সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই বাড়তে থাকে পাখির আনাগোনা
নওগাঁ জেলার শেষ সিমানায় সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনের গাছগুলোতে বিকেল হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি এসে বসে। এসময় পাখির কিচিরমিচির আর কলরবে যেন ব্যস্ত হয়ে যায় এলাকাটি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে যতই অন্ধকার নেমে আসে ততই পাখির আনাগোনা বাড়তে থাকে। সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলায় অবস্থিত। স্টেশনে রয়েছে ২ টি কৃষ্ণচূড়াসহ নানান গাছ।
গাছগুলোই পাখিদের নিরাপদ আবাস। বিকেল হলেই গাছের ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে শুধু পাখিই দেখা যায়। ট্রেনের হুইসেলতে অপেক্ষমাণ মানুষ ঠিক তখনই ঝাঁক ঝাঁক পাখির এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি দেখে থেমে যান যাত্রীরা। অপেক্ষার মাঝেও চড়ুইগুলোর এমন দুষ্টুমির দৃশ্য এক পলক দেখার লোভ সামলাতে পারেন না তারা।
এসময় ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা মুখগুলী তাকিয়ে তাকিয়ে পাখির ডাক শুনে আনন্দ পান তারা। সন্ধ্যা নামলেই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে এলাকাটি। পাখিদের এমন দুষ্টুমিতে একটুও অতিষ্ঠ হন না গাছগুলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষরা। উল্টো কেউ যেন পাখির কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে করা নজর তাদের।
স্টেশন টিকিট মাস্টার মতিউর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, সারাদিন যখন পাখিগুলো থাকে না তখন মনে হয় তাদের মাঝে কি যেন নেই। পাখির ঝাঁক দেখে আর কোলাহল ডাকে ট্রেন যাত্রা শেষে ক্লান্ত হয়ে ফেরা মানুষগুলোর মনে প্রশান্তি ফিরে আসে। বিকেলে কান্ত মনে যখন পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনা যায় তখন তাদের মন প্রশান্ত হয়ে যায়।
ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী নুরুন্নবী ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এ রেলস্টেশনে প্রবেশ করলেই মনটা জুড়িয়ে যায়। কোনো প্রকার হট্টগোল বা ঠেলাঠেলি নেই। এখানে সবই সুন্দর পরিবেশে পরিচালিত হচ্ছে। আজ ট্রেন বিলম্বিত মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে যায়। তখন স্টেশনের চড়ুইগুলোর এমন দুষ্টুমির দৃশ্য এক পলক দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। এ রকম পরিবেশ অন্যান্য রেলস্টেশনে হওয়া প্রয়োজন। তাহলে রেল ভ্রমণের প্রতি যাত্রীরা আরও বেশি আগ্রহী হবেন।
কথা হয় টমটম চালক দুলালের সঙ্গে, তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, 'এতোগুলো চড়ুই পাখি একসঙ্গে দেখলেই ভালো লাগে। তাদের ওড়াউড়ি আর কিচিরমিচির শব্দ শুনলে যে কারও মন ভালো হয়ে যাবে। আমি স্টেশনে টমটম নিয়ে আসলে কৃষ্ণতলার নিচে বসি শুধু এই পাখিগুলো দেখতে আর তাদের কণ্ঠে গান শুনতে'।
এ বিষয়ে সান্তাহার স্টেশন মাস্টার মাহমুদ রেজাউল করিম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, চড়ুই পাখি জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে। যার কারণে এদের বলা হয় স্প্যারো। যেহেতু এই পাখি জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে, সেজন্য কেউ যাতে এই পাখিদের মারার চেষ্টা না করে,সে বিষয়ে সকলকে সচেতন করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের রক্ষণাবেক্ষণে স্টেশনের পক্ষে বেশ কিছু উদ্যোগ শিগগিরি নেওয়া হবে।
এএজেড