একা জীবনযাপন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো!
একা থাক? কী করে থাক একা? তোমার খারাপ লাগে না? তুমি তো মানসিক রোগী হয়ে যাবে- এমন নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় একা থাকা নারী অথবা পুরুষকে। প্রচলিত সমাজে একজন মানুষ বিয়ে না করে, একা থাকবে এটি মেনে নিতে পারেন না কেউই। হোক সে পরিবারের লোকজন, অত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুবান্ধব। অবিবাহিত বা তালাকপ্রাপ্ত যেই হোক না, বিয়ে না করা পর্যন্ত তার পেছনে লেগেই থাকে স্বজন-বন্ধুরা।
সঙ্গী ছাড়া জীবন কাটানো প্রায় দুঃসহ এবং একা থাকলে মানুষের হতাশা বাড়ে ও কর্মস্পৃহা কমে যায় বলেও দাবি করেন অনেকে। তবে এ ধারণা ভুল বলে জানা গেছে কয়েকটি গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, যারা একা থাকেন তারাই বরং বেশি ভালোভাবে বাঁচেন। জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তারা অনেক বেশি স্বাধীন থাকতে পারেন। এমনকি একা থাকার কারণে তারা স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সুবিধাও ভোগ করেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
* আমেরিকান ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, যারা একা থাকেন, তারা সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে বেশি দক্ষ হন। এদের সঙ্গে বন্ধুদের সম্পর্কও ভালো থাকে।
* বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্ধুদের সম্পর্ক বজায় রাখার ফলে এদের মানসিক অবস্থাও ভালো থাকে। সাংসারিক নানা জটে পড়তে হয় না, নিজেদের মনের মতো করে জীবনযাপন করতে পারেন বলে মানসিক চাপ থেকে এরা মুক্ত থাকেন।
* এ ছাড়া তাদের নেটওয়ার্কও ভালো। যারা সঙ্গী ছাড়া আছেন তারা নিজের কাজ ও পরিবারের বিষয়ে অন্যদের চেয়ে বেশি যত্নশীল ও মনোযোগী।
* একক জীবনে চাপ কম থাকে। এটি কেবল সম্পর্কের কারণে নয়, আর্থিকভাবে তারা চাপমুক্ত থাকেন বিবাহিতদের তুলনায়। অবিবাহিত নিজের জন্য ও পরিবারের জন্য উপার্জন করেন।
* ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, একক ব্যক্তিদের জিমে যোগদানের হার সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে পুরুষরা যখন অবিবাহিত থাকেন, তখন তারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতন থাকেন। এতে কার্ডিয়াক সমস্যা, স্থূলতা ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত থাকেন।
* ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ঘুমের জন্য ঘরের পরিবেশও স্বস্তিদায়ক হওয়া উচিত। যদিও বিবাহিতরা সঙ্গীর সাথে বিছানা ভাগাভাগি করে নেন, তবে অনেকেই পাশে কেউ থাকলে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না। তবে এদিক দিয়ে সিঙ্গেলরা নিশ্চিন্তে থাকেন। তারা নিশ্চিন্তে গভীরভাবে ঘুমাতে পারেন।
* আপনি যখন কোনো সম্পর্কের মধ্যে থাকেন, তখন বারবার সঙ্গীর খোঁজ নেওয়া, তার জন্য সময় বের করার চাপ থাকে। শুধু তাই নয়, যুগল জীবনে সঙ্গীর ভালোমন্দ, পছন্দ-অপছন্দ, অসুখ-বিসুখ, স্বাচ্ছন্দ্যসহ নানা দিক খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের স্বাধীনতা অনেকটাই খর্ব হয়ে যায়। আবার এদিক ওদিক হলে ঝগড়াঝাঁটি বাড়তি পাওনা হিসেবে তালিকায় যোগ হয়। তা থেকে তৈরি হয় মানসিক সমস্যা। তবে আপনি একা হলে এ বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হবে না। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
* বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা বিয়ের আগেই বেশি সুখী থাকেন। এটি পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একক জীবনযাপনের সময় পুরুষরা তুলনামূলকভাবে নারীর চেয়ে বেশি স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন। ফলে তারা বেশি সুখীও থাকেন।
এসএন