শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ২৫০ বছরের পুরনো ‘নীলকুঠি’

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাদারীপুর সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামের ‘নীলকুঠি’। নীল চাষের জন্য ব্রিটিশ শাসনামলে কৃষকদের উপর ইংরেজদের চালানো নির্মম নির্যাতনের চিহ্ন বহন করে চলছে ‘নীলকুঠি’র চুল্লীর একটি চিমনী। কিন্তু সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে ২৫০ বছরের এই পুরাকীর্তিটি। পুরনো এই প্রাচীন স্মৃতির অবকাঠামো টিকে থাকলেও সংরক্ষণ বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

সরেজমিনে জানা যায়, ইংরেজরা ২৫০ বছর আগে মাদারীপুরে নীল চাষের জন্য ‘নীলকুঠির’ নামে একটি খামার স্থাপন করেছিল। এই অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় ওই সময় এখানে বেশি নীল চাষ হতো। এ কারণে নীলকরদের আস্তানা গড়ে উঠে জেলা সদরের ছিলারচর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে।

আউলিয়াপুর গ্রামটি মাদারীপুর সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। জনশ্রুতি রয়েছে, বহুকাল পূর্বে গভীর বনজঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় বিভিন্ন স্থান থেকে এসে ধ্যান করতেন কয়েকজন আউলিয়া। তাদের পদস্পর্শে এই এলাকার নাম হয় আউলিয়াপুর। বর্তমানে এখানে রয়েছে খ্যাতিমান আউলিয়া হযরত শাহ সুফী খাজা ইউসুফ শাহ আহসানের দরগা শরীফ। অযত্নে অবহেলায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে দরগাটি। দরগা শরীফের পাশেই অবস্থান নীলকুঠির। স্বাধীনতার আগে এলাকাটি ছিল ঘন বনজঙ্গলে ঘেরা। অবশ্য এখন আর এখানে বনজঙ্গল নেই। তাই নীলকুঠির জমি বিভিন্নভাবে দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন লোক। গড়ে তুলেছে ঘরবাড়ি। স্মৃতি হিসেবে রয়েছে শুধুমাত্র চুল্লীর চিমনী। তাও প্রায় ধ্বংসের পথে। রয়েছে কুঠির বেশ কিছু ভাঙাচুরা ইটের চিহ্ন। ১২ কক্ষের নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ এখনও আউলিয়াপুরে বিদ্যমান।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮০০ সালে আউলিয়াপুর গ্রামে নীল চাষের একটি বৃহৎ খামার স্থাপন করে ইংরেজরা। ১৮৪৭-৪৮ সাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হলে নীল চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় কৃষকরা। তখন ইংরেজদের জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হন তারা।

ইংরেজ ডানলপ সাহেব ছিলেন একজন নীলকর এবং নীলকুঠির ম্যানেজার। ডানলপ সাহেবের বিশ্বস্ত গোমস্তা ছিল পাচ্চরের কালী প্রসাদ নামে এক ব্যক্তি। ইংরেজরা নীলের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার বাসনা নিয়ে এই অঞ্চলে এসেছিলেন। আজ থেকে প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে এখানে এসে আউলিয়াপুর গ্রামের প্রায় ১২ একর জমির উপর নীলকুঠি স্থাপন করেন ডানলপ। কৃষকদের আপত্তির পরও তাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে কৃষকদের বাধ্য করা হয় নীল চাষে। তবে যে জমিতে নীল চাষ করা হয় সেই জমিতে ধান বা অন্য কোনও ফসল ফলে না বলে বাধা দেয় কৃষকরা।

নীল কুঠিয়াল ও তাদের দোসর জমিদারদের অত্যাচারে এই অঞ্চলের কৃষকরা যখন জর্জরিত ঠিক সেই সময় ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ এবং তার পুত্র পীর মহসিন উদ্দিন দুদু মিয়া নীল কুঠিয়ালদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এ সময় বৃহত্তর ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন। তিনি ও তার অনুসারীরা মুসলমান সমাজ ও কৃষকদের উপর ইংরেজ নীল কুঠিয়াল ও জমিদারদের নিপীড়ন-নির্যাতন মেনে নিতে পারেননি। ইংরেজ ও জমিদারদের হাত থেকে কৃষকদের রক্ষা করাই ছিল হাজী শরীয়তউল্লাহর উদ্দেশ্য। পরবর্তীতে শরীয়তপুর জেলা তারই নামে নামকরণ করা হয়। ১৮৪০ সালের ১৮ জানুয়ারি হাজী শরীয়তউল্লাহ মৃত্যুবরণ করলে তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব বর্তায় তার পুত্র পীর মহসিনউদ্দিন দুদু মিয়ার উপর। হাজী শরীয়তউল্লাহ মৃত্যুর পর ফরায়েজী নেতা ও অনুসারীরা পীর মহসিনউদ্দিন দুদু মিয়াকে ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা নির্বাচিত করেন। তখন থেকেই শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন। অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে ফরায়েজীদের নিয়ে গড়ে তোলেন এক বিশাল লাঠিয়াল বাহিনী। এই লাঠিয়াল বাহিনীকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সুসংগঠিত করে গড়ে তোলার দায়িত্ব দেন ফরিদপুরের বিখ্যাত লাঠিয়াল জালালউদ্দিন মোল্লাকে। এক বছরের মধ্যে লাঠিয়াল বাহিনী উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রস্তুত হয়ে ওঠে। পরের বছর ১৮৪১ সালে দুদু মিয়ার নেতৃত্বে তার বিশাল লাঠিয়াল বাহিনী ফরিদপুরের কানাইপুর জমিদার বাড়ি এবং ১৮৪২ সালে ফরিদপুরের আরেক জমিদার জয় নারায়ণ ঘোষের বাড়ি আক্রমণ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন। পরবর্তীতে দুদু মিয়াসহ ১২৭ জন ফরায়েজীর নামে মামলা হয়। মামলার রায়ে ২২ জনের ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পীর মহসীনউদ্দিন দুদু মিয়াসহ অন্যরা মামলা থেকে অব্যাহতি লাভ করেন। ১৮৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর পীর মহসীনউদ্দিন দুদু মিয়ার নেতৃত্বে তাঁ বিশাল লাঠিয়াল বাহিনী আউলিয়াপুর ডানলপ সাহেবের নীলকুঠি আক্রমণ করেন।

বর্তমানে বিলুপ্ত ডানলপ সাহেবের নীলকুঠির পূর্ব দিকে রয়েছে রণখোলা, পশ্চিমে আউলিয়াপুর বাজার, উত্তরে কালীতলা ও দক্ষিণে আউলিয়াপুর দরগা শরীফ। ১২ কক্ষ বিশিষ্ট এই কুঠির মাঝামাঝি অংশে রয়েছে চুল্লী, যেখানে নীল তৈরি করা হতো। চুল্লীর পাশেই রয়েছে প্রায় ৪০ ফুট উঁচু একটি চিমনী।

৯০ বছর বয়সের সিরাজ ফরায়জী বলেন, তখন এই আক্রমণের সংবাদ পেয়ে নীল কুঠিয়াল বাহিনীর একটি অংশ পালিয়ে যায়। ওইদিন রণখোলা নামক স্থানে দুইপক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ডানলপ বাহিনী পরাজিত হয়। ফলে জুলুম, অত্যাচার থেকে রক্ষা পায় কৃষকরা।

এই দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে নীল চাষ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ফরায়েজী আন্দোলনে নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর অনুসারীদের আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যায় নীলকররা। সেই নীলখামার থেকে নীলকুঠির নামের উৎপত্তি হয়। তবে এখনও দাঁড়িয়ে আছে সেই পুরনো চুল্লীর একটি চিমনী, যা ব্রিটিশ আমলের অত্যাচারের স্মৃতি বহন করে। পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারে ১৮০০ সালে জেলা শহরের অদূরে আউলিয়াপুর নীল চাষ হতো। এরই প্রেক্ষিতে ব্রিটিশের তৈরি নীলকুঠিটি সংরক্ষণের দাবি জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা ৬০ বছরের বৃদ্ধা ফিরোজা খাতুন বলেন, ‘আমি আমার শ্বশুর-শাশুড়ি থেকে শুনেছি, এখানে ইংরেজ ডানলপ সাহেবরা নীল তৈরির কারখানা করেছে। কৃষকরা তার এই নীল তৈরি করার কারখানায় কাজ করতে রাজি না হলেই তারা কৃষকদের মারত। কাজ না করলে তাদের ঘরের বাচ্চা কাচ্চা পরিবার সহকারে মারত। বাধ্য হয়ে তাদের কাজ করতে হইতো। তাদের তৈরি এই চুলার একটি চিমনী দেখতে অনেক লোক এখানে আসে। এটি যদি সরকারিভাবে পরিষ্কার করা হয় তাহলে আরও লোকজন এসে দেখে বিষয়টা বুঝতে পারবে যে এখানে আগে কৃষকদের অত্যাচার করেছিল এই ইংরেজরা।’

আবদুল ওহাব সরদার বলেন, ‘এখানে অনেক লোকজন আসে। বড় বড় কর্মকর্তারা এসে দেখে গেছে, বলছে এইটা উন্নয়ন করা হবে। আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু তারা এখনও উন্নয়ন করেনি।’

এ বিষয়ে মহামুদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাজাহান ঢালি বলেন, এই পুরনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা দরকার। তা না হলে মানুষ কিভাবে বুঝবে এখানে ইংরেজরা নীল চাষ করত আর নীল চাষ করার জন্য কৃষকদের বাধ্য করত কিন্তু কৃষকরা না করলে অত্যাচার করত। সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এ প্রসঙ্গে ছিলারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তৌফিক আকন বলেন, এই পুরনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য এটি সংস্কার করা দরকার। এ দর্শনীয় স্থানটিকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোক আসে। প্রাচীনকালে ইংরেজরা এখানে নীল তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছিল এবং নীল তৈরির জন্য কৃষকদের বাধ্য করত। নীল তৈরির কাজ না করলে তাদেরকে মারত। কালের বিবর্তনে এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন চুল্লীর একটি চিমনী আছে। এটি দেখার একটি ঐতিহাসিক বিষয়। যদি ওইভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয় তাহলে ইতিহাস থেকে ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। তাই আমি সরকারের কাছে সংস্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ডক্টর রহিমা খাতুন বলেন বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি এবং পর্যটক মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দেখা যাক কর্তৃপক্ষ কি সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্রুত আমরা সংস্কারের কাজ করা শুরু করব।

এসআইএইচ

 

 

 

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি