১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলা শুরু, নতুন ঠিকানা পূর্বাচল
পূর্বাচলে নতুন জায়গায় এবার বাণিজ্য মেলা শুরু হতে যাচ্ছে। তাতে ২২৫টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল অংশ নিচ্ছে। আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১লা জানুয়ারি এই মেলা শুরু হবে। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল আকারের এই সেন্টারে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ময়লা পরিস্কার করতে ব্যস্ত। ভিতরের স্টল সাজানো এখানো শুরু হয়নি। এ ব্লকে অর্থাৎ পশ্চিম দিকের বিশাল জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। তবে সামনের বিশাল জায়গায় ও পূর্ব দিকে আবুল খায়ের গ্রুপের প্যাভিলিয়নসহ দুই-একটা স্টল সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন জায়গায় মেলার আয়োজন ভালো লাগছে। তবে সেলসম্যানসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের রাতে নিরাপদে বাসায় ফেরায় বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ পূর্বাচলে এখনো সেভাবে বসতি গড়ে উঠেনি। মেলায় হাজার হাজার দর্শনার্থী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঘটবে। তাদেরকে রাজধানীতে মেলার সময় শেষে বাসায় ফিরতে হবে।
নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে এবার বাণিজ্য মেলা হচ্ছে। অনুভূতি জানতে চাইলে জয়িতা ফাউন্ডেশনের সদস্য আরজু বেগম বলেন, ভালোই লাগছে। স্টলও বরাদ্দ পেয়েছি। কিন্তু সেলসম্যানদের থাকা ও রাতে বাসায় ফেরাটা বড়ই কঠিন হবে। এটা খুবই চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা ২২ জন্য সদস্য একটা প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছি। সেলসম্যানদের থাকার জন্য বাসা খোঁজার জন্য আজ এখানে এসে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কারণ এখানে তেমন বসতি নেই। আগে থেকে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটা দেখতে হবে।
তবে আরজু বেগম বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে ৪ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করা হবে। সেভাবে স্টল সাজাতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ সময় ইপিবির নিয়োগপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রহরী সেলিম বলেন, যারা স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছে তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে। ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেন্টারের উদ্বোধন করেছেন। তখন থেকে মেলার জন্য অপেক্ষা করছি। বিশাল আয়তনের এই সেন্টারের ময়লা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আড়াইহাজারের স্বপন বলেন, নতুন জায়গায় এবার মেলা হতে যাচ্ছে ভালোই লাগছে। রাজধানীর বাইরে হলেও বিভিন্নভাবে যোগাযোগের পথ রয়েছে। তাই উপস্থিত ভালো হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমার ক্যান্টিনের ব্যবসা। তাই বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নের সাথে যোগাযোগ করতেই এখানে এসেছি। আশা করি আগারগাঁওয়ের মতোই জমবে মেলা।
সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে ইপিবির পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পূর্বাচলের বিবিসিএফইসিতে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। করোনার কারণে গত জানুয়ারিতে মেলা করা সম্ভব হয়নি। তবে ২০২২ সালের ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরুর অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেভাবে সিডিউল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করবেন। চূড়ান্ত প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, মেলায় ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন অংশ গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ২০৩টি স্টল মূল কাঠামোর ভেতরে থাকবে। আর ২২টি প্যাভিলিয়ন থাকবে, তাদের অবস্থান হবে বাইরের খোলা জায়গায়।
উল্লেখ্য, দেশীয় পণ্যের প্রতি দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে রাজধানীর আগারগাঁয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে ইপিবি। এতে দেশ-বিদেশের কয়েকশ' প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করে থাকে। এই মেলা থেকে দেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক রপ্তানি আদেশ (অর্ডার) পেয়ে থাকে। এছাড়া রাজধানীবাসীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার নাগরিকরাও মেলায় কেনাকাটা করেন। প্রতি বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রতি বছর অস্থায়ী এ আয়োজনে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। তাই সরকার উদ্যোগ নেয় স্থায়ীভাবে মেলার জায়গা করতে। এরই অংশ বিশেষ পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো ২৬তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে পূর্বাচলের প্রায় একশ বিঘা জমিতে। এ জমিতে এক্সিবিশন বিল্ডিংয়ের মোট জায়গা হচ্ছে ২৪ হাজার বর্গ মিটারের বেশি।
জেএ/এসআইএইচ