রোবট বানিয়ে তাক লাগালেন হাবিব

রোবট তৈরিতে প্রথমবারের মতো সাফল্য দেখিয়েছেন আহসান হাবিব নামের এক কলেজছাত্র। হাবিব লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ সরকারী করিম উদ্দিন পাবলিক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি গ্রামের মজু মিয়ার ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে হাবিব সবার ছোট। ইউটিউবে ভিডিও দেখে এক মাসের প্রচেষ্টায় এ রোবটটি বানাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
রোবটটি স্থানীয় একটি হোটেলের জন্য হোটেল বয় হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন আহসান হাবিব। তার তৈরিকৃত রোবটটি দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে উৎসুক মানুষজন ভিড় করছেন।
জানা গেছে, রোবটটি মানুষের দেহের সঙ্গে মিলের পাশাপাশি সাবলীল ভাষায় কথার উত্তর দেওয়া, হালকা ও ভারী কাজ করতে সক্ষম। অচেনা ব্যক্তিকে মনে রাখা, মানুষের ছবি ও কথা রেকর্ড রাখতে পারা, হ্যান্ডশেক ও অঙ্গভঙ্গিও করতে পারে এ রোবটটি। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতেই রোবটটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তরুণ নির্মাতা আহসান হাবিব।
কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দ্রাহবি গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া হাবিব নতুন কিছু আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখত বাল্যকাল থেকেই। কিন্তু বাবা দরিদ্র কৃষক বলে তার প্রতিভাকে সঠিকভাবে প্রস্ফুটিত করতে পারছিলেন না। ২০১৭ সালে আহসান হাবিব তুষভান্ডার আরএমপি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে স্কুলের ফান্ডের টাকায় বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষে একটি রোবট বানিয়ে লালমনিরহাট জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এর কিছুদিন পর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বাবাকে হারিয়ে তার জীবনে আঁধার ঘনিয়ে আসতে শুরু করে। বাবাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন হাবিব। থেমে যায় তার স্বপ্ন। লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হিমশিম খায় হাবিব। শুরু হয় তার কঠিন জীবন সংগ্রাম। তবুও দিশেহারা হয়ে পড়েনি এ স্বপ্নবাজ যুবক।
টিউশনি করে নিজের পরিবার ও লেখাপড়ার খরচ যুগাচ্ছেন হাবিব। টিউশনির সামান্য সঞ্চয় ও ধার দেনা করে এবার তিনি একটি হোটেলের জন্য এ রোবটটি বানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রোবট নির্মাতা আহসান হাবিব জানান, স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় প্রথম আপডেট কিছু করার লক্ষ্যে রোবট বানাই। রোবট বানিয়ে আমি জেলায় চ্যাম্পিয়ন হই। মূলত ইউটিউব দেখেই এ কাজে আমি আগ্রহী হয়ে উঠি। এ কাজে আমি আমার মা, বড়ভাই, চাচা সবার আন্তরিক সহযোগিতা সবসময় পেয়েছি। আমার এ কাজে আমাকে সবসময় সহযোগিতা করেছে আমার বন্ধুরা।
ভবিষ্যতে হাবিব আরও নতুন কিছু বানাতে চান। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আহসান হাবিবের মা খালেদা খাতুন বলেন, আমার ছেলের এমন কাজে আমার খুবই আনন্দিত। পাশাপাশি তিনি ছেলের ভবিষ্যতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রতিবেশী মজনু মিয়া বলেন, দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া হাবিবের এ কাজে গ্রামের সবাই আমরা কৃতজ্ঞ। তার এ কাজ গ্রামের সুনাম ও সম্মান বাড়িয়ে দিবে।
এসজি/
