ইমরানের বাস ভবনে 'জঙ্গি' বিরোধী অভিযান!
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বাস ভবন জামান পার্কে লুকিয়ে থাকা 'জঙ্গি'দের গ্রেপ্তার করতে পাঞ্জাব পুলিশ একটি 'মহা অভিযান' শুরু করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) পাঞ্জাব পুলিশের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে জামান পার্কের আশেপাশে পুলিশ কন্টিনজেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে ও রাস্তায় ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) তার বাহিনীকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে, জামান পার্কে আশ্রয় নেওয়া জঙ্গিদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করতে পিটিআইকে আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল প্রাদেশিক সরকার। কিন্তু সে সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার বিষয়ে প্রাদেশিক সরকারের এখন পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বুধবার (১৭ মে) জানিয়েছেন পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক তথ্যমন্ত্রী আমির মীর।
তিনি বলেন, আগে ২৪ ঘণ্টা সময় শেষ হোক তারপর সরকার পরিকল্পনা জানাবে।
এর আগে নিজের গ্রেপ্তার আশঙ্কায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জনগণের উদ্দেশে একটি বার্তা দেন ইমরান খান। তিনি লেখেন, 'এটাই হয়তো আমার পরবর্তী গ্রেপ্তারের আগে শেষ টুইট, পুলিশ আমার বাড়ির চারপাশ ঘিরে ফেলেছে।'
এর কয়েক ঘণ্টা পরই তথ্যমন্ত্রী আমির মীর উপরোল্লিখিত বক্তব্য দেন। ইমরান মিথ্যা বলছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে (ইমরান) সবসময়ের মতো জনগণকে উস্কানি দিচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হয় পিটিআই এই জঙ্গিদের হস্তান্তর করবে নয় আইন তার নিজস্ব গতিপথ অনুসরন করবে। সরকার এই 'জঙ্গি'দের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত, কারণ তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা প্রতিবেদন আছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তাদের সংবাদকর্মী আজম মালিক জামান পার্কে অবস্থান করছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমি পিটিআই প্রধানকে তার বাড়িতে গণমাধ্যম প্রবেশের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছিলাম, যাতে জনগণকে সেখানে অবস্থানরত লোকদের দেখানো যায়।
'বাসভবনের ভেতরে বেশ কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে' তথ্যমন্ত্রীর এমন দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন এই প্রতিবেদক। তিনি আরও জানিয়েছেন, অভিযানের খবর পেয়ে পিটিআই নেতাকর্মীরা দলে দলে ইমরানের বাসায় হাজির হচ্ছেন।
গেল ৯ মে দুপুরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে এনএবি। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় তাকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ভেতর থেকে তুলে নেয় রেঞ্জার্স সদস্যরা। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং ইসলামাবাদে সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তান আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, ইমরানকে গ্রেপ্তারের পরপরই সেনাবাহিনীর সম্পত্তি ও স্থাপনায় সংগঠিত আক্রমণ চালানো হয়েছিল এবং সেনাবাহিনী বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।
গ্রেপ্তারের দুই দিন পর ১২ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে দুই সপ্তাহের জামিন পান ইমরান। এর পর তাকে জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িয়ে বক্তব্য দেয় পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকার।
প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলার সঙ্গে জড়িতদের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার এবং সামরিক বাহিনী।
/এএস