ভোট দিলেন ঋষি সুনাক ও তার স্ত্রী
ঋষি সুনাক এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নর্থ ইয়োর্কশায়ারে ভোট দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি। ভোট শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা আগে নর্থালেরটনের একটি ভিলেজ হলের একটি পোলিং স্টেশনে তাদের ভোট দিতে দেখা গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋষি সুনাক স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নর্থালারটনের একটি গ্রামের ভোটকেন্দ্রে আসেন। এ সময় তারা দুজন বেশ উৎফুল্ল ছিলেন। ফুরফুরা মেজাজে তারা একে অপরের হাত ধরে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন এবং ভোট দিয়ে একইভাবে বেরিয়ে যান।
রাত ১০টা পর্যন্ত দেশটিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি (টোরি) ও প্রধান বিরোধী লেবার পার্টিসহ ছোট-বড় ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত কনজারভেটিভ পার্টি ও লেবার পার্টির মধ্যে।
ভোটকেন্দ্রে ঋষি সুনাককে বেশ ফুরফুরা মনে হলেও জনমত জরিপ বলছে, ক্ষমতা হারানোর চাপে আছেন তিনি ও তার দল। জনমত জরিপের হিসাব ঠিক থাকলে লেবার পার্টির কিয়ার স্টারমারই হতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি নির্বাচনের আগেই হার মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তারা শক্তিশালী বিরোধী দল হতে চায় বলে আকার-ইঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছে। এদিকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে এবার ৯ নারীসহ রেকর্ড ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। লেবার পার্টি সরকার গঠন করলে প্রথমবার মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেতে পারেন কোনো কোনো ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময় থেকে ভঙ্গুর অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, অভিবাসন সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে গত ২২ মে আকস্মিক আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যদিও ২ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের পর লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। ২০১০ সাল থেকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। উল্লিখিত সমস্যার কারণে কনজারভেটিভ পার্টির প্রতি জনগণের হতাশা এখন দৃশ্যমান। তাই এ দলের অবস্থা বেশ নড়বড়ে। মে মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ফুরফুরে মেজাজে থাকা আত্মবিশ্বাসী লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। জাতীয় নির্বাচন-পূর্ববর্তী সব জরিপেও লেবার পার্টির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার জরিপ কোম্পানি সারভেশন জানিয়েছে, কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৫০ আসনের মধ্যে ৪৮৪ আসন পাবে।
বিবিসি বলছে, ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি বেছে নিতে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডজুড়ে ৪০ হাজার কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন। সকাল থেকে একযোগে সব অঞ্চলে ভোট শুরু হয়েছে। লোকজন উৎসবমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে আসছেন। তারা সে ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।