ভোগ বিলাসের ভাগাড়ে স্বার্থহীন এক রাজনীতিবিদ
যখন সবখানে মূল্যবোধের অবক্ষয়, ব্যক্তি স্বার্থের হীন প্রতিযোগিতা, ভোগবিলাসের বাগাড়ম্বর, ঠিক তখন বরগুনার একজন মোতালেব মৃধা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হয়েও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধে থাকা যায়। উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে সারা দেশের তরুণ প্রজন্মকে তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন- মুখে নয়, বুকেও নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হয় যাপিত জীবনের সাথে। শুধুই মাঠে আর মঞ্চে নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হয় ব্যক্তি জীবন থেকে পারিবারিক জীবনেও।
ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হয়েও সারাটা জীবন বেসরকারি একটি এনজিওর চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন যিনি। প্রাচুর্যকে পায়ে ঠেলে সাদামাটা জীবনকেই বরণ করে নিয়েছেন যিনি। বঙ্গবন্ধুর আহবানে একাত্তরের রণাঙ্গনে গর্জে উঠেছিল যার হাতিয়ার। পঁচাত্তরের নিথর-নির্বাক-বিরান বাংলাদেশের যিনি ছিলেন প্রথম প্রতিবাদকারী। শৈশব থেকে জীবন সায়াহ্নে এসেও যিনি গেয়ে যান সোনার বাংলার গান।
তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বরগুনা জেলা এনজিও উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা। সমকালীন প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন দলের হাজারো নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে সাহসীকতা, সততা আর ত্যাগের নিক্তিতে যদি মাত্র পাঁচ জন নেতাকেও বাছাই করা হয় তবে সেখানেও বরগুনার মোতালেব মৃধা থাকবেন সর্বাগ্রে।
তারুণ্যের স্বর্ণালী সময়ের সবটুকু সময় যিনি উজার করে দিয়েছেন সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে। দেশ-বিদেশের লোভনীয় চাকরি-বাকরি আর ব্যবসা-বাণিজ্যের মোহনীয় হাতছানিকে উপেক্ষা করে যিনি পিছিয়ে পড়া নিজ ইউনিয়নের গরিব দুঃখী মেহনতি মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব। সেই থেকে আজ অবধি সুদীর্ঘ এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন মোতালেব মৃধার।
মোতালেব মৃধা মনে করেন, রাজনীতি নেশা হতে পারে, তবে কখনোই তা পেশা হতে পারেনা। আর তাই নিজে যেমন সারা জীবন বেসরকারি একটি এনজিওতে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন, ঠিক তেমনি নিজের দুই ছেলেকেও গড়ে তুলেছেন তিনি নিজের মত করে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে যারা ছাত্রলীগ আর আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে ছিলেন ওতোপ্রতোভাবে। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থের কলঙ্ক যাদের তিল পরিমান স্পর্শ করতে পারেনি।
উপকূল বাংলাদেশের অবহেলিত জনপদ বরগুনা ও বরগুনাবাসীর উন্নয়নে সকল প্রকার আন্দোলন সংগ্রামে সর্বাগ্রে যাকে দেখা যায় তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা। উপকূলীয় জনপদ বরগুনার সুখ দুঃখের চির সাথী তিনি। সত্তরোর্ধ বয়সের রাজর্ষিক এই নেতার ন্যায়নিষ্ঠতা, বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর আর দীর্ঘদেহী সুদর্শন চেহারা যেন তরুণ প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথাই মনে করিয়ে দেয় বারবার।
সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সৎ, শিক্ষিত, ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন করবে আওয়ামী লীগ। সেসব বিবেচনায় বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়ন পেতে মোতালেব মৃধাকে কেন্দ্র করেই এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন তৃনমুল আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের নেতা কর্মীরা। বিশেষ করে ১৯৭৫-এর পর যাঁরা দুঃসময়ে দলের হাল ধরেছিলেন, এখনো এমপি-মন্ত্রী কিংবা জেলা পরিষদের প্রশাসক এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকও হতে পারেননি এমন নেতাদের মধ্যে মোতালেব মৃধা অন্যতম প্রধান।
দুই মেয়াদে যাঁরা জেলা পরিষদের দায়িত্বে ছিলেন এবার তাঁদের অধিকাংশই বাদ পড়বেন দলীয় মনোনয়ন থেকে। এবার নতুন মুখ এবং দুঃসময়ের কর্মীদের মূল্যায়ন করতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পর যখন দেশ চষে বেড়িয়েছেন, তখন যেসব পুরনো নেতা পেয়েছিলেন, যাঁরা এখনো জীবিত, সব ধরনের যোগ্যতা-দক্ষতা থাকার পরেও কিছুই পাননি তাঁদের মধ্যেও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা রয়েছেন সর্বাগ্রে।
জাতির পিতার হত্যার পর যাঁরা দলের হাল ধরে ছিলেন, নির্যাতন, কষ্ট সহ্য করেছেন, দিনের পর দিন বন্দী থেকেছেন কারাগারে, যাঁরা বুকে পাথর বেঁধে দল করেছেন, এখনও জীবিত রয়েছেন এবং শারীরিকভাবে সক্ষম রয়েছেন সেসব নেতার মধ্যেও মোতালেব মৃধা রয়েছেন সর্বাগ্রে। এসব বিবেচনায় বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় মনোনয়ন পেতে মোতালেব মৃধাকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন মোতালেব মৃধা সমর্থিত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা।
এএজেড