মুসলিম বিবাহ আইন বাতিল করছে আসাম
ঢাকাপ্রকাশ ফাইল ।
ভারতের আসামে মুসলিম বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ নিবন্ধন আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকার ইউনিফর্ম বা অভিন্ন সিভিল কোড আইন (ইউসিসি) কার্যকরের লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, দেশটির আরেক রাজ্য উত্তরাখন্ডের সরকার সব ধর্ম-বর্ণের জন্য একই ধরনের বিয়ে, তালাক ও উত্তরাধিকারসহ অন্যান্য সাধারণ আইন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। এনডিটিভি বলছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে উত্তরাখন্ড রাজ্য ইউসিসি আইন পাস করে। এখন আসামের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারও একই ধরনের আইন আনার ইঙ্গিত দিয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা নেতৃত্বাধীন সরকার আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সময় ইউসিসি বিলটি উপস্থাপন করতে পারে। শুক্রবার আসামের মন্ত্রী জয়ন্ত মাল্লা বড়ুয়া বলেছেন, মন্ত্রিসভা মুসলিম বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ নিবন্ধন আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার এখন এই ধরনের সব বিষয়কে বিশেষ বিবাহ আইনের আওতায় আনতে চায় ।
আসামের বর্তমান আইনে মুসলমানদের বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদে স্বেচ্ছা নিবন্ধনের অনুমতি রয়েছে। আইন অনুযায়ী, এই ধরনের ঘটনা নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক নয়। নিবন্ধনের যেসব বিধি-বিধান রয়েছে তা অনানুষ্ঠানিক এবং বিদ্যমান নিয়মাবলি উপেক্ষা করার সুযোগও রয়েছে।
মুসলিম রেজিস্ট্রার থাকবে না
আইনটি বাতিল হয়ে গেলে বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদের নিবন্ধনের লাইসেন্সধারী মুসলিম রেজিস্ট্রাররা আর বিবাহ কিংবা তালাকের নিবন্ধন করতে পারবেন না। মন্ত্রী জয়ন্ত মাল্লা বড়ুয়া বলেন, রাজ্যে যে ৯৪ জন মুসলিম নিবন্ধক রয়েছেন; যারা আইনের আওতায় বিবাহ নিবন্ধন করেন তাদের এককালীন ২ লাখ রূপি ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে।
রেজিস্ট্রেশন রেকর্ডের রক্ষণাবেক্ষণ
হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতে, আইনটি বাতিল হওয়ার পর নিবন্ধন রেকর্ডের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন জেলা কমিশনার এবং জেলা রেজিস্ট্রাররা। নিবন্ধনের পুরো রেকর্ড ও প্রক্রিয়া আসামের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশনের তত্ত্বাবধানে নিয়ন্ত্রিত হবে। বর্তমানে আসামের ৯৪ জন মুসলিম বিবাহ নিবন্ধক এই ধরনের রেকর্ডের রক্ষণাবেক্ষণ করেন।
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বর্তমান আইনের কিছু বিধানে বর এবং কনের বয়স যথাক্রমে ১৮ ও ২১ বছরে না পৌঁছালেও বিবাহ নিবন্ধন করার অনুমতি রয়েছে। আইনটি বাতিল করা হলে তা আসামে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।