মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ঋতুভেদে বদলায় নওগাঁর জবই বিলের রূপ

নানা বৈচিত্র্যে ভরা আমাদের এ বাংলাদেশ। প্রকৃতি অকৃত্রিম ভালবাসায় এ দেশটি সাজিয়েছে। বাংলাদেশের অপার সৌন্দর্য পর্যটকদের হৃদয়স্পর্শ করে। প্রকৃতির অকৃত্রিম, অনাবিল, অফুরন্ত বহুমাত্রিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। তেমনই এক মন প্রশান্ত করা ও নয়ন জুড়ানো দর্শনীয় স্থান হলো নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জবই বিল। প্রতিদিনের যান্ত্রিক জীবন থেকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নওগাঁয় জবই বিলের কোনো জুড়ি নেই।

বিলটিতে সারা বছর পানি থাকলেও ঋতুভেদে এখানকার রূপ ও সৌন্দর্য বদলায়। বর্ষায় বিলের চারিদিকে বিস্তৃর্ণ জলরাশির এক নয়ানাভিরাম সৌন্দর্যের দেখা মিলে জবই বিল এলাকায়। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে পানি আর পানি। এ সময় বিলের চারপাশের গ্রামগুলোকে দূরের কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বলে মনে হয়। স্বচ্ছ পানিতে মেঘের আনাগোনার প্রতিচ্ছবি বিলের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়। সব মিলিয়ে বর্ষাকালে জবই বিল এলাকায় চোখজুড়ানো দৃশ্যপট তৈরি হয়। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় পুরো বিল পানিতে নিমজ্জিত থাকার পর বিলের অধিকাংশ এলাকা জেগে ওঠে। শুষ্ক মৌসুমে বিলের মাঝে জমে থাকা জলরাশি থেকে আসা শীতল হওয়া ও পড়ন্ত বিকেলে মিষ্টি রোদের ছড়াছড়ি জবই বিলকে এক শিল্পীর হাতের সুনিপণ চিত্রপটের রূপ দেয়। তবে জবই বিলকে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের সবচেয়ে আকৃষ্ট করে শীতকালে। শীতের কুয়াশায় আচ্ছন্ন জবই বিল নানা ধরনের পাখির কলরবে মুখর হয়ে ওঠে। সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর শীতপ্রধান এলাকা থেকে আসা পরিযায়ী পাখি আর নানান ধরনের দেশি পাখির বিলের জলাশয়ে খাবারের খুঁজে বিচরণ করে। আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়তে থাকা হাজারো পাখি দেখে দর্শনার্থীরা পুলকিত হন।

সাপাহার উপজেলার আইহাই ইউনিয়নে ভারত সীমান্তঘেঁষে বিলটির অবস্থান। ঐতিহ্যবাহী বিলটির উত্তরে ভারত থেকে উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণে পুনর্ভবা নদীতে মিলিত হয়েছে। এক সময় যুগ যুগ ধরে বিলটি সাপাহার উপজেলাবাসীকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল। ১৯৯৯ সালে জবই বিলের মাঝ দিয়ে নির্মিত ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাকা সড়ক ও ২০০ মিটার দীর্ঘবিশিষ্ট দুটি সেতু দ্বারা উপজেলাবাসীর এ বিভক্তি মোচন হয়। বিলের ভেতর দিয়ে যাওয়া সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা। ঘুরতে আসা মানুষের সুবিধার জন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে কংক্রিটের ছাউনি।

সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, জবই বিলের আয়তন ৯৯০ একর বা ৪ বর্গকিলোমিটার। আগে এ বিল দামুর মাহিল নামে পরিচিত ছিল। বিলের উত্তরের অংশকে বলা হতো দামুর বিল ও দক্ষিণ অংশকে বলা হতো মাহিল বিল। তবে বিলটি জবই গ্রামের পাশে অবস্থিত হওয়ায় এটি বর্তমানে জবই বিল নামেই অধিক পরিচিত।

জবই বিলে এক সময় বাইচ (মাছ ধরার প্রতিযোগিতা) হতো। আগে সেখানে জাল যার জলা তার নীতি ছিল। বিলের আশপাশের হাজার হাজার মানুষ বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে বিলটি বেশ কিছু বছর ধরে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়ায় সেখানে বর্তমানে বাইচ হয় না। জেলেরা মাছ ধরা ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

জবই বিলের পশ্চিম তীরবর্তী পাহাড়িপুকুর গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল গফুর মণ্ডল বলেন, ‘২০-২৫ বছর আগেও এ বাইচ হইছে। প্রতি বছর খরার সময় বিলের পানি কমে গেলে পলো (বাঁশ ও বেতের সংমিশ্রণে তৈরি মাছ ধরার যন্ত্র) নিয়ে বিলের আশপাশের গ্রামের মানুষ ছাড়াও সাপাহার, পত্নীতলা ও পোরশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ মাছ ধরতে আসতেন। সপ্তাহের দুই দিন রোববার বিলের উত্তর অংশে ও মঙ্গলবার দিন বিলের দক্ষিণ অংশে বাইচ হতো। হাজার হাজার মানুষের মাছ ধরার সেই দৃশ্য আজও চোখের সামনে ভাসে। ৩০-৪০ কেজি ওজনের বোয়াল, আইড়, গজারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ত। বড় বড় মাছের আঘাতে প্রতি বছর বাইচে দুই-একজন মানুষের মৃত্যু হতো। এজন্য এলাকার লোকজন এ বিলকে মানুষ খেকো বিল বলে ডাকত। তবে যখন থেকে বিলে মাছ চাষের জন্য সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া শুরু হয়েছে তখন থেকে এখানে আর বাইচ হয় না।’

