স্বাধীনতার ৫১ বছরও নির্মাণ হয়নি ব্রিজ
সরকার আসে সরকার যায়। ভোট আসলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ব্রিজ নির্মাণের। কিন্ত আজও কথা রাখেনি কেউ। ৫১ বছরেও ঘাঘট নদীর ইব্রা মন্ডলের ঘাটে নির্মাণ হয়নি একটি ব্রিজ। ফলে হাজারো মানুষের পারপারে একমাত্র নড়বড়ে কাঠের সাঁকো।
সরেজমিনে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর-রসুলপুর সীমান্তর্তী চান্দের বাজার এলাকার ঘাঘট নদীর উপরে ওই ভাঙা সাঁকোতে দেখা যায়, হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ সময় কেউ মোটরসাইকেলে আবার কেউ বাইসাইকেলে আবার কেউ মালামাল নিয়ে পায়ে হেঁটে সাঁকো দিয়ে নদীর ওপারে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই স্থানের ইব্রা মন্ডলের ঘাটে প্রায় একদশক আগে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে মানুষ চলাচল করতো। নৌকাডুবির ঘটনাসহ মানুষ নানা দুর্ভোগের শিকার হয়। এরপর জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়দের আর্থিক ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় কাঠের সাঁকো। এই সাঁকোটি প্রতি বছর পুনরায় সংস্কার করতে হয়।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নড়বড়ে ওই কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সহস্রাধিক মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতাযাত করতে হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। সময়ের ব্যবধানে দেশের পরিবর্তন ঘটলেও আজও পরিবর্তন হয়নি ইব্রা মন্ডলের ঘাটের এই অবস্থার। দেশ স্বাধীনের ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও সরকারের আমলে নজরে আসেনি ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি।
জানা গেছে, ঘাঘট নদীর উত্তরে রসুলপুর ও দক্ষিণে দামোরপুর ইউনিয়ন। দুই সীমানার মাঝামাঝি দিয়ে বয়ে গেছে ইব্রা মন্ডলের ঘাট। আর এই ঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত ভাঙা কাঠের সাঁকো পাড়ি দিতে হয় প্রায় ২০ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষকে। ফলে পরিবার-পরিজনরা থাকেন উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠার মধ্যে। বর্ষা মৌসুম এলেই নদীটি কানায় কানায় ভরে যায়। এতে বেড়ে যায় আরও দুর্গতি। এ ছাড়াও হঠাৎ কোন রোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার জীবন নির্ভর করে সময়ের উপর।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক এমপি মরহুম ডা. ইউনুস আলী সরকার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লবসহ দায়িত্বশীল আরও অনেকে ওই স্থানটি পরিদর্শন করেন। সেখানে তারা ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ব্রিজের অভাবে যুগযুগ ধরে চলে আসছে মানুষের ভোগান্তি। এজন্য সাধারণ মানুষের দাবি, এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্রিজটি নির্মাণ হলে অল্প সময়ে বিভিন্ন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে।
আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, প্রয়োজনীয় কাজে কাঠের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার আবেদন করেও কাজ হয়নি।
দামোদরপুর ইউনিয়নের মিঠু রহমান জানান, ব্রিজটি নির্মাণ হলে লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। তাই ব্রিজটি হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর উপজেলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লব বলেন, ইতিমধ্যে ওই কাঠের সাঁকোটি পরিদর্শন করা হয়েছে। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে।
এসআইএইচ