মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আমাদের বুয়েট

লেখা : প্রকৌশলী রনক আহসান, সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং), ব্যাচ-২০০৪, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। সম্মানি সহ-সাধারণ সম্পাদক, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ(আইইবি)


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)’র ছাত্র, ছাত্রীদের এখন কেউ অধ্যাপক। আমরা ছাত্র, ছাত্রীদের মধ্যে কেউ মধ্যম মানের, কেউ ফাঁকিবাজ, আমার মতো কেউ ব্যাপক ফাঁকিবাজ। কেউ ২ থেকে ৪টা ভালোবাসার চেষ্টা একত্রে করেছেন, কেউ এক প্রেমেই লাইফ পার। কেউ গেমার, কেউ বিতার্কিক, কেউ বুয়েট ফিল্ম সোসাইটি, ড্যান্স ক্লাব, মূর্ছনা, এনভায়রনমেন্টাল ওয়াচ বা সত্যেন বোস বিজ্ঞান ক্লাবের মেম্বার। কেউ ১-২টা টিউশনি, কেউ কয়েকটি, কোচিং চালান আবার কেউ স্টার্ট-আপ করেন। বিদেশে ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থক, বাইডেন, কারো আমার মতো ট্রাম্প। ব্যক্তিজীবনে তাবলীগ করেন, খেলাধুলায় ইন্টারেস্ট, গান-বাজনা, সুফিবাদে, পীরভক্ত, পূজা-অর্চনা করেন। রোটারি ক্লাবে, স্কাউটিং, বাঁধনের কর্মী, পরিবেশবাদী, সংগঠক, পেশাজীবী, পেশাভিত্তিক সংগঠক এখন। বুয়েট গ্রাজুয়েট ক্লাব বা আইইবিতে ইনভলভ। বুয়েট অ্যালামনাইতে অ্যাক্টিভ। আমাদের ছেলেমেয়েদের কোনো কোনোজনের গবেষক, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ঝোঁক। কারো লেখক, বিখ্যাত গায়ক হওয়ার চেষ্টা আছে। বুয়েটিয়ান নামের আমরা ভার্সেটাইল কোয়ালিটির। প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ফিল্ডে সেরাদের একজন হওয়ার মতো প্রতিভা আছে। এই বুয়েটের সৌন্দর্য্য ও বৈশিষ্ট্য।
বুয়েটিয়ানদের মধ্যে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করেছেন, সংখ্যাটি টোটাল ১০% হবে। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রফ্রন্ট, হয়তো শিবির করেছেন। আমরা যারা একসময় বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি করেছি, আমরা কিন্তু বুয়েট কমিউনিটিরই অংশ। ছাত্র ইউনিয়নের অনেক সাবেক নেতৃবৃন্দ যেমন হাসানুল হক ইনু; তাদের গর্বের সঙ্গে বলতে শুনেছি, একসময় ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতেন। রাজনৈতিক কর্মীদের জীবন এমন। যারা মন থেকে দলীয় নীতি ও আদর্শে বিশ্বাস করেন, তারাও পলিটিক্যাল আইডিওলজি নিয়ে গর্ব করেন। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো মতই অন্যদের সঙ্গে নিজের আইডিওলজি নিয়ে ডিবেট করেন।
অনেকেই মনে করেন বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি করেছেন, তারা ভাদাইম্যা, দেশে তাদের কোন অবদান নেই। আপনারা কী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির সম্পাদক আবদুস সবুর সাহেবকে জানেন? বিএনপির অন্যতম পলিসি মেকার ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে চেনেন? হাসানুল হক ইনু, জি.এম. কাদের বা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কে জানেন? মুফতি কাসেদ, শাফি ইমাম রুমী বা কুড়িগ্রামের রৌমারী মুক্তাঞ্চলের পাকবাহিনীর ত্রাস নুরুন্নবী চৌধুরী, বীরবিক্রম’কে চিনেন? ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয়য় প্রেসিডেন্ট যে একজন বুয়েটিয়ান জানেন? তারা যেসব পদ অলংকৃত করেছেন, যেসব দায়িত্ব পালন করেছেন সেগুলো কী বুয়েটের ছাত্র, ছাত্রী হিসেবে আপনাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না? না জেনেও যদি নিজেকে রাজনীতি সচেতন দাবী করেন, তাহলে বলব, এখনো রাজনীতি সচেতন হতে পারেননি। আসলে নিজেই একজন ভাদাইম্যা।
আমরা যারা বুয়েটের সাবেক ছাত্র ও একসময় বুয়েট ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, আমাদের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীবৃন্দ’। 'সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী' আমার আইডেন্টিটির অংশ। আরো অনেকের মতো সবসময় গর্বের সঙ্গে বলি, আমি বুয়েট ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। ছাত্রলীগকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে এখানে আমাদের আরেকটি জীবন, জগত ও স্বপ্ন।