জবই বিলের সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করতে চাইলে রোদের বিষয়টি মাথায় রেখে এখানে আসতে হবে। এখানে সকাল কিংবা বিকেলের দিকে আড্ডা দেওয়ার উপযুক্ত সময়। তবে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা অনেকেই খাবারের আবর্জনা ফেলে এখানকার পরিবেশ নোংরা করে ফেলেন।

বিলের পথ দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকা। বিলে ঘুরতে আসা মানুষের ঘোরার জন্য বিলের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া সড়কে ভেড়ানো থাকে নৌকা। টাকার বিনিময়ে স্থানীয় মাঝিরা নৌকায় করে দর্শনার্থীদের বিল ঘুরে দেখান। দিন শেষে যখন আলো ফুরিয়ে যায়, জবই বিলের সৌন্দর্য যেন আরও বেড়ে যায়। চাঁদের আলোয় দেখা যায় অপরূপ গ্রামবাংলা।

জবই বিলে অতিথি পাখির পর্যাপ্ত খাবার থাকায় প্রতি বছর শীতের মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বালিহাঁস, পাতি সরালীসহ জানা-অজানা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে বিলে। পাখির কিচিরমিচিরে সব সময় মুখরিত থাকে। বিলের ছোট ছোট মাছ, জলজ পোকা-মাকড় এবং শামুকই মূলত তাদের প্রধান খাদ্য। অতিথি পাখি ছাড়াও সারা বছর দেশি নানা প্রজাতির পাখির বিচরণ দেখা যায় এ বিলে।

জবই বিলের জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে সেখানে গড়ে উঠেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটি নামে ওই সংগঠনের সদস্যরা পরিযায়ী পাখিসহ যেকোনো দেশি পাখি শিকার বন্ধে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ বলেন, আগে যখন এ বিলে জাল যার জলা তার নীতি ছিল, তখন এখানে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। বিলের আশপাশের গ্রামের জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বিলে জলজ উদ্ভিদও প্রচুর পরিমাণে ছিল। তবে যখন থেকে বিলটি মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়া শুরু হয়েছে, তখন থেকে বিলে আর দেশি মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষের ফলে বিলের জলজ সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী এ বিলের ইকোসিস্টেমের কথা চিন্তা করে এখানে বাণিজ্যিক মাছ চাষ বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে এ বিলে আশপাশের গ্রামের পরিচয় সনদধারী জেলেরা এখানে মাছ আহরণ করে থাকেন। এর ফলে এ বিলে আবারও দেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যাচ্ছে। জলজ সম্পদও সমৃদ্ধ হচ্ছে।

জবই বিলে ঘুরে বেড়ানোর প্রকৃত সময় বর্ষাকাল ও শীতকাল। নওগাঁ জেলা শহর থেকে জবই বিলের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। সেখানে যেতে হলে পর্যটকেরা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানে রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দর যেতে পারবেন। রাজশাহী থেকে এরপর নওগাঁর সাপাহার উপজেলা সদর পর্যন্ত বিআরটিসিসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাসে করে আসতে পারবেন। এ ছাড়া ট্রেনে ঢাকা থেকে সান্তাহার রেলস্টেশন নামতে হবে। সেখান থেকে বাস কিংবা অটোরিকশার মাধ্যমে জবই বিলে যাওয়া যাবে। আবার ঢাকা থেকে বিভিন্ন জনপ্রিয় পরিবহনের এসি বা নন-এসি বাস করে সরাসরি সাপাহারে যাওয়া যাবে। সেখানে থেকে সিএনজি, অটোরিকশা কিংবা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে করে জবই বিলে যেতে পারবেন।

সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, ‘জবই বিলের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি বিলের মাঝ দিয়ে যাওয়া সড়কে জবই সেতু ও মাসনাতলা সেতুর সংযোগ সড়কের উভয় পাশে পিলার বসানো হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের পরিকল্পনা আছে দর্শনার্থীদের বসার জন্য বিলের মাঝ দিয়ে যাওয়া রাস্তায় কংক্রিটের বেঞ্চ তৈরি করা হবে। এ ছাড়া বিলের রাস্তা থেকে বিলের মাঝ বরাবর গিয়ে সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ঝুলন্ত রাস্তা তৈরি করা হবে। আশা করা যাচ্ছে চলতি অর্থবছরে এসব পরিকল্পনা দৃশ্যমান হবে। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরির পাশাপাশি জবই বিলের ইকোসিস্টেম রক্ষার জন্য প্রশাসন সব সময় সচেষ্ট রয়েছে।’

এসএন

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য