৪৫০ টাকায় নওগাঁর ৪ ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ
নওগাঁয় ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সুযোগ হলো, ৪৫০ টাকায় নওগাঁর ৪টি ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণ করতে পারবেন। জেলার ১১টি উপজেলা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বহু ঐতিহাসিক স্থাপনা। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন থেকে জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে। স্বল্প খরচে একদিনে একাধিক ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো ভ্রমণের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো টুরিস্ট বাস সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এ উপলক্ষে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় ভ্রমণ প্যাকেজ সাজিয়েছে।
যাওয়া-আসা টিকিট, সকাল ও বিকেলের নাস্তা এবং দুপুরের মানসম্মত খাবারসহ একদিনের প্যাকেজে খরচ পড়বে জনপ্রতি ৪৫০ টাকা। সেই লক্ষে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে টিকিট বিক্রি।
জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান জানান, নওগাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো দেশসহ বিশ্বের পর্যটকদের কাছে নতুন করে তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নওগাঁর ইতিহাসে এ প্রথম আসন্ন ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন আনুষ্ঠানিকভাবে টুরিস্ট বাস সার্ভিসের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। উদ্বোধনের পর প্রতিদিন টুরিস্ট বাস শহরের মুক্তির মোড় থেকে সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করবে। মুক্তির মোড়ের পদ্মা বাস কাউন্টার থেকে এ প্যাকেজের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি বাস প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৪৫০ টাকার একটি প্যাকেজ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্যাকেজের মাধ্যমে একজন পর্যটক খুব সহজেই প্রথমে ভারত সীমান্তঘেঁষা উপজেলা ধামইরহাট উপজেলার জাতীয় উদ্যান শালবন বিহারের আলতাদীঘি, ঐতিহাসিক জগদ্দল বিহার, বদলগাছী উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও হলুদ বিহার ভ্রমণ করতে পারবেন।
এ ছাড়া প্যাকেজের মাধ্যমে ভ্রমণরত পর্যটকরা সকাল ও বিকেলের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার পাবেন। বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে প্রতিবার ভ্রমণের দিন বিকেলে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। এরপর হলুদ বিহার দর্শন শেষে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে এসে শেষ হবে ওইদিনের ভ্রমণ। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪টি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের রুট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটকদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে জেলার সব ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের জন্যও প্যাকেজ তৈরি করা হবে।
এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে নওগাঁবাসী। যদিও দীর্ঘমেয়াদে এ প্রকল্প টিকে থাকা নিয়ে দ্বিমত পোষণও করেছেন অনেকে।
শহরের বাসিন্দা আব্দুর রউফ পাভেল, সাহেব আলীসহ অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এমন উদ্যোগ নওগাঁবাসীর জন্য সত্যিই খুব আনন্দের। এমন উদ্যোগের কথা নওগাঁর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ইচ্ছে থাকলেও অনেক মানুষের পক্ষে ব্যক্তিগতভাবে গাড়ি ভাড়া করে পরিবার-পরিজন নিয়ে একসঙ্গে এতগুলো নিদর্শন ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এখন একটি প্যাকেজের মাধ্যমে খুব সহজেই ঐতিহাসিক চারটি পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করতে পারবেন। শুধু এ চারটি কেন্দ্রই নয় এটির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামীতে যেন অন্যান্য রুটেও এ সার্ভিস চালু করা হয়।
এসএন