আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার কৃষকের স্বপ্ন
থোকায় থোকায় দুলছে আমের মুকুল। মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা করে তুলছে চারিদিক। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস নাড়া দিচ্ছে মানুষের হৃদয়েও। এবার বাগানের মুকুল দেখে বাগান মালিকদের মনও আনন্দে আত্মহারা। মুকুলের ডগায় ডগায় আমের গুটি আসতে শুরু করেছে। এবার আমের বাম্বার ফলনের আশা করছেন চুয়াডাঙ্গার আম চাষীরা।
শহর কিংবা গ্রামে প্র্রতিটি আমগাছ মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। এসব মুকুলের ডগায় ডগায় দেখা মিলছে আমের গুটির। আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। সেই সোনালি স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেই বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার চাষিরা। তবে সম্প্রতি শিলাবৃষ্টিতে জেলার বেশ কিছু এলাকায় আমের মুকুলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপরও যা আছে বাগানগুলোতে এবার আমের বাম্বার ফলনের আশা করছেন চাষীরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আমচাষী ওমর আলী বলেন, সাত বিঘা জমিতে তার আম্রপালি জাতের বাগান রয়েছে। এ বছর বাগানের গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। ডগায় ডগায় দেখা মিলছে গুটির। আশা করছি এবার ফলনও ভাল হবে।
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি আমের জন্য বিখ্যাতের তালিকায় চুয়াডাঙ্গা জেলা নিজের স্থান করে নিয়েছে। এ জেলাতে উৎপাদিত হিমসাগর,আম্রপালি, লেংড়া, ফজলি, মল্লিকা, বারী আম-৪ ও বারোমাসি কাঠিমন জাতের আমের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। আবহাওয়াজনিত কারণে এবার একটু দেরীতে মুকুল এসেছে গাছে। তবে আম বাগানগুলোতে যে পরিমানে মুকুল এসেছে তাতে করে আমের ফলনও প্রচুর হবে।
সরকার ও কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগীতা পেলে দেশ-বিদেশের মানুষ স্বাদ নিতে পারবে চুয়াডাঙ্গার সুস্বাদু আমের এমনটিই আশা করছেন এ জেলার চাষীরা।
বাগানগুলোতে এবার আমের মুকুলের ধরন দেখে কৃষকদের মতো এ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও আশা করছেন প্রচুর আম উৎপাদন হবে চুয়াডাঙ্গায়। লাভবান হবেন কৃষকরা। বাগানের গাছ থেকে আমের সর্বোচ্চ ফলন পেতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষন অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, সম্প্রতি শিলাবৃষ্টিতে জেলার বেশ কিছু এলাকায় আমের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। আবার কিছিু কিছু গাছে এ বছর আমের ‘অফ ইয়ার’ পড়েছে। সেগুলোতে এ বছর মুকুল আসবে না। বাগান পরিচর্যাসহ আমচাষীদের সকল পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এবার জেলার আমবাগানগুলোতে যে পরিমান মুকুল এসেছে তা থেকে আমের বাম্বার ফলন হবে বলে আশা করছি।
জেলার সদর উপজেলায় ৭৪২ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২৮০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ৭৯৫ হেক্টর এবং জীবননগর উপজেলায় ৬১২ হেক্টর সবমিলিয়ে এ বছর চুয়াডাঙ্গায় জেলার চারটি উপজেলায় ২৪’শ ২৯ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ টন আম উৎপাদনের হিসেব ধরে এসব বাগান থেকে এ বছর ৩৪ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।