পরমাণু আলোচনায় মার্কিন-ইরান বাগাড়ম্বর
আগামী সপ্তাহে ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতা ইস্যুতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাস্তবতা স্বীকার করে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তেহরানের শীর্ষ পারমাণবিক আলোচক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি। এদিকে মার্কিন সরকার নতুন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার পথ তাদের সামনে খোলা রয়েছে।
আগামী ২৯ নভেম্বর অস্ট্রিয়ায় বৈঠকে বসবে ইরান ও চুক্তির অন্য পক্ষগুলোর প্রতিনিধিরা। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি ফের কার্যকর করতে এ বৈঠকের আয়োজন। ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যায়। এরপর ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে তারা।
ইরান, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি পারমাণু সমঝোতা বিষয়ে আলোচনায় বসবে। গত জুনে স্থগিত হয়ে যাওয়া ষষ্ঠ ধাপের আলোচনা ফের শুরু করতে যাচ্ছে দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনায় পরোক্ষভাবে অংশ নেবে। আর এই আলোচনা সফল হলে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা কঠোর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে। আর চুক্তি অনুযায়ী পারমাণবিক কার্যক্রম চালাবে ইরান।
যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, চুক্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেও মানবাধিকার ও সন্ত্রাস সম্পর্কিত কিছু নিষেধাজ্ঞা রেখে দিতে আগ্রহী তারা।
কিন্তু মার্কিন সরকার নতুন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানকে প্রতিরোধ করবে তারা। এর বিরুদ্ধে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার পথ তাদের সামনে খোলা রয়েছে।
নতুন দফায় আলোচনার আগ মুহূর্তেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ইরানের ওপরে আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার মতো বিবৃতি দিচ্ছে তারা। একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সব ব্যবস্থা নেওয়ার পথ খোলা রাখা হয়েছে বলেও হুমকি দিচ্ছে মার্কিনরা। এসব হুমকির মাধ্যমে আমেরিকা ও তার মিত্ররা মূলত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
অক্টোবরের শেষভাগ থেকে আমেরিকা এবং ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এমন কিছু নেতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে যা ভিয়েনায় ফলপ্রসূ আলোচনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
এছাড়া, গত শনিবার (২০ নভেম্বর) মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বলেন, ইরানকে মোকাবেলার জন্য আমেরিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্যদিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যারা মার্কিন সমরশক্তির ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করতে আমেরিকা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
এদিকে ইরান বারবার বিশ্বকে আশ্বস্ত করেছে যে, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তারপরও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং পশ্চিমা দেশগুলো এ বৈরি মনোভাব পোষণ করছে। এমনকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি পরমাণু বোমা তৈরি, নিজেদের কাছে রাখা অথবা ব্যবহার করা–এ সবকিছুকেই হারাম বলে মন্তব্য করেছেন।
/টিটি/এসএ/