বিগত একযুগে বুয়েট ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীদের জন্য ক্যাম্পাসে ‘ছাত্রলীগ’ ঘৃণা হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এই ছাত্রলীগের একমাত্র পরিচয় নয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বুয়েটে যারা কর্মী ছিলেন, যারা চিন্তা করেননি, আওয়ামী লীগ কখনো রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে, বলতে পারেন তারা কোন স্বার্থে লীগ করতেন? তারা হলেন সেই জেনারেশন, যাদের কাছে 'ছাত্রলীগ' আবেগ ও ভালোবাসা, যাদের কাছে ‘বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী’ গৌরবাজ্জ্বল আরেক আত্ম-পরিচয়।
‘বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ’ জানেন, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুয়েটে একসঙ্গে বসলেই দলীয় লেজুড়বৃত্তিক প্রগ্রাম হয়ে যায় না। আমরা সাবেক নেতৃবৃন্দ এই বুয়েটেরই প্রাক্তন ছাত্র। আওয়ামী লীগ বা কোনো সহ-সংগঠনের প্রগ্রাম করতে আসিনি। আমাদের ক্যাম্পাসে স্বপরিচয়ে আসার অধিকার আমারও আছে। বুয়েটে বাঁধনকর্মী বা কোন ব্যাচ প্রাক্তনী, তাবলিগ কর্মী বা অন্য কোন পরিচয়ে বুয়েটে আসতে চান, আসেন; আমি আমার বুয়েটে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী পরিচয়েও আসতে প্রেফার করি। এই পরিচয় শুধু একই মতাদর্শের সাবেক কর্মীদের একত্রে গেট টুগেদার।
রানিং ভাই-বোনদের কেউ যদি বলতে পারেন, আমরা কেউ আপনাদের ছাত্রলীগ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছি, তাহলে আমাদের অপরাধী করবেন। এই ধরনের একটি উদাহরণ দেখাতে পারবেন? ১৩ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের আগে এই উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানে বুয়েটের বর্তমান কোনো ছাত্র, ছাত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বুয়েটিয়ান ছাড়া অন্য কেউ সেখানে উপস্থিতও ছিলেন না। সেখানে উনসত্তরের গনঅভ্যুত্থানে সক্রিয় আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দসহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নানা সময়ের নেতাকর্মী প্রত্যেকেই পেশাজীবনে সফল। স্মৃতিচারণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো, গর্বে বলেছেন বঙ্গবন্ধুর সাহচর্য, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, বুয়েটে যৌবনের সোনাঝরা দিনগুলো।
যারা মনে করছেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের ১৩ আগস্টের প্রগ্রামটি বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে, তারা ভুল বুঝছেন। কোনো রানিং স্টুডেন্টকে আমরা কখনো বলিনি অ্যাটেন্ড করতে। পড়ালেখা করতে বলেছি। শহীদ আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে অ্যলামনাইদের প্রতিবাদ, কর্মসূচিগুলোতে আমরা বুয়েট ছাত্রলীগের অনেক সাবেক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছি। শ্রদ্ধেয় জে.আর.সি. স্যারের নেতৃত্বেও। আমরা সবসময় আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছি। বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ ছাত্র, ছাত্রীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছি। তবে যতদিন বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে, ততদিন আমরা কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। তবে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী ভাইবোনদের অনুরোধ, সচেতন থাকতে। ‘ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সংগঠন’-এ জাতীয় শ্লোগান কারা দেন? তাদের দেখা উচিত। অনুরোধ, সচেতন থাকতে যেন মৌলবাদ ও উগ্রবাদের আঁতুড়ঘর বুয়েট হয়।
আচ্ছা, যে সংগঠনটি করতে গিয়ে আরিফ রায়হান দীপ জীবন দিলেন, তাদের পক্ষ থেকে তার জন্য সামান্য দোয়া করতে মৃত্যুস্থানে বাবা, ভাইয়েরা যেতে পারবেন না? দীপের গেলবারের মৃত্যুবার্ষিকীতে বাবা বললেন, "আজকে এই দিনে আমি তোমাদের দেখে দীপকে কিছু সময়ের জন্য খুঁজে পেলাম। বেঁচে থাকলে এই বয়সে দেখতে কেমন হত, সে অনুভূতি পেলাম।’ তার কথা মিথ্যে হয়ে যাবে? ২০১৪ সাল থেকে এই বছর পর্যন্ত তার বাবা ছেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সন্তানের স্মৃতিফলকে এসেছেন। এই অধিকার আপনারা কেড়ে নিতে চান?
আমরা দীপের স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা জানালে আপনাদের খারাপ লাগে, কিন্তু সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সাবেকুন নাহার সনির স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা জানালে ভালো লাগে? এ আপনাদের কেমন দ্বীচারিতা? উল্লেখ্য, সনি আপুর মৃত্যুবার্ষিকীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের ভাইবোনদের পাশে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীবৃন্দ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আমিও সকালে বুয়েটে গিয়েছি, প্রগ্রাম শেষে আপুর পরিবার ও সনি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনে ছিলাম সারাদিন। বিশ্বাস করি, আমার মতই সাবেক বুয়েটিয়ানদের রাজনৈতিক কর্মীর অধিকার আছে, স্বপরিচয়ে বুয়েটে বসা, সামাজিক ও জাতীয় প্রগ্রামে অংশগ্রহণের। ছাত্র শিবির ব্যতীত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তো দলীয় ব্যক্তি নন, তাকে নিয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীবৃন্দের দোয়া অনুষ্ঠান মোটেও রাজনৈতিক বা দলীয় কাজ হতে পারে না। আর দিন শেষে পরিচয়- আমি একজন গর্বিত বুয়েটিয়ান। আমি ছাত্রলীগ, বুয়েট শাখার সাবেক গর্বিত কর্মী।
একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আইনী বিষয় জড়িত থাকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কার্যকর করতে ৩৫ বছর লেগেছে। এদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাম্পাসভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের কখনো কোনো বিচার হয়নি। সনি আপুর হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি, এমনকী ছাত্রলীগ কর্মী দীপ হত্যার সুষ্ঠু বিচার অধরা আছে কিন্তু আবরার হত্যার বিচার হচ্ছে। বুয়েটিয়ানরা স্বীকার করেন আর না করেন, সত্য এই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছ্বায় নিম্ন আদালতে আবরার হত্যার বিচার কাজ সর্বোচ্চ গতিতে সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বাস করি দ্রুততম সময়ে এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যকর করবেন প্রধানমন্ত্রী। আরো মনে করি, আবরারের ফ্যামিলির উচিত আপামর মানুষ, বুয়েটিয়ান কমিউনিটির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে স্মরণসভা, দোয়া আয়োজনে বুয়েটের ছাত্র-ছাত্রী ভাইবোনদের ধন্যবাদ। আমরা বুয়েটিয়ানরা পরিবার। যেন বজায় রাখি। আমাদের একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে জানলাম, আজকের ছাত্র, ছাত্রীদের কেউ ভয় পাচ্ছেন, পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দরা সবাইকে আশ্বস্ত করছি, এমন কিছুই ঘটবে না। তার মানে এই নয়, বুয়েট ক্যাম্পাসে বাইরের কোনো, প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হস্তক্ষেপ আমরা মেনে নেব। বুয়েট বুয়েটিয়ানদের আছে, ছিল, থাকবে। ক্যাম্পাসে বাঘের মত সাহস নিয়ে যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো কাটাব। দ্যাটস দি স্পিরিট।

ওএফএস।

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য