গ্রীষ্মে চুল সুরক্ষিত রাখতে ৬টি টিপস
সুন্দরের ধারণা দিনে দিনে পরিবর্তন হচ্ছে। একটা সময় ছিল ঘন, কালো ও লম্বা চুল মানেই সুন্দর। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে চুলের সৌন্দর্য্যের সেই ধারণাতেও বদল এসেছে। এখন চুলের রং শুধুই কালোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। চুলের রং, সিল্কি, সোজা নাকি কোকড়া, চুল কতটা স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বলতাসহ নানা বিষয়ের ওপর চুলের সৌন্দর্য্য নির্ভর করে। চুল এমন একটি অংশ যা দিয়ে আপনার চেহারার ধরনই পাল্টে দিতে পারে। একেক রকম স্টাইলে চেহারার আদল বদলে দিতে পারে। তাই চুলের যত্নেও গুরুত্ব দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম, প্রখর রোদ, ধুলাবালি থেকে চুল রক্ষা করতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে।
তবে তার আগে জেনে নিই চুলে কোন কোন সমস্যা দেখা যায় সাধারণত।
• চুলের আগা ফাটা
• অতিরিক্ত শুষ্কতা
• প্রচুর পরিমাণে চুল পড়া
• চুলে সহজেই জট পাকানো
• মাঝখান দিয়ে চুল ভেঙে ভেঙে যাওয়া
এবার চুল নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে কী করবেন কীভাবে তা দেখে নিই।
তাপ থেকে চুল রক্ষার স্প্রে ব্যবহার
চুলে তাপ দিয়ে যেকোনো স্টাইল করার আগে তাপপ্রতিরোধী স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এতে করে চুলের ক্ষতি অনেকটাই কম হবে। তাপপ্রতিরোধী স্প্রে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে চুল শুষ্ক হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়। এ ছাড়াও এটি চুলের উপর এক ধরনের প্রলেপ তৈরি করে যাতে চুলের ক্ষতি কম হয়।
ভালো ব্র্যান্ডের স্ট্রেইটনার বেছে নিন
নিয়মিত চুলে তাপ দেওয়া চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই যতটা সম্ভব স্টাইলের ক্ষেত্রে তপা কম দেওয়া। আর যদি পেশাগত কারণে নিয়মিত তাপ দিতে হয়, তাহলে ভালো ব্র্যান্ডের স্ট্রেইটনার ব্যবহার করবেন। এতে নিয়মিত তাপ দেওয়া যায় এবং চুল ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না, এমন টুলস আপনাকে বেছে নিতে হবে। এ ছাড়াও আপনি একটু ইন্টারনেট ব্রাউজ করলে হিট স্টাইলিং টুলস ছাড়া অনেক হেয়ার স্টাইল পাবেন। সেগুলো শিখে নিয়ে স্টাইল করতে পারেন।
ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক ব্যবহার
চুলে তাপ দিয়ে স্টাইল করার ফলে চুলে শুষ্কতা বা রুক্ষতা বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য চুলের অতিরিক্ত যত্ন দরকার। এক্ষেত্রে চুলের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিপ কন্ডিশনিং বা নারিশিং হেয়ার মাস্ক চুলে ব্যবহার করবেন। এতে করে চুলে জট পাকানো কমবে, চুল সিল্কি ও স্মুথ হবে। এ ছাড়াও হেয়ার মাস্ক চুলের আর্দ্রতা ও প্রোটিন জমিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
স্টাইলিং টুলসের হিট কমিয়ে ব্যবহার করুন
পাত দিয়ে চুলে স্টাইল করার ক্ষেত্রে যন্ত্রটির তাপ কমিয়ে ব্যবহার করতে হবে। যন্ত্রটি কেনার সময় দেখে নিতে হবে সেটাতে তাপ বাড়ানো ও কমানোর অপশন রয়েছে কি না। নিয়মিত ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ সেটিংয়ে দিয়ে ব্যবহার করবেন না। এতে করে তাপজনিত ক্ষতি অনেক বেশি হবে। চুলের কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২০০ ডিগ্রি তাপমাত্রা হচ্ছে আদর্শ, এর বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। তবে ভালোমানের হিট প্রোটেক্টিং সিরাম বা স্প্রে দিয়ে নিলে চুলের ক্ষতি নিয়ে আর চিন্তা নেই।
মাইল্ড শ্যাম্পু ও চুলের সিরাম ব্যবহার করুন
চুল নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। চুল পরিষ্কার না রাখলে আপনি যা কিছুই করেন না কেন সেটা কোনো কাজে আসবে না! চুরের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের ব্যবহার চুলকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। সালফেট, সিলিকন ও প্যারাবিনস মুক্ত শ্যাম্পু বেছে নিন, কারণ এগুলো কোনো ক্ষতি ছাড়াই চুল ক্লিন করে। নিয়মিত চুল ধোয়ার সময় মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করা যায় নিশ্চিন্তে। সেই সঙ্গে ফ্রিজি চুলের সল্যুশনে হেয়ার সিরাম অ্যাপ্লাই করা যেতে পারে। এটি চুলকে উজ্জ্বল ও নরম রাখে দীর্ঘক্ষণ ধরে।
চুল ছোট করে রাখা
চুলে অতিরিক্ত তাপ দেওয়ার ফলে চুলের আগা ফেটে যায়, যেটা আসলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। যার ফলে চুল আরও বেশি রুক্ষ দেখায়। তাই ২/৩ মাস পর পর চুলের আগা ছেঁটে দেবেন। না হলে চুল ধীরে ধীরে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেই অংশটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা কেটে ফেলে ভালোভাবে চুলের যত্ন নিন।
এসএন