বসতে হবে মেরুদন্ড সোজা করে
লেখা ও ছবি : আসাদুল্লাহ গালিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বাংলাদেশের লিভার বা কিডনী রোগ চিকিৎসার পথিকৃত অধ্যাপক ডা. মবিন খান আজ এসেছেন অন্যতম সেরা ও প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহীতে। তিনি ‘বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটি'র সভাপতি।
আজ ‘ফিফথ নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়াটোহেপাটাইটিস ডে’ বা ন্যাশ ডে’ পালন উপলক্ষে বিশেষজ্ঞ ও প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নিয়েছেন 'লাইফ স্টাইল চেঞ্জ ফর ফ্যাটি লিভার, ওবিসিটি অ্যান্ড ডায়াবেটিকস' সেমিনারটিতে।
তার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে কথা বলেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শাহিনুল ইসলাম, বিজ্ঞান সম্পাদক অধ্যাপক ডা. গোলাম আজম ও ঢাকার ‘আদ্ব-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’র হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আকমাত আলী।
তাদের সেমিনারের শেষ প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেছেন ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালের হেপাটোলজি বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ।
আরো আলোচক ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ভালো মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’র হেপাটোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সাইফুল ইসলাম এলিন।
তাদের ‘বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটি’র সহযোগিতায় এই শরীর এবং জীবনের উন্নয়নের সেমিনারটির আয়োজন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থা বিভাগ।
দুপুর সাড়ে ১২টায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের বিভাগের ১১৯ নম্বর রুমে শুরু হয়েছে।
প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলাম।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেছেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থার সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন।
উপস্থাপনা করেছেন সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন হোসেন।
বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিকিৎসকরা ফ্যাটি লিভার, ওবিসিটি ও ডায়াবেটিকস রোগগুলোর সম্পর্ক, কারণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায় জানিয়েছেন।
অধ্যাপক ডা. মবিন খান সহজ কথায় বলেছেন, “ফ্যাটি লিভার রোগ’ হলো যখন একজন মানুষের লিভারে অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি জমা হওয়া। এই রোগে এমনকি লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।”
অধ্যাপক ডা. শাহিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ভেতরে এই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ফ্যাটি লিভারের রোগী রয়েছেন। আমাদের হিসেবে, প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ রোগটিতে নানা কারণে আক্রান্ত হয়েছেন।’
তিনি বলেছেন, ‘যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি তাদের মধ্যেই সাধারণত রোগটি বেশি দেখা যায়।’
অধ্যাপক ডা. শাহিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘এখন আমাদের গ্রামের এই বয়সের নারীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে।’
ডা. সাইফুল ইসলাম এলিন ফ্যাটি লিভার রোগের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষিত চাকুরিজীবী বিশেষ করে যারা সবসময় বসে কাজ করেন, এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। অতিরিক্ত বসে থাকা অত্যন্ত ক্ষতিকর।’
‘অত্যধিক খাবার খাওয়া, বেশি শর্করাযুক্ত খাবার খেলেও ফ্যাটি লিভার রোগ হয়।’
রোগটি থেকে বাঁচতে ডা. সাইফুল ইসলাম এলিন মাসে গড়ে ১ শ ৫০ ঘন্টা হাঁটা, কায়িক শ্রম, সাঁতার, সাইকেল চালাতে বলেছেন।
বসতে গেলে মেরুদন্ড সোজা রেখে বসতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
ওএস।