা আমার বোধ করি ছেলেবেলায় নৌকার উপরেই কাটিয়া গিয়াছিল; সুতরাং বমি করার দায়টা আমি একেবারেই এড়াইয়া গিয়াছিলাম।’

‘বার্মা মুলুক মান্দালয়ে’ অংশতেও লেখক শরৎচন্দ্রের রেঙ্গুন রেলওয়েতে অস্থায়ী চাকরি লাভের কথা তুলে ধরেছেন। সেই চাকরি চলে গেলে শরৎচন্দ্র  বার্মার পাবলিক ওয়ার্কস অ্যাকাউন্ট অফিসে নিয়োগ পান। এই দপ্তরে তিনি কাজ করেছিলেন প্রায় দশ বছর। বার্মা প্রবাসের সময়ই ‘রামের সুমতি’ সহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য গল্প উপন্যাস রচনা করেছিলেন।

স্থানীয় মানুষের পোশাকের চিত্র প্রকাশেও লেখক সর্বদা তৎপর। পাশাপাশি ফারুক মঈনউদ্দীন কোন একটি স্থানের বর্ণনা দিলে একই ধরনের অন্য স্থানের তথ্য ও তুলনা হাজির করেন। শ্রীলঙ্কার কান্ডিতে অবস্থিত হাতির অনাথালয় বর্ণনা করার পাশাপাশি লেখক মাউন্ট কেনিয়া অ্যানিম্যাল অরফানেজের তুলনামূলক আলোকপাত করেছেন।

ফারুক মঈনউদ্দীনের লেখনীর ভাষা খুবই সহজ, সরস আর গতিময়। ছোটগল্প লেখার অভিজ্ঞতা তিনি ভ্রমণকাহিনিতে সফলভাবে প্রয়োগ করেছেন। তিনি ভ্রমণকাহিনি শুরু করেন একদম গন্তব্যে রওনা দেওয়ার বর্ণনা থেকে। তারপর যাওয়ার রাস্তা, থাকার স্থান, পরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ, খাবার, আড্ডা, স্থানের বিবিধ  তথ্য  ও ইতিহাস এবং স্থানটির  বিশ্লেষণী বর্ণনা দিয়ে লেখা শেষ  করেন। তার রচনার সার্থকতা এটাই যে, কোন স্থান বিষয়ে পাঠকের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে তাঁর রচনা। পাঠকের মনে একঘেয়েমি দূর করতে সক্ষম হয় তাঁর রসবোধ। এভাবেই বাংলা ভ্রমণ-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে যাবেন লেখক, শুভকামনা রইলো।

 

সুদুরের অদূর দুয়ার
লেখক: ফারুক মঈনউদ্দীন
প্রকাশক: সময় প্রকাশন
দাম: ৩০০ টাকা

Header Ad
Header Ad

৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান

ব্রিফিংয়ে কথা বলছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের সাধারণ ক্ষমা চাওয়া এবং স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশের সম্পদ ফেরতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় সম্মত হয়েছে ইসলামাবাদ। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক (এফওসি) শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দু’দেশই পারস্পরিক সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে তারা অভ্যন্তরীণ আলোচনা চালিয়ে যাবে।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে পাকিস্তানে রেখে যাওয়া বাংলাদেশের সম্পদের পরিমাণ হিসেবে আনুমানিক ৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা। এ বিষয়ে উভয় দেশ আলোচনা শুরু করতে একমত হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হবে। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এ যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালুর বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে শুধু রাজনৈতিক ইস্যুই নয়, আলোচনা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, পরিবহন ও যোগাযোগ উন্নয়ন, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসনসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয় এখনও অনিষ্পন্ন, সেগুলো দ্রুত সমাধানের তাগিদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। নিয়মিত যোগাযোগ থাকলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।”

বৈঠকে জানানো হয়, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার চলতি মাসের ২৭ ও ২৮ এপ্রিল ঢাকা সফর করবেন। তখন দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আরও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে একইদিনে আমেরিকার একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও বৈঠক করেন পররাষ্ট্র সচিব। সেখানে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আমেরিকান বাজারে উচ্চ শুল্ক আরোপ নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটে মার্কিন মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।

এছাড়াও সার্ক (দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) সচল করা, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম

স্ত্রী রিয়া মনির সঙ্গে হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও স্বঘোষিত অভিনয়শিল্পী হিরো আলম স্ত্রী রিয়া মনির সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই স্ত্রী রিয়া মনির সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। তবে সর্বশেষ তার পালক পিতার মৃত্যুর সময় রিয়ার অনুপস্থিতি এবং উদাসীনতা তাকে ‘মানসিকভাবে ভেঙে দেয়’। এরই প্রেক্ষিতে তিনি রিয়া মনিকে ‘বয়কট’ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সর্বশেষ ‘তালাক’ দেওয়ার ঘোষণা দেন।

স্ত্রী রিয়া মনির সঙ্গে হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত

হিরো আলম বলেন, “আমি আগেও রিয়াকে অনেকবার মাফ করেছি। কিন্তু এবার সে সীমা ছাড়িয়েছে। আমার বাবা হাসপাতালে ছিলেন, অথচ সে একবারও খোঁজ নেয়নি। আমি তাকে বয়কট করেছি মানে, এখন থেকে কোনো সম্পর্ক আর থাকবে না। আমি ঢাকা গিয়ে তার থেকে আলাদা হয়ে যাব। সে যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করছে, সেগুলোর প্রমাণ দিতে হবে।”

এই সময় তিনি পবিত্র কোরআন শরীফ হাতে তুলে নিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বলেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি।

প্রসঙ্গত, হিরো আলমের পালিত পিতা আবদুর রাজ্জাক গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে মারা যান। শৈশবে হিরো আলমকে দত্তক নিয়েছিলেন রাজ্জাক। মৃত্যুর পর পরদিন বগুড়ায় তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। হিরো আলম ফেসবুকে লেখেন, “রিয়া মনিকে বয়কট করলাম। কারণ, আমার বাবা হসপিটালে ছিলেন। অথচ রিয়ার পরিবারের কেউ তাকে দেখতে আসেনি।”

অন্যদিকে, হিরো আলমের এসব মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিয়া মনি বলেন, “মানসিকভাবে তিনি (হিরো আলম) ভালো নেই, কারণ তার বাবা মারা গেছেন। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।”

উল্লেখ্য, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েই রিয়া মনির প্রেমে পড়েন হিরো আলম। এরপর তাকে বিয়ে করেন তিনি। তবে এই বিয়ের জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মডেল নুসরাত জাহান তাকে ডিভোর্স দেন। হিরো আলমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন সাবিহা আক্তার সুমি, যার ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

রিয়া মনির সঙ্গে বিয়ের পর একাধিক গানের ভিডিও, নাটক ও অন্যান্য কন্টেন্টে একসঙ্গে কাজ করেছেন হিরো আলম। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ঘিরে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। এখন তা এসে ঠেকেছে তালাকের ঘোষণা পর্যন্ত।

Header Ad
Header Ad

সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে এবার বড় পদক্ষেপ নিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছে তার একটি বাড়ি ও ১৫ শতক জমি। পাশাপাশি অবরুদ্ধ করা হয়েছে তার এবং সংশ্লিষ্টদের ২৯টি ব্যাংক হিসাব।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থার জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।

দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কুমিল্লার মনোহরপুর এলাকায় অবস্থিত জব্দ হওয়া বাড়িটির নির্মাণে আনুমানিক ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার ১৫ শতক জমির মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

দুদক দাবি করেছে, আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বর্তমানে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন এবং তিনি তার স্থাবর সম্পদ বিক্রির পাশাপাশি ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এমন প্রেক্ষাপটে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন জানানো হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব
অবশেষে আসছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন-৫’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ? জেনে নিন ১০টি কার্যকর সমাধান
সংস্কারের নাম উচ্চারণের আগেই খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
১ মে থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা, ১০ দফা দাবি পোল্ট্রি খামারিদের
গাজায় এক মাসে গৃহহীন প্রায় ৫ লাখ মানুষ: জাতিসংঘ
বাংলাদেশি জন্মসনদ পাচ্ছেন কানাডিয়ান তারকা সামিত সোম, মাঠে অভিষেক জুনে!
পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলায় আলোচিত আরাভ খানসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন
সাকিবের নির্বাচন কভারের ছবি ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
ঋণ পরিশোধে সময় দিল রাশিয়া, ১৬ কোটি ডলার জরিমানা মওকুফ
হার্ভার্ড একটি তামাশার জায়গা, এটি ঘৃণা ও মূর্খতা শেখায়: ট্রাম্প
ঢাকা মহানগর আ.লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলে ধানক্ষেতে মিললো প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