পুতিন-শি বৈঠক
ইউক্রেন ইস্যুতে চীন ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান’ বেছে নেবে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নতুন এক বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করতে সম্মত হয়েছেন। এ জন্য তারা পশ্চিমা প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে গত শুক্রবার এক সম্মেলনে যোগ দেন।
এ সম্মেলনে এশিয়ার অনেক নেতাকেই তারা সমবেত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের এ প্রচেষ্টার মধ্যে শুরুতেই বড় ধরনের চিড় ধরতে দেখা গেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন, এখন ইউক্রেনে যুদ্ধ করার সময় নয়। উজবেকিস্তানে এসসিও আঞ্চলিক সম্মেলনের ফাঁকে গত শুক্রবার তারা বৈঠক করেন। চীনের পক্ষ থেকে ইউক্রেন ইস্যুতে ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান’ বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়।
পশ্চিমকেন্দ্রিক সংস্থাগুলোর বিকল্প হিসেবে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনটিকে সামনে এনেছে রাশিয়া। উদ্বেগের বিষয় হলো সম্মেলন চলাকালেই প্রতিবেশী তাজিকিস্তানের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘর্ষের কথা জানিয়েছে মধ্য এশিয়ার আরেক দেশ কিরগিজস্তান। দুই দেশের নেতারা এ সময় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার শুরু হওয়া এ সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গেছে। কিরগিজস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ বাতকেন ও তাজিকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় সুগদ অঞ্চলে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটির মধ্যে এটি সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও নতুন করে সংঘর্ষ শুরুর জন্য দেশ দুটি পরস্পরকে দায়ী করেছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনে হামলা নিয়ে পুতিনের কাছে এসসিও সম্মেলনে চীন ও ভারত যে মন্তব্য করেছে, তাতে রাশিয়ার ওপর হামলা বন্ধ করতে চাপ বাড়বে।
আবার বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, সম্মেলনে পুতিন ও শি একত্রে এসসিও সদস্যদেশ ভারত, পাকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার চারটি দেশের নেতাদের একত্র করার সুযোগ পেয়েছেন। এ ছাড়া সম্মেলেন ইরান ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টরাও উপস্থিতি হন।
চীন ও ভারতের কাছ থেকে যা শুনেছেন, তা ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের প্রতিফলন। আমি মনে করি, এটি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াবে।
পশ্চিমকেন্দ্রিক সংস্থাগুলোর বিকল্প হিসেবে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনটিকে সামনে এনেছে ক্রেমলিন। ইউক্রেনে হামলা নিয়ে মস্কোর ওপর একদিকে চাপ বাড়ছে, অন্যদিকে তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ক্ষুব্ধ বেইজিং। এই পরিস্থিতিতে এ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্মলেনে শি জিনপিং বলেন, আন্তর্জাতিক পদ্ধতিকে ঢেলে সাজানো ও ব্লক রাজনীতি বন্ধ করার এখনই সময়। সম্মেলনের যৌথ আলোচনায় সি আরও বলেন, তাদের উচিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উন্নয়নকে আরও ন্যায়সংগত এবং যুক্তিসংগত দিকে উন্নীত করার জন্য একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রুশ সেনারা বড় ধরনের পাল্টা হামলার মুখে পড়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রাশিয়া। এ পরিস্থিতে মস্কো যে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি, তা দেখানোর বড় সুযোগ হিসেবে এ সম্মেলনকেই বেছে নিয়েছেন পুতিন।
এমএমএ/