মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

‘স্টুডিওগুলো থেকে আমি আশাবাদ নিয়ে এসেছি’

দিদি, আশা করি ভালো স্বাস্থ্য ধরে রেখেছেন।
আমার বয়স বিবেচনায়, মনে করি, সম্পূর্ণভাবে ভালো আছি। অবশ্যই অসুস্থতাগুলো রয়েছে। শরীরটি দুবল তবে সৌভাগ্যবশত মনটি আগের মতোই আছে। আমার বয়সের বেশিরভাগ মানুষ হয় চলে গিয়েছেন নয়তো হুইল চেয়ারে।

এর কারণটি কী আপনি ছাড়া বিশ্বটি কল্পনা করা যায় না?
এমনভাবে বলার জন্য ধন্যবাদ। তবে কেউই অপরিহার্য নন। অনেক আলোর উৎস, আমার চেয়ে অনেক গুণ বেশি ঐশ্বরিক প্রতিভা পেয়েছেন-বিজ্ঞানী, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতা, চিকিৎসক ও প্রকৌশলীরা আছেন; এসেছেন আবার চলে গিয়েছেন। বিশ্বে মানুষ বাস করে চলেছে।

তবে আপনার সম্পদ কোনোদিন মরবে না। আজ থেকে এমনকি একশ বছর পরেও গানগুলো শোনা হতে থাকবে।
আমি এই বিষয়ে নিঃসন্দেহ নই। আজকের দিনগুলোতে তরুণ প্রজন্মের মনোযোগের দূরত্ব খুব কম। তারা শেষ পযন্ত অতীতে বসবাস করে না। এখন সঙ্গে, সঙ্গে থাকা ও পাওয়াদের যুগ। প্রত্যেকে মুহূর্তটির জন্য বাঁচতে চায়। আপনার মতো মানুষরা যেমন করছেন, তেমনি আগামী প্রজন্মের মধ্যে উত্তরাধিকার অর্থ বহন করার বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে।

সব বন্ধুরা ও সঙ্গীতের সমসাময়িকরা চলে গিয়েছেন।
আমি কী তাদের অভাব বোধ করি? অবশ্যই তাদের জন্য কাতর হই। মোহাম্মেদ রাফি সাব, কিশোরদা (কিশোর কুমার), মুকেশ ভাইয়া ও মান্নাদা (মান্না দে)’র মতো সহকর্মীরা আমার জীবনের অপরিবতনীয় অংশ ছিলেন। প্রতিদিন তাদের কারো না কারো কাছে দৌড়ে যেতাম। সম্পকগুলো কেবল কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না। সঙ্গীত পরিচালক ও কবিরা-মদন ভাইয়া (মদন মোহন), নরেন্দ্র শর্মা-যাকে আমি ‘ড্যাডি’ ডাকতাম; চিত্রগুপ্ত সাব (চিত্রগুপ্ত শ্রীবস্তব) ও মাজরুহ সুলতানপুরী সাব আমার বাড়িতে নিয়মিত আসতে অভ্যস্ত ছিলেন। আমিও তাদের সবাইকে দেখতে যেতাম। আমরা তেমন ছিলাম-যাদের পরিবারিক বন্ধু বলে। এখন লোকেরা ভিডিও করে দেখাসাক্ষাৎ করে।

প্রিয় সঙ্গীত পরিচালকরা কারা?
এটি একটি বিপদজনক প্রশ্ন। কেননা, যদি কোনো নাম ভুলে যাই, তাহলে বিপদে পড়ব (হাসি)। তবে সত্যিকারভাবে শঙ্কর-যাইকৃষণ, সলীল চৌধুরী, এস. ডি. বর্মণ, আর. ডি. বর্মণ, লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলাল, চিত্রগুপ্ত ও আমার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের গান গাওয়া উপভোগ করেছি। নামগুলো এজন্যই উল্লেখ করেছি, কারণ তাদের জন্য বেশি কাজ করেছি। অন্য যে পরিচালকদের জন্য কাজ করেছি, তারাও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের প্রতিটি সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা তাদের গানগুলো আমাকে গাইতে গিয়েছেন। হৃদয়ের গভীর থেকে কথাটি বললাম। যদি রাজা মেহেদী আলী খান ‘লাগ যা গালে’ না লিখতেন ও মদন মোহন সুরটি কম্পোজ না করতেন, কীভাবে আমি গাইতাম?

