নিপা ভাইরাসে দেশে ৫ জনের মৃত্যু
চলতি শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবার কল্যাণ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত এমন আট জন রোগীর সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত ও মৃতদের বেশিরভাগই রাজশাহী বিভাগের।
আক্রান্তদের প্রত্যেককেই চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ হাসপাতালে আলাদা আইসিইউ ইউনিট তৈরি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গতবছরের চেয়ে এবার শীত মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা ‘বেড়েছে’। ভাইরাসজনিত এই রোগ যাতে না বাড়ে সেই চেষ্টা চলছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে টেলিভিশন এবং পত্রিকায় নিপা ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণত শীতকালে বাদুরের মাধ্যমে খেজুরের রস থেকে মানুষের দেহে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে।
সংক্রমণ বাড়ার পেছনে মানুষের অসতর্কতাকে দায়ী করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'খেজুরের কাঁচা রস খেলে নিপা ভাইরাস হয়। অনেকেই সেটা খাচ্ছেন। এছাড়া যে ফলের কিছু অংশ পাখি খেয়ে ফেলে, সেই আধা খাওয়া ফলও খাওয়া যাবে না।'
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নিপা ভাইরাসে মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ, বাংলাদেশে এই হার ৭১ শতাংশ।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, বাংলাদেশে ২০০১ সালে প্রথমবারের মত নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। নিপা আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হলেও পরে গুরুতর স্নায়বিক জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এই জটিলতা আরও খারাপ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থমন্ত্রী দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে সেবার মান নির্ধারণে সরকারের পরিবল্পনা তুলে ধরেন।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা হাসপাতালের ক্যাটাগরি করতে চাচ্ছি। জনগণ যেন জানতে পারে সেটা কোন শ্রেণির হাসপাতাল, এর খরচ কেমন। জনগণ এটা দেখেই হাসপাতালে যাবে চিকিৎসা নিতে। এছাড়া চিকিৎসা ও পরীক্ষানিরীক্ষার খরচের বেলায়ও এই ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি বলেন, সব হাসপাতালে এক হবে না। যারা বড় হাসপাতাল, বিনিয়োগ বেশি, সেবা ভালো সেখানকার রেট একটু বেশি হবে। আবার যে হাসপাতালের মান কিছুটা কম, তার ফি কিছুটা কম হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে ১৩ হাজার ৭২৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। এরমধ্যে ৪ হাজার ৫২৮টি হাসপাতাল, বাকিগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ব্ল্যাড ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের সংগঠনের নেতারা।
এনএইচবি/এএস