রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বয়স ২২ হলেও মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট প্রবল

মাওলানা ভাসানীর নামে তার টাঙ্গাইলের সন্তোষে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’। ১৯৯৯ সালে তৈরি হলেও এখনো আবাসনের তীব্র সমস্যা পোহাতে হয় ছাত্র, ছাত্রীদের। তারা পড়ালেখা করতে পারেন না। বাড়ি থেকে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা করে এনে চলেন। অথচ প্রায় সবাই নিম্মমধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্তের সন্তান। ক্যাম্পাসটি ঘুরে, উপাচার্য ও অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের প্রতিনিধি ও ছাত্র রাসেল চৌধুরী

মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামে তার টাঙ্গাইলের সন্তোষে একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির। ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’। ২২ বছর পরেও ছাত্র, ছাত্রীদের আবাসের সংকট কাটাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখন এই নামকরা ক্যাম্পাসে পড়ালেখা করছেন প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ছাত্র, ছাত্রী। ক্যাম্পাস ঘুরে জানা গিয়েছে, তাদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত ও নিম্মমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। মেধা ও যোগ্যতায় ভর্তি হয়েছেন এখানে। তবে এই অভাবী ছেলেমেয়েরা বলেছেন, প্রথম বর্ষ থেকে তাদের থাকা, খাওয়ার চরম সংকট থাকে। পাঁচ বছর পর পাশ করে ফেললেও আবেদন করা হলের সিট পান না। মেয়েদের সংকট আরো তীব্র। তাদের বাবা, মাও চরম উদ্বিগ্নতায় ভোগেন, মেয়ে কোথায় থাকে? কীভাবে থাকে? নিরাপদে থাকে তো? তার কোনো অসুবিধা হয় না তো? এই অভাব ও অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় সব ছাত্রীর মা-বাবার, তাদের নিজেদের। ছেলেদের জন্য মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে তিনটি ও মেয়েদের জন্য আছে দুটি হল। তবে সেগুলোতে সিটের সংখ্যা খুব কম রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্র, ছাত্রী বেড়েছে এখানে, সিট সেভাবে বাড়েনি। ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার চোখেই পড়ছে অনেক বছর ধরে, আবাসনের দারুণ অভাব।
বেশিরভাগ ছাত্র, ছাত্রীই সন্তোষ, কাগমারি, পাল পাড়া, বেবিটেক্সি স্ট্যান্ড, শান্তিকুঞ্জ মোড় ও শহরে মেস এবং বাসা ভাড়া নিয়ে কয়েকজন মিলে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ার পর থেকে। এই বাসাগুলোর এবং তাদের সিটগুলোর ভাড়া অনেক বেশি। এক কথায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রীদের সরকারী ফিতে হলে থাকা হয় না, সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও। এমন নয় যে তাদের জায়গার অভাব আছে বা সরকারের বরাদ্দ আনা যায় না। বেশি টাকা খরচ করে থাকতে গিয়ে, খেতে হচ্ছে বলে তারা মা-বাবার গালাগাল শোনেন, খারাপ পরিবেশে থাকেন। লেখাপড়ার মান ভালো হয় না। ভবিষ্যত অন্ধকার থাকে। খরচ মেটাতে গিয়ে অনেকে টিউশনি করেন বলে পড়ালেখার মান ভালো হয় না। তাদের এখানে টিউশনি তেমন নেই, কম টাকা পান। কিন্ত চলতে তো হবে?
কদিন আগেই ভর্তি হলেন ২০২০-’২১ শিক্ষাবর্ষের নতুন ছাত্র, ছাত্রীরা। এই দিনই তাদের অভিভাবকরা জেনে গিয়েছেন, এখানে বিশ্ববিদালয় থাকলেও আবাসনের তীব্র অভাব আছে। শায়লা খানম নামের একজন ছাত্রীর সঙ্গে আসা অভিভাবক বলেছেন, ‘আমরা এই ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। তবে মেয়েকে বাইরে রাখতে হলে এই পরিবেশের কী দাম? হোস্টেলে বা মেসে থাকলে সে কী খাবে? কীভাবে থাকবে? লেখাপড়ার পরিবেশ পাবে? ভালো ফলাফল ও মানুষ হয়ে বেরুতে পারবে?’
