মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বই বুকে নিয়ে বেঁচে আছে

বইমেলার সময়ে গণগ্রন্থাগারের গল্প না হলে কী চলে? বই তো বেঁচে থাকে গ্রন্থাগারে। সুুচিত্রা সেনের শহরে আছে বহু পুরোনো, অমূল্য বইয়ের ভান্ডার ‘অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি’। স্যামসন ও অঞ্জন চৌধুরীর সাহায্যে আজ খুব ভালোভাবে আছে সে মিলনায়তন, শিশুবিকাশ প্রতিযোগিতাগুলো ও বইয়ের প্রদশনী নিয়ে। লিখেছেন ও ছবি তুলেছেন রিজভী রাইসুল ইসলাম

অনেক আগের এক নতুন গল্প

বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অমর উপন্যাস ‘ইছামতী’র কল্যাণে মরতে, মরতে বেঁচে থাকা ইছামতী নদী আজো হারিয়ে যায়নি। নদীটির তীরে আরো সব শহরের মতো গড়ে উঠেছে সুচিত্রা সেনের পাবনা। বাংলা ছবির মহানায়িকার জন্মস্থানের বয়স এখন ২শ বছরের বেশি। প্রাচীন জেলাটি আব্দুল হামিদ সড়ককে কেন্দ্র করে তৈরি। পাবনা শহরের বয়স ৬১, তখনই গড়ে উঠেছে শহরবাসীর গণগ্রন্থাগারটি। তখন সুজানগরের তাঁতিবন্দের জমিদার ছিলেন গঙ্গাগোবিন্দ চৌধুরী। জমিদার গঙ্গাগোবিন্দের সন্তান বরদাগোবিন্দ চৌধুরীর সন্তান ছিল না। তিনি একটি ছেলে দত্তক নিয়েছিলেন। এই অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরীর নামেই গণগ্রন্থাগারটি তৈরি হলো। তার স্মৃতিকে চিরকালীন করে রেখেছে সে। ‘অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরী পাবলিক লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮৯০ সালে। তাঁতিবন্দের জমিদারদের দান করা ১৩ শতাংশ জমিতে দুটি রুমের একটি ভবনে পাবনার গণপাঠাগারটির শুরু। পরিচালনা পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন পাবনার সেই সময়ে ইংরেজ ম্যাজিষ্ট্রেট ও চিফ কালেক্টর এফ বিজ।

আলো এলো আলোর ভুবনে

তখন জেলায় বিদ্যুত নেই বলে পাঠকদের সুবিধায় লাগানো হলো ১৩ টাকা আট আনা বহুমূল্যের পেট্রো ম্যাক্স লাইট। সন্ধ্যার পর এই বাতির আলোতেই জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাতেন, পড়ালেখা করতেন তরুণ ও বৃদ্ধ পাঠকরা। এভাবে ধীরে, ধীরে পাঠাগারটি উন্নতি লাভ করতে লাগলো। বই বাড়তে লাগলো, সুবিধাদিও। ১৯৩৬ সালে বিরাট পরিবতন এলো অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরী পাবলিক লাইব্রেরিতে। মোট ১ শত টাকা খরচ গণপাঠাগারে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার ব্যবস্থা করলেন বিদ্বোৎসাহীরা। তাতে ১৯৩৬ সাল থেকে এই ১৯২২ সাল পযন্ত টানা ১৩১ বছর ধরে সকাল ১০টা-রাত ৮টা পর্যন্ত বিরাট গণপাঠাগার জ্ঞানের আলো বিলিয়ে যেতে পারছে। এখন সে কালেরও সাক্ষী, ইতিহাসের অন্যতম নিদর্শন। মানুষের জ্ঞানের প্রতি ভালোবাসার আদশ উদাহরণ। ঐতিহাসিক শহর পাবনার প্রাণকেন্দ্রে আছে, আবদুল হামিদ সড়কে। বয়সের কোঠা শতকের ঘর অনেক পেরোলেও জ্ঞান বিতরণে প্রাচীন এই গণপাঠাগার চিরতরুণ, ক্লান্তিহীন ও প্রবাহমান একটি স্রোত ধারা। পাবনা জেলায় শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক অগ্রগতির পুরোধা জ্ঞান ভান্ডারটি-জানিয়েছেন বিদ্বানরা। ১শ ৩০টি বছর ইছামতীর মতো প্রতিটি প্রজন্মের অন্তহীন জ্ঞান লাভের ঋণের ভান্ডার সে। পুরো উত্তরবঙ্গের গৌরবের অনিবার্য এক জ্ঞান শিখা। জ্ঞানের এই বাতিঘরটি মানবিক বোধ ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বস্তরের পাঠকে।

অমূল্য সংগ্রহশালাটি বড় দুর্লভ

সংগ্রহে আছে অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির ৩০ হাজারের বেশি বই। তিনটি হাতে লেখা তালপাতার বই আছে। তালপাতায় লেখা দুর্লভ কটি পান্ডুলিপিও আছে। জ্ঞানের অনুশীলন করে যাওয়াদের চমকে দেয় ৩শ বছরের পুরোনো হাতে লেখা বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার বই, পুঁথি ও পান্ডুলিপিগুলো। মোট ৯ হাজার ৮শ ৬টি হাতে লেখা পান্ডুলিপি আছে। গণগ্রন্থাগারটির অমূল্য শ্রম ও ভালোবাসার নিদর্শন ১৮৮১ সালে প্রকাশিত ‘প্রভাতী’ পত্রিকার সংকলনটি আছে। ৩শ বছরের পুরোনো ইংরেজি, বাংলা, উর্দু ও ফারসি ভাষার চারশর বেশি বই আছে। অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরিতে আছে ১শ ২৩ বছরের পুরোনো বাংলা পত্রিকার কপি। স্থানীয় পুরোনো দৈনিক পত্রিকার কপি আছে। কয়েক হাজার পত্রিকা, ছোট কাগজ রয়েছে। মোট ২০ হাজার জার্নাল আছে। পালি সাহিত্যের দুর্লভ বইগুলো আছে। ইংরেজি বইয়ের মধ্যে ১৭৫৮ সালে প্রকাশিত ‘দ্য সেইন্টস এভার লাষ্টিং রেষ্ট’ই সবচেয়ে পুরোনো। বাংলা, ফাসি, উর্দু, আরবি, হিন্দি, বুলগেরিয়, নরওয়েজিয়ান, ইটালিয়ান, রুশ, তুর্কি, চীনা ভাষার বই আছে। দেশ-বিদেশের ইতিহাস, রাজনীতি, কবিতা, গল্প, বিজ্ঞান, দর্শন ও জ্যোতির্বিদ্যার অনেক, অনেক বই আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশিত পত্র, পত্রিকার সংকলন বাঁধাই করে রেখেছেন বাকিসব সংগ্রহের মতো কর্মীরা। অনেকগুলো সংবাদপত্র রাখা হয় এখন। সেগুলো সংগ্রহও চলে। বিশাল বইভান্ডারে বিজ্ঞান, বক্তৃতা, অর্থনীতি, আইন, গণিত, পদার্থবিদ্যা, ভূতত্ব, রসায়ন, উদ্ভিদ, সাধারণ জ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, সংগীত, খেলাধুলা, চারুকলা, উপন্যাস, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, অভিধান, বিশ্বকোষ, সাংবাদিকতা, লোকসাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, শিশুসাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটারসহ অনেক বিষয়ের অন্তত ৩২ হাজার বই আছে। বিরাট গ্রন্থভান্ডারের পাশাপাশি অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীতে রয়েছে একালের প্রসিদ্ধ সব লেখকের বই। গবেষণা, পাঠ, দেখা ও কৌতুহলে প্রায় দিনই দেশ-বিদেশের গবেষক, পাঠকদের পদচারণা হয় এখানে। দেশ, বিদেশের জ্ঞান ও ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহ আছে অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির প্রতি। বিদ্যোৎসাহী পাঠক আসেন, পড়তে আসেন কত, শত মানুষ। অন্নদাচৌধুরী গণগ্রন্থাগারের কর্মীরা জানালেন, দিনে অন্তত হাজার খানেক মানুষের পা পড়তে, গবেষণা করতে ও দেখতে এই লড হার্ডিঞ্জের ব্রিজ, সুচিত্রা সেনের শহরের গণগ্রন্থাগারে আসেন। তাতে তারা খুব খুশি।

মান্যগণ্য অতিথিদের আপন ভুবন

১৯৩৯ সালের জুলাইতে ‘অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরী পাবলিক লাইব্রেরি’ তার ৫০ বছর পালন করেছে জাঁকজমকের সঙ্গে। বিরাট সেই অনুষ্ঠানে অমর বাঙালি সাহিত্যিক ‘ইছামতী’র স্রষ্টা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে এসেছিলেন। কলকাতা থেকে আরো এসেছিলেন সাহিত্যিক পরিমল গোস্বামী (ভালো নাম পরিমল কুমার গোস্বামী)। বিভূতিভূষণ আলোচনা করেছেন তার ইছামতী ও পাবনা নিয়ে। এই সুবিখ্যাত পাবলিক লাইব্রেরিতে পা পড়েছে, বই উপহার দিয়েছেন-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীর নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান নেতা ও মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (তিনি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সংস্কারেও ভূমিকা রেখেছেন), বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম বীর সংগঠক ও মুজিব নগরের মন্ত্রী শহীদ এএইচএমএম কামরুজ্জামান, লালকেল্লার প্রমথনাথ বিশী, প্রখ্যাত গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক, স্বাধীন বাংলা বেতারের নামকরা লোক গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, ভারতের বাঙালি সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, গীতিকার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, শিক্ষাবিদ-সাহিত্যিক অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, দৈনিক বাংলার সাবেক সম্পাদক, আধুনিকতার কবি শামসুর রাহমান, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণসহ বহু প্রখ্যাত মানুষ। ‘অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরী পাবলিক লাইব্রেরি’র পরিদর্শন খাতায় তারা ভালোবেসে এই পাঠাগার, তার বইয়ের ভুবন ও পরিবেশ নিয়ে লিখেছেন। সেসবও বাঙালির অমূল্য সম্পদ। তবে বইয়ের মতো, এই প্রখ্যাত মানুষদের মতো পাঠাগার ভবন পুরোনো, জীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তখন স্কয়ারের প্রাণপুরুষ স্যামসন এইচ চৌধুরী বেঁচে। পাবনার এই কৃতি সন্তান ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শিল্প-উদ্যোক্তা ১৯৯৮ সালে সাহায্য করেছেন বলেই অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির বইয়ের ভুবন বেঁচেছে। ১৯৯৮ সালে তার টাকায় শুরু করে ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বর বিরাট চারতলা ভবনটি গড়ে তুলেছে গ্রন্থাগার। সেই ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় মূল পাঠাগার কমপ্লেক্স আছে। সেখানে রয়েছে বিশাল তিনটি পাঠকক্ষ। তাতে সব শ্রেণি, বয়স ও পেশার পাঠকদের পড়ার জন্য বই, ম্যাগাজিন ও পত্র-পত্রিকা আলাদাভাবে সাজানো রয়েছে। চারটি ভাগে ১৭০টি আসন রয়েছে। একটি বড় মিলনায়তন আছে, প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আছে।