‘লাগ যা গাল’র কথাই বলি-কীভাবে আপনি এর অবিনশ্বর জনপ্রিয়তা অন্য গানগুলোর চেয়ে বেশি হবে হিসেব করেছিলেন?
এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। কেন অন্যগুলোর চেয়ে কিছু গান অনেক জনপ্রিয় হলো? ‘ওহ কারণ তুই’ ছবিতে অরেকটি সুন্দর কম্পোজড গেয়েছি-‘গজল’। সেটি ‘জো হুমনে দাসতান আপনি শুনারে আপ কিউ রয়ে’, কিন্তু ‘লাগ যা গালে’ বছরের পর বছর ধরে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে যাচ্ছে। কেহনা মুশকিল হায় কে এক গানা ধোরছে সে জায়াদা লগন কো কিয়ন পছন্দ আতি হায় (তার হিন্দিতে বলা কথাটির অথ-কীভাবে অন্যগুলোর চেয়ে কিছু গান জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে গেল বলা কঠিন।)

আপনার জনপ্রিয় গানগুলো অনেক দূরে, বিস্তুতভাবে যাচ্ছে। মানুষ সেভাবে শুনছেন। তবে পছন্দ এমন কিছু গান আছে, যেগুলো প্রাপ্য পায়নি?
স্বীকৃতির ব্যাপারে আমি জানি না। নিজের প্রিয় গানগুলো জনপ্রিয় হয়েছে এমনটি আমার কাছে প্রয়োজনীয় নয়। হৃদয়নাথের সঙ্গীত পরিচালনা ‘মায়া মেমসাব’র গানগুলো ভালোবাসি। লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারোলের একটি কম্পোজিশন (সঙ্গীত রচনা) আছে, ‘ইয়ে রাত ভাই যা রাহি হায়’। ছবিটি মনে করতে পারছি না (সাও সাল বাদ)। গানটিতে আমি খুব আসক্ত। তেমন আরেকটি গান আছে-সাজ্জাদ হুসাইন সাবের কম্পোজ , ‘এ দিলরুবা নাজরিন মিলা’, ‘রুস্তম-সোহরাব’ ছবি থেকে নেওয়া। গানটি ভালোবাসি। সেভাবে খুব ভালোবাসি ওই গানগুলো, যেগুলো পন্ডিত রবি শঙ্কর হৃষিকেশ মুখার্জির ‘আনওয়াদা’ ছবিতে আমার জন্য পরিচালনা করেছিলেন। ফলে অনেক গান পড়ে আছে, অনেক কারণে।

প্রকাশিত হয়নি এমন কোনো গানের কথা মনে করতে পারেন?
কালিয়মের করা একটি সুন্দর কম্পোজিশন ছিল, নাম-‘ইয়ে হাসিন রাত’। এটি আমার ও ইয়েসউদাসের ডুয়েট। কোনোদিনও রেকর্ডিং করা হয়নি। নিজে মনে করি, কামাল আমরোহিকে ছবিটি (মাজনুন) স্থগিত করতে হয়েছে। এমন আরেকটি আছে। একটি অ্যালবাম আছে, কম্পোজিশনগুলো গুলাম মোহমেদের; ‘পাকিজা’র জন্য করা; ছবিটিতে একটি অ্যালবামের গানগুলো অলংকারের মতো যুক্ত করা হয়েছে। এই আরেকটি অ্যালবাম ছবিতে যুক্ত করা হয়নি। ‘পাকিজা’ ছবির অব্যবহৃত গানগুলোও খুব সুন্দর ছিল। ওই গানগুলো জনপ্রিয় হতে পারেনি, কেননা তারা ছবিটিতে ছিল না। মোহমেদ রাফি, কিশোর কুমার, আশা ভোঁসলে, মুকেশ ও মান্না দে-আমার এই সহকমীদের সবারই জোর করে মুক্তি দেওয়া হয়নি এমন গান আছে। সেগুলো কোথাও না কোথাও ঘুমিয়ে রয়েছে।

এত গান ব্যবহার হয়নি বলে দু:খ করেন?
অনুতাপ বা দু:খ করার জন্য কোনো সময়ই আমার ছিল না। আমরা তো একটি রেকডিং স্টুডিও থেকে আরেকটিতে কাজের জন্য ছুটে গিয়েছি। আমার যে গানটি একবার রেকর্ড হয়ে গিয়েছে, সেটি কখনো শুনতে পারিনি। ফলে কোনটি ব্যবহার করা হয়েছে ও কোনটি ব্যবহার করতে পারেননি, সেসব জানার কোনো উপায় ছিল না। সেই দিনগুলোতে যদি কোনো গান ছবিতে ব্যবহার করা হতো না, সেটি যেমন প্রাপ্য, পেত না। লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের মিলন ছবিতে একটি সুন্দর কম্পোজিশনের কথা মনে পড়ছে, যেটি ছবিটি থেকে কেটে ফেলা হয়েছিল। গানটি-‘আজ দিল পে কই ঝর চলতে নাহিন।’ তাদের কম্পোজ করা অনেকগুলো গানের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয়গুলোর একটি। আমি খুশি যে, মহান মদন মোহনের কম্পোজ করা কিছু অব্যবহৃত গান যশ চোপরা ব্যবহার করেছেন। মদন ভাইয়ার ছেলে সঞ্জীব কোহশি, যে আমার কাছে ছেলের মতো; যশজিকে অনুরোধ করেছিল, তারা মদন ভাইয়ার কটি অব্যবহৃত কম্পোজিশন ‘ভির-জারা’তে ব্যবহার করতে পারেন। সেভাবে এই ভালোবাসাময় মেলোডিগুলো রক্ষা পেয়েছে। গানগুলোর মধ্যে আছে ছবিটির ‘তেরে লিয়ে’ ও ‘তুম পাস আয়ে রাহে হো’। না হলে তারা বিস্তৃতিতে তলিয়ে যেতে পারত।

৯২ বছর বয়সে, আপনি কী যৌবনকালকে মিস করেন?
ম্যায় আপকো সাচ বাতাওন (আমার কী আপনাকে সত্যিটি বলা উচিত)? বয়সকে আমি মোটেও অনুভব করি না। এখনো যৌবনকে অনুভব করি। নিজের অসুবিধাগুলোর ওজনে কখনো আমি পড়ে যাইনি। প্রত্যেককে তার জীবনের সমস্যাগুলো নিয়ে থাকতে হয়। এমনকী যখন যুবতী ছিলাম ও সংগ্রাম করে যাচ্ছিলাম, তখনো স্টুডিওগুলো থেকে আমি ভালো বোধ ও আশাবাদ নিয়ে এসেছি। কিশোরদা ও মুকেশ ভাইয়ার মতো সংগ্রামীদের নিয়ে কুস্তি করেছি। সারাটি দিন যখন না খেয়ে থাকতাম আমি, তখনো আমার জীবনে আনন্দ এসেছে। পার্সে কোনো টাকা নেই, কিন্তু সেই সময়গুলোতেও আমার মনে কেবল আশাই ছিল। ভবিষ্যত কেমন কঠিন হবে আমি দেখতে পারছি, সেই সময়গুলোতেও সবসময় একটি ভালো আগামীর জন্য আমার বিশ্বাস ছিল।

রেকর্ডিংয়ের সময় একবার গরমে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন?
একে ভুলভাবে অনুমান করে বছরের বছর বলা হচ্ছে-সলীলদা (চৌধুরী)’র সঙ্গে একটি গান রেকর্ডিং করার সময় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। অ্যায়সা কুচ নাহিন। অবশ্যই তার গানগুলো খুব জটিল ছিল আমার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের কম্পোজ করা গানগুলোর চেয়ে। তবে আমার বাবা (দ্বীননাথ মঙ্গেশকর)’র আর্শীবাদের কারণে রেকর্ডিং স্টুডিওগুলোর যেকোনো সমস্যা মোকাবেলায় আমি দাঁড়িয়ে গিয়েছি। না, সেই দুর্ঘটনাটিতে সলীলদার সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যাইনি। এটি নওশাদ সাবের সঙ্গে ঘটেছে। আমরা একটি গান দীর্ঘ গরমের দুপুরে রেকড করছিলাম। আপনি জানেন, মুম্বাই গরমকালে কেমন হয়ে পড়ে। সেই দিনগুলোতে রেকর্ডিং স্টুডিওগুলোর কোনোটিতেই এয়ার কন্ডিশনার ছিল না। চূড়ান্ত রেকর্ডিংয়ের সময় আওয়াজ যেন না হয়, সেজন্য সিলিং ফ্যানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতো। ব্যাস, মে বেহুশ হু গায়ি (তাই অজ্ঞান হয়ে গেলাম আমি)।

