মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

‘আইইআরের প্রডাক্টদের অবদানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. এম. আবদুল হালিম। এবার তারা আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করেছেন। র‌্যালি, সেমিনার ও বিতর্ক হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিপুল কার্যক্রম রয়েছে সারা দেশ জুড়ে। তার সঙ্গে আলাপ করেছেন ওমর শাহেদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক হিসেবে এবারের সাক্ষরতা দিবস নিয়ে আপনার ভাবনা?
আমাদের লিটারেসিতে যে বিষয়টি বলা আছে, আমাদের সাক্ষরতা দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য যে বিষয়, সেটি তুমি নিশ্চয়ই জানো। প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল আসলে, কীভাবে লিটারেসিকে ট্রান্সফরম করা যায়, ‘টান্সফরমিং লিটারেসি’। এখন বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার সত্যিকারভাবে ৭৪.০৪ শতাংশ। এখনো কম। ব্যাপকসংখ্যক অর্থাৎ ২৫. ৯৬ শতাংশ’র মতো শিক্ষাথী কিন্তু লিটারেসির বাইরে আছেন। তাদের এই বয়স সীমা হলো, ১৫ থেকে ৪৫ বছর। সংখ্যায় যদি বলি, তারা ৩ কোটি ২০ লাখের মতো। রিপোর্টেও তুলেছে পত্র, পত্রিকার। এই ব্যাপক সংখ্যার নারী, পুরুষকে সাক্ষরতার বাইরে রেখে একটি দেশের পরিপূর্ণ উন্নয়ন কখনো, কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। এর কিন্তু বিশাল ও ব্যাপক প্রভাবও পড়ে। কারণ হলো, শিক্ষার যে আউটপুট সেখানে মৌলিক পার্থক্য ঘটে। সাক্ষরতা জ্ঞানসম্পন্ন একজন মানুষ ও নিরক্ষর একজন মানুষ-তাদের আয়, ইনকাম, রোজগারের মধ্যেও অনেক ডিফারেন্স রয়েছে। একজন জেনে, শুনে বুঝে আয়-রোজগার করছে। আরেকজন না জেনে, না বুঝে তার জীবন ও আয় রোজগারের পথে চলেছে। এখন তাদের অনেকে হয়তো বাহ্যিক বা সাময়িকভাবে বোঝার চেষ্টা করছেন, আমার সন্তান বা আমার নিজের এই লিটারেসি শিখে কী লাভ? বা আমার নিজের এই শিক্ষায় লাভ কী? তখন হয়তো এটি ভাবতেও পারেন যে, আসলে সাক্ষরতায় কী হবে? এজন্য একটি উদাহরণ যদি আমরা দেই-দুইজন একই স্টোরে বা দোকানে চাকরি করেন। মনে কর, কাপড়ের দোকানে; একজনের দেখা গেল, প্রমোশন হয়ে যাচ্ছে বারবার। কারণ তার লিটারেসি বা সাক্ষরতা জ্ঞান আছে। দৈনন্দিন হিসাব-নিকাশ রাখতে পারেন, লিখে রাখতে পারেন। যোগ-বিয়োগ করতে পারেন, সব খাতা কলমে লিখে রাখতে পারেন। তাতে ম্যানেজার ও মালিক হ্যাপি। আরেকজন নিরক্ষর কিন্তু সে শুধু বেচা-কেনায় ভালো ও পটু। কিন্তু সাক্ষরতা ও যোগাযোগীয় বা কোনো ধরণের হিসাবের কাজ রাখতে পারে না লিখে। স্বাভাবিকভাবে তাহলে তার একটি অংশ শুধু ভালো। যিনি সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন তার আউটপুটও তো অনেক বেশি। স্বাভাবিকভাবে বিশ্বব্যাপী সাক্ষরতা দিবসের যে অঙ্গীকার, একজন শিক্ষিত মানুষকেও যেন বেকার না থাকতে হয়। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে অঙ্গীকারটি এরকম যে, বঙ্গবন্ধু সরকার, তিনি যখন দেশ স্বাধীন করেছেন, তখন কিন্তু তার একটি অঙ্গীকার ছিল, একজনও নিরক্ষর থাকবেন না, রাখা হবে না। সেই বঙ্গবন্ধুর দেশ বাংলাদেশ, আমরা দেখি, এই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পর, পর তিনবার ক্ষমতায় এসেছে। তাদের ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনেও একটি বিশেষ অঙ্গীকার ছিল যে, নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়বেন। ২০১৮ সালে কিন্তু তারা তাদের এই অঙ্গীকারের কথা পরিস্কার বলেননি কিন্তু বলেছেন আরো এগিয়ে, সবাইকেই শিক্ষাদান করা হবে। এবার তারা সেই কমিটমেন্ট নিয়ে এসেছেন সাক্ষরতা দিবসের মাধ্যমে। এমনটি থাকা উচিত ও প্রয়োজন। কারণ একটি দেশ গড়তে হলে, মানুষের কাছে যেতে হলে প্রতিটি মানুষকে নিরক্ষর করতে হবে। তাদের যে অর্থনৈতিক ইনপুট, সেটি যেন তারা প্রতিজনে সঠিকভাবে দিতে পারেন, সেটি করা হলেই আমরা আসলে বলব, সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ গড়ার একটি অঙ্গীকার আমরা সাক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশের মাধ্যমে পাব।

দিবসটি এবার আপনারা কীভাবে পালন করেছেন? ইনস্টিটিউশনের প্রধান হিসেবে আপনার কর্মতৎপরতা কী ছিল?
এই দিবসটি আমরা প্রথমেই শুরু করেছি একটি র‌্যালির মাধ্যমে। এই সময়ে আমাদের সবারই পরীক্ষা চলছে। তাদের মধ্যে যাদের পরীক্ষা ছিল না, তাদের নিয়ে আমরা দিবসের জন্য কাজ করেছি আগে থেকে। তবে আমাদের সব ছাত্র, ছাত্রীরা শিক্ষা অনুষদের বলে অংশগ্রহণ করেছে। সাবেকরাও এসেছে। এজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের একটি পরীক্ষা ছিল এবং মিটিংও ছিল বিকেলের দিকে। তারপরও দিনটিকে কোনোভাবেই আমরা ভুলে যাইনি। আমাদের ইনস্টিটিউশনাল রেসপনসিবিলিটির মাধ্যমে পালন করেছি। মানুষের মধ্যে আরো সচেতনতা আনার জন্য ও আমাদের চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগানোর জন্য কাজ করেছি। আমরা সেমিনার করেছি। আমরা ভেবেছি, মানুষকে সচেতন করতে হবে ও নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমরা কিন্তু একটি লিটারেসি র‌্যালি তৈরি করেছি। সাক্ষরতা দিবসের র‌্যালিটি থেকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেছি। আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় ড. এম. আখতারুজ্জামান সেখানেও সম্পৃক্ত হয়েছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন। দেশের প্রতিথযশা শিক্ষাবিদ ও আইইআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালক এবং কিংবদন্তী কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমানে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি এসেছেন। আমরা সবাই দীর্ঘসময় আলোচনা করেছি, নানা ধরণের করণীয় জানিয়েছি। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেছি যে, সাক্ষরতার যে অবদান একটি জীবন পরিবর্তনের, একটি দিনবদলের অঙ্গীকার। বলেছি কীভাবে এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে আসা যায়। সেই বিশাল ফোকাসগুলো কিন্তু আমাদের এখান থেকে করা হয়েছে। এই কাজটিও আমরা করেছি।

র‌্যালি আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করেছে। আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নামকরা ছাত্র ও অধ্যাপক। আপনার কেমন লেগেছে?
আমরা সকালে র‌্যালি করেছি কিন্তু সকালে যতটা চিন্তা করেছিলাম যে আমাদের ভাইস চ্যালেন্সর মহোদয় তার সময় সংকটের কারণে আমাদেরকে সময় দিয়েছিলেন যে ১০টা সোয়া ১০টার মধ্যে আমাদের র‌্যালিটি শেষ করতে হবে কিন্তু আমাদের ছাত্র, ছাত্রী এবং অধ্যাপকরা সবাই একেবারে পৌনে নয়টার মধ্যেই এখানে এসে হাজির হয়েছি। আমাদের র‌্যালি এখান থেকে শুরু হয়েছে। সারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করেছে। র‌্যালির ব্যাপক প্রসারও কিন্তু হয়েছে। আমরা র‌্যালির ভেতরে থেকেই দেখেছি যে-অন্যান্য বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অফিস, সাধারণ জনতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অধ্যাপক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী ও তাদের পরিবার সবার মধ্যে একটি নতুন ডাইমেনশনের জন্ম হয়েছে। তারা সবাই এও বলেছেন যে, তারা আইইআর থেকে প্রতি বছর এই সাক্ষরতা দিবসের করেন। তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন জানানো আমাদেরও একটি দায়বদ্ধতা। তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা আমাদের দায়বোধের মধ্যেও নিয়ে আসতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা দেখেছি যে, ব্যাপক কাজ হয়েছে র‌্যালিতে। যদি সময় ও সুযোগ থাকলে তাকে বাইরে নিয়ে যেতে পারতাম! যেহেতু পরীক্ষা, পদ্ধতির কাজগুলোও চলছে; স্বাভাবিকভাবে আমরা আর ক্যাম্পাসের বাইরে যাইনি।

দিবসের যে আলোচনা সভা, অনন্য উদ্যোগ হয়েছে। শিরোনাম কী ছিল?
এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য তো ছিল ‘সাক্ষরতা অর্জন করি, দক্ষ হয়ে জীবন গড়ি’। সেমিনারে আমাদের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ও নামী শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দা তাহমিনা আখতার সভাপতিত্ব করেছেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল মালেক। আমাদের সেমিনারের বিষয় ছিল দিবসের শিরোনামই, ‘ট্রান্সফরমিং লিটারেসি ইন দি লার্নিং স্পেস (সাক্ষরতা শিখন ক্ষেত্রের প্রসার)’। অংশগ্রহণ করেছি আমি ও সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমানসহ সবাই। এই সেমিনারে আমরা আসলে আলোচনা নিয়ে এসেছিলাম যে, শিখন ক্ষেত্রের প্রসার কীভাবে করা যায়? যেমন আমরা বলেছি, শিক্ষা বা লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা যদি আমাদের ও সমাজের প্রতিটি ছাত্র, ছাত্রীকে কাজে লাগাতে পারি; সমাজের প্রতিজন শিক্ষিত মানুষকে কাজে লাগাতে পারি, একজন মানুষ যদি আরেকজনকে শিক্ষিত করেন, তিনি আবার আরেকজনকে শিক্ষিত করেন, তাহলে শিক্ষা ও সাক্ষরতা এবং শিক্ষিত করার কার্যক্রমটি স্প্রেড হয়ে যাবে। তাহলেও কেউ কিন্তু নিরক্ষর থাকে না। একারণে প্রত্যেক শিক্ষাথীর মধ্যে সবখানে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। এ কারণে একসময় ছিল এভাবে কাজ করলে শিক্ষার্থীকে মার্কিং করা হবে-এমন একটি ভালো ব্যবস্থা ছিল। তবে মার্কিং ব্যবস্থায় না গিয়েও এখন কোনো একজন ছাত্র বা ছাত্রী এসএসসি পাশ করেছে, বসে আছে; দুইজন, তিনজনকে সাক্ষরতা দান করেছে। এমনভাবেও খুব ভালো কাজ হয়। যারা শিক্ষিত সমাজ, তারা এভাবে কোনো না কোনো উপায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে, তাদের প্রতিজনের দায়িত্ব রয়েছে মানুষ ও সমাজের প্রতি, তারা সমাজ ও দেশের জন্য এভাবেও তো কাজ করতে পারেন। তাহলে সাক্ষরতার হার অবশ্যই বেড়ে যাবে। ফলে সামাজিক মূল্যবোধও তারা আরো ভালোভাবে বুঝতে শিখবেন। এই ধরণের কিছু বিষয়ও আমরা এখানে হাজির করেছি। আরো বলেছি, এই কাজগুলোও কিন্তু করা যায়। এছাড়াও দেশের রাজনৈতিক অঙ্গীকারকেও আমাদের আলোচনায় হাজির করা হয়েছে, যেন তারা যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করেন। তাহলেও শিক্ষার হার বেড়ে যাবে। আবার অফিশিয়াল যেসব প্রকল্প আছে, কাজ আছে, বাংলাদেশে সরকারের নন-ফরমাল, প্রাইমারি এডুকেশনের যেসব প্রকল্প আছে, যারা গণ সাক্ষরতার ওপর কাজ করছেন, তাদের সবার আরো কার্যকর অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। এই বক্তব্যগুলোও আমরা এখানে যুক্তিনির্ভরভাবে তুলে ধরেছি।

আপনি কী বলেছেন স্যার?
আমার মূল বক্তব্য হলো, জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে শিক্ষার হার বাড়াতে হবে, সবাইকে যথাযথভাবে শিক্ষিত করতে হবে। যারা নিরক্ষর আছেন, তাদেরকে কোনোভাবে পিছিয়ে রাখা যাবে না, অবহেলা করা যাবে না, তাদেরকে পেছনে ঠেলেও দেওয়া যাবে না। এই সমাজ ব্যবস্থায় প্রত্যেককে সাক্ষরতা প্রদানের মাধ্যমে সমাজের মূল ধারায়, এডুকেশনের মেইন স্ট্রিমে নিয়ে আসতে হবে। নিরক্ষরদের সাক্ষরতা প্রদান করতেই হবে।

আর আয়োজন?
এরপর আমরা ছাত্র, ছাত্রীদের আইইআর ডিবেটিং ক্লাবের মাধ্যমে ‘লিটারেসি অ্যান্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। আমাদের সংগঠনটির ফেসবুক গ্রুপে সরাসরি সম্প্রচারিতও হয়েছে।

আপনাদের অসংখ্য ছাত্র, ছাত্রী এখন এডুকেশন এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করেন। এনজিওতে চাকরি করেন, সরকারী চাকরি করেন। পিটিআই, সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তাদের শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান কেমন বলে আপনার মনে হয়?
শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক যে অবদান সেটি তো আছেই, আমাদের ছেলেমেয়েরা তো কাজ করছেই। তাদের কাজ খুব ভালো এবং অতি উচ্চমানের। তারা সারা বাংলাদেশে আছে, জিও (গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন), এনজিতে (বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা) চাকরি করছে। বিশেষ করে এই আইইআর থেকে যারা গ্রাজুয়েট হয়েছে, তারা বাংলাদেশের শিক্ষা এবং উন্নয়ন খাতে নেতৃত্ব দান করছে। তারা বিশাল ভূমিকা রাখছে। আলটিমেটলি আমাদের অবশ্যই বড় ভূমিকা আছে। নিরক্ষরতা দূরীকরণে তাদের ও উন্নয়ন খাতের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাদের যে কাজ এবং কার্যক্রম সেটির ন্যাশনালিও বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাদের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতাও অনেক রয়েছে। রাখছেও। তাদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কাজ আমাদের জন্য গর্বের। আইইআরের প্রডাক্ট, আমাদের এই সন্তানদের অবদানকে খাটো করে কখনো দেখার কোনো সুযোগ কোথাও নেই।

(১৩ সেপ্টেম্বর, আইইআর, পরিচালকের কার্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।)

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য