এই বিষয়ে অনেক সিনিয়র ও জুনিয়র ছাত্র, ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন এই প্রতিবেদক রাসেল চৌধুরী। তারা বলেছেন, ‘আমাদের অনেকের পরিবার খুব গরিব। ফলে দ্রুত আমাদের জন্য হলের ব্যবস্থা করতে হবে।’ প্রথম বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ মামুন জানিয়েছেন, ‘আমরা এখানে নতুন পরিবেশে ভর্তি হয়েছি, চারপাশের অপরিচিতদের ভালোভাবে চিনিও না। আমাদের কারো কোনো আত্মীয়, পরিজন এখানে থাকেন না। টাঙ্গাইলে টিউশনি বা অন্য কোনো কাজের সুযোগ ছাত্র, ছাত্রীদের জন্য নেই। যারা টিউশনি করেন অনেকটা জোর করে নেন। ফলে বাসা থেকে আমাকে মাসে, মাসে এতগুলো টাকা কীভাবে দেবেন এই দু:শ্চিন্তায় পড়ালেখায় মন বসে না। দ্রুত হলে সিট পেলে ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারবো। কী করবো বুঝতেও পারছি না।’
তার ঠিক চার বছরের সিনিয়র প্রান্ত রায়। চতুথ বর্ষের এই ছাত্রটি বলেছেন, ‘আমি তো এখনো হলে উঠতে পারিনি। ওরা কীভাবে পারবে? প্রতিটি মাসে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা করে প্রথম বর্ষ থেকে দিয়ে চলেছি থাকা ও খাওয়ার জন্য। এত টাকা যোগাড় করতে খুব কষ্ট হয়।’ তিনি জানলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানেও হলে থাকতে মাসে ১৫শ টাকা লাগে। হলে থাকতে ও দুই বেলা-দুপুর এবং রাতের খাবার খেতে তাদের খরচ সামান্য হয়। তিনি বলেছেন, হলে প্রতিদিনের খাবার খরচ ৫০ টাকা। ফলে গড়ে ৫ হাজার টাকা বাঁচবে সিট পেলে। এই আশায় তিনি এখনো পড়ালেখা প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সিটের জন্য হণ্যে হয়ে ঘুরছেন।
তাদের সবার খুব মন খারাপ হয়, পরিবারের হাল ধরতে এগিয়ে না এসে বা সামান্য টাকা মা-বাবার হাতে তুলে দিতে না পেরে টাকা চেয়ে আনতে হয়। টাকার জন্য মা, বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতে হয়। এই সমস্যাগুলো জানার পরেও শিক্ষকরা কেন সমাধানে নামছেন না? মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিমন মিয়া বলেছেন, ‘এখনো আমরা প্রথম বর্ষে আবেদনের পর এখনো তিন বছরে সিট পাইনি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সুবিধার ছিঁটেফোটাও লাভ করতে পারি না। আমার মতো এমন শত, শত ছাত্র, ছাত্রী আছেন। শিক্ষকরা আমাদের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে বলেন। কীভাবে উঠবো? আমরা আবাসন সমস্যার সমাধান অনেক বছর ধরে চেয়ে আসছি। কিন্তু হচ্ছে না। কেন?’
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, একটি ভর্তি হওয়া সেশনের ছাত্র-ছাত্রীরা পাশ করে না যাওয়া পর্যন্ত মানে অন্তত পাঁচ বছর আগে আবাসনের সংকট কাটাতে পারবেন না। এই বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেছেন, ‘আসলে আমাদের হলগুলোর সবগুলো মিলিয়ে পর্যাপ্ত আবাসনের ব্যবস্থা নেই। সিট নেই বলে ছেলে, মেয়েরা হলে থাকতে পারে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ আমরা সব অধ্যাপকরা হলের সংকট কাটানোর জন্য কাজ করে চলেছি। আগামী পাঁচ থেকে সাত বছর পর মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো সিটের সংকট থাকবে না। সব ছাত্র, ছাত্রী হলে সিট পাবে। তাতে নতুন ছাত্র, ছাত্রীরা র‌্যাগিংয়ের শিকার হবে না। কোনো অপসংস্কৃতির চচাও থাকবে না।’ তিনি আরো জানালেন, ‘হলে থাকার ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। রোধ করতে পারবে।’
অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের কাছ থেকে জানা গেল, হলে থাকতে না পেরে ছাত্র, ছাত্রীরা অপসংস্কৃতির শিকার হচ্ছেন। তাদের মধ্যে বাজে র‌্যাগিংয়ের চর্চা চলছে। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন তৈরি হচ্ছে শেখ রাসেল হল। এই হলের প্রভোষ্ট হিসেবে এর মধ্যে দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রিমিনোলজি ও পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ তালুকদার। স্যার বলেছেন, ‘আগামী মাসের শেষ দিন মানে ৩০ মে, ২০২২ তারিখে আমাদের হলটির কাজ শেষ হবে। ফলে অন্তত ছয়শ ছেলে থাকতে পারবে। তাতেও আমাদের আবাসন সমস্যার কিছুটা লাঘব হবে। তাদের জীবনগুলো বদলে যাবে।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা নবাগতদের এবং জুনিয়রদের আবাসনের ব্যবস্থা এখানে করব। তারাও যেন সিট পায়, সেটি আমি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। অন্তত ৩০ জনকে আবাসনের সুবিধায় এনে আমি হলের কাজ শুরু করবো।’
আরেকটি হল তৈরি হচ্ছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। এই প্রতিবেদক হলটি ঘুরে দেখেছেন। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় হল হচ্ছে এটি। হলটিও এই বছরের মাঝামাঝিতে তৈরি হয়ে যাবে, জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছেন, এখানে অন্তত ১ হাজার ছাত্রীর থাকার ব্যবস্থা হবে। ফলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক সংকটের অনেকটা দূর হবে।
নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকট নিয়ে ছাত্র ও সাংবাদিক রাসেল চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেছেন ভিসি স্যার। অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘২০২২ সালের জুনের মধ্যে আমাদের শেখ রাসেল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কাজ আমি শেষ করব বলে কাজ করছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান সংকটও আছে। তারপরও আমি আরো দুটি হল তৈরি করতে কাজ করবো।’ তারা জানিয়েছেন, ‘এর ফলে আগামী এক কী দুই বছরের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সংকটের তীব্রতা কাটবে, ভালোভাবে থাকতে পারবে ছাত্র, ছাত্রীরা। তারা থাকলে শিক্ষকদেরও থাকার ব্যবস্থা হবে প্রভোস্ট, হাউজ টিউটর হিসেবে। তখন ছাত্র, ছাত্রীদের প্রায় সবাইকে আবাসনের সুবিধা প্রদান করা যাবে। প্রশাসন কাজ করে চলেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিবেশ, ছাত্রছাত্রীদের জীবনের মান বাড়বে। তাদের কম দামে ভালো খাবারের ব্যবস্থাও করতে পারবেন শিক্ষকরা। তাদের পড়ালেখা ও ফলাফল অনেক ভালো হবে।’
ওএস।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি