১১৬ বারের মতো পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

ছবিঃ সংগৃহীত
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো এর বিচার হয়নি, তদন্ত শেষ হয়নি। বহুল আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ বারবার পেছানোয় বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে, যা নিহতদের পরিবারসহ সাংবাদিক সমাজ ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
আজ পর্যন্ত তদন্তে তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ১১৬ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানোর পর, আদালত নতুন করে ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন। এ নিয়ে মামলার অগ্রগতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
রোববার (২ মার্চ) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন এ তারিখ ঠিক করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুণ, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির ২ নিরাপত্তারক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ এবং তাদের 'বন্ধু' তানভীর রহমান খান। এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ জামিনে রয়েছেন। বাকিরা কারাগারে আটক রয়েছেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দম্পতি সাগর ও রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তাদেরকে ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়।
একইসঙ্গে মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়। পরে ১৭ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।
