শনিবার ১ কোটি টিকা দেবে সরকার
চলমান করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে মােট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ জনগােষ্ঠীকে প্রথম ডােজের আওতায় আনতে ‘একদিনে এক কোটি কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম’ হাতে নিয়েছে সরকার। আগামী শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী এই টিকা দেওয়া হবে।
বিশেষ এই কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সরকার দেশের সকলকে প্রথম ডােজ কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ও বুস্টার ডােজ প্রদান কার্যক্রমও জোরদার করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রী দুপুরে মহাখালীতে বিসিপিএস ভবনে, ‘আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য একদিনে এক কোটি ডোজ টিকা প্রদান কার্যক্রম’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মলেনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘এই কার্যক্রমের আওতায় জনসাধারণের টিকা গ্রহণ সহজতর করতে নিবন্ধিত, অনিবন্ধিত সকলেই প্রথম ডােজ টিকা পাবেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে অতিরিক্ত অস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে এই টিকা প্রদান করা হবে।’
তিনি জানান, সরকার ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেশের ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগােষ্ঠীর প্রায় ৬১ শতাংশকে প্রথম ডােজ ও ৪৬ শতাংশকে দ্বিতীয় ডােজ কোভিড-১৯ টিকা দিয়েছে।
১৮ বছর থেকে উপরের দিকের জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরকেও টিকা দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩২ লাখের বেশি মানুষকে তৃতীয় বা বুস্টার ডােজ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সরকার দেশের বিপুল সংখ্যক জনগােষ্ঠীকে যথাসময়ে টিকা প্রদান ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯ সংক্রমণ হার উল্লেখযােগ্য হারে কমিয়ে আনতে সফল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী টিকার অপ্রতুলতা সত্ত্বেও আমরা পর্যাপ্ত টিকা ও প্রয়ােজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে দেশে ৬ প্রকারের (অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না, সিনােফার্ম, সিনােভ্যাক এবং জনসন ও জনসন মোট ১০ কোটি টিকা মজুদ আছে।
জাহিদ মালেক জানান, সরকার দেশের দুর্গম অঞ্চলে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া জনগােষ্ঠী, ভাসমান জনগােষ্ঠী, নিম্ন আয়ের জনগােষ্ঠী, পরিবহন ও
কল-কারখানাসহ সকল স্তরের শ্রমিক, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারী, স্কুল-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ সকল বিশেষ জনগােষ্ঠীকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের টিকা নিশ্চিত করে সার্বিক সংক্রমণের
হার হ্রাস করার মাধ্যমে জনজীবন ও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে স্থিতিশীল করতে সফল হয়েছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ
সরকারের প্রয়াস বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন একটি কার্যকর সমাধান। ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যু ঝুঁকি কমায়।
তিনি বলেন, গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালােচনা করে দেখা গেছে,যারা অন্তত ২ ডােজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন তাদের অধিকাংশেরই আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়ােজন হয়নি।
তাই অদ্যাবধি যারা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের কোন ডােজ গ্রহণ করেননি তারা আর বিলম্ব না করে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি নিকটস্থ কেন্দ্র হতে প্রথম ডােজ টিকা নেওয়ার অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে গ্রহণ অন্যকেও টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করতে অনুরোধ জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রী।
করুন |
তিনি বলেন, দেশের সকল মানুষকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর। তাই আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য ‘একদিনে এক কোটি কোভিড-১৯ টিকাদান’।
কার্যক্রমকে সাফল করতে মন্ত্রী প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্য সেবায় নিয়ােজিত সকলের পাশাপাশি অন্যান্য সকল সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিও এবং উন্নয়ন সহযােগী সংগঠনসমূহকে সার্বিক সহযােগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।
এনএইচবি/এমএমএ/