পতঞ্জলি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব
যোগগুরু বাবা রামদেব। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের যোগব্যায়ামের জনপ্রিয় গুরু বাবা রামদেবের বিশ্বজুড়ে লাখো ভক্ত রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর রয়েছে আয়ুর্বেদিক ওষুধের প্রতিষ্ঠান পতঞ্জলি। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সব ধরনের গুরুতর অসুখ ‘সারিয়ে’ দিতে পারে তাদের ওষুধ। তবে এই প্রচারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। খবর বিবিসির।
আইএমএ-এর অভিযোগ, ওষুধের বিজ্ঞাপনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে পতঞ্জলি। এরপর বিষয়টি আদালতে গড়ালে ক্ষমা চাইতে হয় রামদেবকে। এতে তার ভাবমূর্তি বেশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
রামদেব ও তার ঘনিষ্ঠ আচার্য বালকৃষ্ণা ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। পতঞ্জলি দাঁতের মাজন থেকে শুরু করে ত্বকের যত্ন ও সুস্থ থাকার নানা পণ্য বিক্রি করে। তাদের আয়ুর্বেদিক পণ্যগুলোর চাহিদাও ব্যাপক।
রামদেব জ্বর, টাইফয়েড থেকে শুরু করে যকৃতের অসুখ, ত্বকের সমস্যাসহ নানা ধরনের অসুস্থতার চিকিৎসায় সাধারণত যেসব ওষুধ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে ‘বিষাক্ত, সিন্থেটিক’ বলে দাবি করেন। আর ব্যবহারকারীদের করেন ভর্ৎসনা। তিনি তাদের এসবের পরিবর্তে পতঞ্জলির পণ্য ব্যবহার করার অনুরোধ জানান।
সম্প্রতি ভারতের সর্বোচ্চ আদালত পতঞ্জলির সব ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করে বলেন, যোগগুরু ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।
ড্রাগস অ্যান্ড মেজিক রেমেডিস (অবজেকশনেবল অ্যাডভারটাইজমেন্ট—আপত্তিজনক বিজ্ঞাপন) অ্যাক্ট ১৯৫৪ অনুযায়ী ক্যানসার, হৃদ্রোগ, রক্তচাপসহ ৫৪টি অসুখের নিরাময়ের জন্য ওষুধের প্রচার করা অবৈধ।
মিথ্যা বিজ্ঞাপনের অভিযোগে করা মামলায় গত মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট বাবা রামদেব ও তার সহযোগী পতঞ্জলির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বালকৃষ্ণকে আদালত হাজির হতে বলেছিলেন। কিন্তু এপ্রিলে নির্দিষ্ট তারিখে তাঁরা আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ চান। আদালত তা গ্রহন করেননি। আদালত বলেছেন, তারা ইচ্ছা করে আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন। কাগজে লিখে এই ক্ষমা চাওয়ার কোনো মূল্য নেই। আদালত আরও বলেন, ‘এর পরিণতি আপনাদের ভুগতে হবে।’
পাশাপাশি আইন অমান্য করার পরও পতঞ্জলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় উত্তরাখন্ড রাজ্যের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের প্রতিও বিচারকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই কৃর্তপক্ষের দায়িত্ব হলো আয়ুর্বেদিক ওষুধ ও সনাতন চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়টি তদারকি করে। পতঞ্জলির সদর দপ্তর উত্তরাখন্ডে।