২০ টাকার ইফতার বিক্রি করে আলোচিত মোহাম্মদ আলী
মাগুরা সদরের হাজরাপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামে রমজান মাসে ২০ টাকার ইফতার বিক্রি করে আলোচিত হয়েছেন দরিদ্র মোহাম্মদ আলী (৬২)। প্রতিদিন বিকালে তার দোকানে স্বল্প মূল্যে এই ইফতার সংগ্রহ করতে দূর-দূরান্তের ক্রেতারা ভিড় করছেন। তার দোকানে আলু চপ জোড়া ৫ টাকা,বেগুনের চপ জোড়া ৫ টাকা, ডাল পুরি জোড়া ৫টাকা ও ছোলা ৫ টাকা এই মোট ২০ টাকার ইফতারি প্যাকেজ বিক্রি হচ্ছে । অতুলনীয় স্বাদ ও কম দাম থাকার কারণে প্রতিদিনই তার দোকানে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের মানুষ,পথচারীসহ সব বয়সী মানুষেরা ভিড় করছেন ।
হাজরাপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামের ইজাহার আলী বলেন, মোহাম্মদ আলী আমাদের গ্রামের একজন দরিদ্র মানুষ । সে প্রতি রমজানে ২০ টাকার বিনিময়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিক্রি করে আসছে । দাম কম ও স্বাদ ভালো থাকার কারণে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। আমাদের নিজ গ্রাম ছাড়াও দূর-দূরান্তের সব বয়সের মানুষেরা বিকাল থেকেই ছুটে আসে তার দোকানে । তেলে ভাজা এ দ্রব্যগুলো সে এত যত্ন সহকারে তৈরি করে যেন একবার খেলে বার বার খেতে ইচ্ছা করে । আমি প্রতিদিন তার দোকান থেকে ২০ টাকার ইফতারি কিনে বাড়ি যাই ।
ইছাখাদা গ্রামের মাজেদুল ইসলাম বলেন, আমি পেশায় একজন অটোচালক । মাঝে মাঝে আমি আলী চাচার ২০ টাকার ইফতারি কিনে নিয়ে যায়। তার নিজ হাতে বানানো এসব জিনিস খুবই স্বাদ লাগে। যা অন্য দোকানের চেয়ে ভিন্ন ।
নড়িহাটি গ্রামের ইমরান হোসেন বলেন,আমি প্রায়ই মিঠাপুর যায়। এই রজমানে প্রায় দিন আলী চাচার ইফতার কিনে নিয়ে আসি । দাম কম বড় বিষয় নয় ,তার হাতের এসব দ্রব্য খেতেও খুবই স্বাদ । আমি নিজে খাই ও বাড়িতে কিনে নিয়ে আসি ।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিঠাপুর গ্রামের দরিদ্র মোহাম্মদ আলী বলেন ,আমি দরিদ্র-গরীব মানুষ । প্রায় ৫৫ বছর ধরে নিজ বাড়ির পাশে এই ব্যবসা করে আসছি । খড়ি জ্বাল দিয়ে এই উপকরণগুলো আমি তৈরি করি। এখানে আলু চপ,বেগুনি,ডাল পুরি,ছোলা বিক্রি করি । প্রতি রমজান মাসে আমি ২০ টাকার বিনিময়ে একটি প্যাকেজ বিক্রি করি। রমজান মাসে আমি সীমিত লাভ করি। আমার উদ্দেশ্য হলো রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তির জন্য আমার দোকানের দ্রব্য অনেক ছাড়ে বিক্রি করি। যাতে তারা স্বল্প মূল্যে খেতে
পারে। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আমি বেচা-কেনা করি। এখানে মিঠাপুর গ্রামের মানুষসহ দূর-দূরান্তের অনেক মানুষ ইফতারি কিনতে আসে। আমার এই কাজে আমার পরিবারের লোকজন সহযোগিতা করে থাকে। রমজানে শেষ হলেও আমার বেচা-কেনা ভালো হয়।
এ ব্যাপারে হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, আমি নিজে মোহাম্মদ আলীর দোকানে গিয়ে এই উপকরণগুলো খায় । তার নিজ হাতে বানানো এ দ্রব্যগুলো খেতে খুবই স্বাদ লাগে। দাম কম থাকার কারণে সাধারণ মানুষের চাহিদা খুবই বেশি । আজকাল দ্রব্যমূল্যে অধিক দামের কারণে মানুষ কোনো কিছু কিনতে পারছে না। সে দরিদ্র মানুষ। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমার পক্ষ থেকে তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করব। তার এই ক্ষুদ্র ব্যবসা সুন্দরভাবে পরিচালনা হোক এটাই আমার প্রত্যাশা।
এসআইএইচ