মনে করতে পারেন কোনো নিদিষ্ট ঘটনা যেটি আপনার সঙ্গে ইচ্ছা করে করা হয়েছে?
সত্যিকারভাবে আমার কিছু মজার ঘটনা আছে। মনে করতে পারি, উমা দেবী (উমা দেবী খাতরি)’র সঙ্গে একটি ডুয়েট রেকর্ডিং করছিলাম, তিনি পরে নারী কৌতুকাভিনত্রী তুন তুন নামে পরিচিত হয়েছিলেন (এটি তার সিনেমা নাম, ২০০৩ সালের নভেম্বরে মারা গিয়েছেন)। উমা দেবী তখন একজন গায়িকা হিসেবে খাতি-পেতি ধরণের পেছন দিকের ছিলেন, ফলে পরে একজন অভিনেত্রী হয়েছে। তো আমরা সেখানে ছিলাম, দুইজনে একত্রে একটি মাইক্রোফোনে গাইছিলাম। পরে জানলাম, ডুয়েট থেকে একটি মাইক্রোফোনের কন্ঠ রেকর্ড হয়েছে। আমি একটি দুর্বল, ক্ষুদে বালিকা, তিনি শারিরীক কারণে মাইক্রোফোনের সামনে ভয়াবহভাবে উপস্থিত। আমাকে একটি টুল দেওয়া হলো দাঁড়াতে, যেহেতু মাইক্রোফোনটিতে পৌঁছাতে আমার সমস্যা হচ্ছিল। আমি আমার লাইনগুলো গাইলাম। এরপর উমা দেবী মাইক্রোফোনটির সামনে গাইতে এলেন। তিনি কনুইতে ধাক্কা দিলেন, মাটিতে পড়ে গেলাম (উচ্চস্বরে হেসে ফেললেন)।

কার সঙ্গে রেকর্ডিং সবচেয়ে উপভোগ করেছেন?
কিশোরদা। তার সঙ্গে রেকর্ডিং করা পুরো সেশনটি মজা ও খেলার মাধ্যমে কাটানোর মতো। তিনি আমাকে এত বেশি হাসাতে পারতেন যে, খুব কমই গাইতে পারতাম। আমার তাই তাকে থামিয়ে দিতে হতো। বলতাম, কিশোরদা পেহলে গানা, পাহির মাস্তি (কিশোরদা প্রথমে গান পরে আনন্দ)। বিশেষভাবে সমস্যা হতো যখন আমরা দুঃখের দ্বৈত গান গাইতাম। দু:খের মধ্যে, আমার চোখ দুটি হাসতে, হাসতে পানিতে ভরে যেত।

এটি বলা হয়, রেকর্ডিংয়ে যুক্ত বাঘা মানুষরা আপনি যখন মদন মোহনের ‘হের’ গানটি ‘হের রাঞ্জা’ ছবিতে ও এস. ডি. বর্মণের ‘তুম মুঝছে দীর চাহলে জানা না’ ‘ইশক পার ঝোর নাহিন’ ছবিতে গেয়েছেন, সবাই কেঁদেছেন?
এই কথাটি সত্য। আমাকে বাদ দিয়ে তারা সবাই এই গান দুটির সময় কাঁদছিলেন। আমি কখনো কাঁদিনি এমনকি যখন সবচেয়ে বিষন্ন গানগুলো গেয়েছি। আমি কান্নার চেয়ে সবসময় হাসাকে পছন্দ করেছি। ঈশ্বর সবসময় দয়ালু থেকেছেন আমার প্রতি। ফলে আমাকে জীবনে কোনোদিনও কান্নার মতো কারণ দেননি তিনি। আমি জানি, যখন নিজের বাবা ও মাকে হারালাম তখন আমি সবচেয়ে বেশি কেঁদেছি।

সিনেমাতে কোন বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কোনোদিনও কাজ করতে পারেননি?
ও.পি. নাইয়ার। আমার বোন আশার কণ্ঠ তার পরিচালনার স্টাইলের বেশি উপযুক্ত।

কোনো প্রিয় ভাবনা?
আমাকে ৭০ বছরের বেশি সময়কাল ধরে শুনে যাওয়ার জন্য শ্রোতাদের কোনোভাবে যথেষ্ট ধন্যবাদ দিতে পারিনি। কীভাবে সময়টি উড়ে চলে গেল আমি জানিও না। ওয়াক্ত ক্যায়সে নিকলা গানা পাতা হি নাহিন চালা। আবার যদি সেই দিনগুলোতে বাস করার কোনো উপায় থাকত, আমি কোনোকিছুই বদলাম না। এমনকী উমা দেবীর সঙ্গে গাইতে গিয়ে টুল থেকে পড়ে যাওয়াও।

(৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, মুম্বাই)

ফাস্টপোস্ট অনলাইনের ইংরেজি থেকে অনুবাদ।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য