চাকরিতে পিতৃত্বকালীন ছুটি কেন নয়, হাইকোর্টের রুল
হাইকোর্ট (ইনসটে শিশু নুবাইদ বিন সাদী)। ফাইল ছবি
দেশের সব প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদের পিতৃত্বকালীন ছুটির নীতিমালা করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ছয় মাস বয়সী শিশু নুবাইদ বিন সাদীর দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজওয়ার পার্থ।
রিটে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মোট ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন- কেবিনেট সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, আইন সচিব প্রমুখ। ওই রিটে দেশের সব প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের পিতৃত্বকালীন ছুটির নীতিমালা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আবেদনে আইনজীবী ইশরাত হাসান ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ ৭৮টির বেশি দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটির উদাহরণ টেনেছেন। বলেছেন, পিতৃত্বকালীন ছুটির নীতিমালা না থাকা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর আগে গত ৩ জুলাই ছয় মাসের শিশু নুবাইদ বিন সাদী ও তার মা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন।
রিটে বলা হয়, নবজাতকের যত্নে কেবল মায়ের ভূমিকা মুখ্য— এই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। বাবার ভূমিকাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নেওয়ার সুযোগ সীমিত। এ ছাড়া সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশু জন্মের হার আমাদের দেশে অনেক বেশি। সিজারের পর সুস্থ হতে মায়ের সময় লাগে। এই সময়ে নবজাতক ও মায়ের নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।
রিটে আরও বলা হয়, পিতৃত্বকালীন ছুটির সুযোগ না থাকায় যারা নতুন বাবা হন, তাদের স্ত্রী ও নবজাতকের দেখাশোনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের ৭৮টিরও বেশি দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান রয়েছে। পিতৃত্বকালীন ছুটি নীতিমালা সংবিধানের ৭, ২৭, ২৮, ২৯, ৩১ এবং ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।