পাবনায় প্রগতিশীল আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে

অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরিতে যেতে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়কের বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। এরপর পায়ে হেঁটে মোটে ১শ গজ গুলোকেই স্যামসন এই চৌধুরীর গড়ে দেওয়া সুদৃশ্য চারতলা পাঠাগার ভবনটি। সামনে পুরোনো টাউন হলটি ও বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র আছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাবনার সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু এই পাঠাগার। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, একুশের মহান ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পাবনাবাসী ও সারাদেশের মানুষকে প্রেরণা, সাহস ও সংগ্রামী করেছে কালের সাক্ষী অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি। পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী, মৃত্যু দিবস, শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ সব জাতীয় দিবস নিয়মিত পালিত হয় পাঠাগারে। আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য নানাসময় থাকে আবৃত্তি, চিত্রাংকন, রচনা, সংগীত ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি জুড়ে অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি আয়োজন করে বইমেলা ও বিশেষ পুস্তক প্রদর্শনী।

অঞ্জন চৌধুরীর সহযোগিতায় এগিয়ে চলছে

এখন পুরোপুরিভাবে বেসরকারি উদ্যোগে পাঠাগারটি পরিচালিত হয়। তাদের ১৭ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। সভাপতি স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্প উদ্যোক্তা অঞ্জন চৌধুরী। মহাসচিব সাংবাদিক আবদুল মতীন খান। অন্নদাগোবিন্দ চৌধুরী পাবলিক লাইব্রেরি প্রতি বছরের শুরুতে কার্যনির্বাহী ও আজীবন সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায় নতুন বই কেনে। সরকারি, বেসরকারি অনুদান লাভ করে। প্রদেয় পুস্তকে সমৃদ্ধ হয় তার বই ভান্ডার। নিজস্ব ওয়েবসাইট, সার্বক্ষণিক বিদ্যুতসহ পাঠকের জন্য সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন পরিচালনা পর্ষদে। অবৈতনিক মহাসচিব আবদুল মতীন খান বললেন, “সদস্য চাঁদা, মিলনায়তন ভাড়া থেকে পাওয়া অর্থ ছাড়া অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আয়ের কোনো উৎস নেই। ব্যবস্থাপনা ও কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়।” তিনি জানিয়েছেন, পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি অঞ্জন চৌধুরীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাঠাগারের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের অনেক কাজ হয়েছে। ফলে বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় এমন আধুনিক সুবিধা ও প্রাচীন দুর্লভ সংগ্রহের সমন্বয় বাংলাদেশের খুব কম পাঠাগারে আছে। তাদের সাহায্যে পাঠাগার ব্যবস্থাপনা ও আধুনিকায়নে বড় পরিসরে উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা চলছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। অন্নদাগোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, ‘১৩১ বছরের পুরোনো আমাদের প্রাচীন এই গণগ্রন্থাগার পুরো পাবনাবাসীর গর্বের প্রতিষ্ঠান। ঐতিহাসিক নানা সংগ্রহের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের প্রয়োজনীয় ও পছন্দের বই প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে। তবে, আজকের প্রজন্মের অতিরিক্ত ফেসবুক ও ইন্টারনেটভিত্তিক জীবনযাপনে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, গ্রন্থাগারও নতুন প্রজন্মে পাঠক সংখ্যা বাড়াতে পারছে না। এই সংকট সারা দেশে। নবীন প্রজন্মের অভিভাবকদের উচিত, তাদের সন্তানদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা ও পাঠাগারমুখী হতে উৎসাহ দেয়া।’

ওএস।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য