ফের ৪২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছাড়াল
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ আবারও ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এর আগে বড় আমদানি ব্যয় পরিশোধের কারণে রিজার্ভের পরিমাণ কমে যায়। ছয় কার্যদিবসের মধ্যে সেটি আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
আমদানি ব্যয় হিসেবে গত ১০ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভ কমে ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছিল। সেদিন ৪১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার স্থিতি ছিল ।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রিজার্ভ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য বলছে, আকুর দেনা পরিশোধ এবং আরও কিছু অর্থ লেনদেনের ছয় কার্যদিবস পরে রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। এতে গত ১৬ মে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভের এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে বর্তমান আমদানির ধারা অনুযায়ী ছয় মাসের ব্যয় মেটানো যাবে। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৪ বিলিয়ন ডলার। আর দীর্ঘ সময় ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকা বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ২০২১ সালের অগাস্টে ৪৮ বিলিয়নের ঘর ছাড়িয়েছিল।
এদিকে চলতি মাস মের প্রথম ১২ দিনে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৮৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার। দৈনিক গড় প্রবাহ বিবেচনায় প্রবাসী আয়ের এ ধারা আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ১২ মে পর্যন্ত গড় হিসাবে দৈনিক রেমিটেন্স এসেছে ৬৯ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার। গত এপ্রিলে দৈনিক গড় রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ৬৬ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলার।
এদিকে টাকার বিপরীতে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারা এবং চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সংকটের মধ্যে সবশেষ আকুর দায় পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসার দিনই টাকার মান ২৫ পয়সা কমানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ওই সময় রিজার্ভের উপর কিছুটা চাপ তৈরি হওয়ায় এমন পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরপর গত ১৬ মে টাকার মান আরও ৮০ পয়সা কমিয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার আন্তঃব্যাংকে নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। প্রতি মাসে গড়ে ৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে আমদানিতে। এ হিসাবে বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের বেশি সময়ের আমদানি বিল পরিশোধ করতে পারবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম মনে করেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় প্রবাসীরা আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাচ্ছেন বলে রেমিট্যান্সও বেশি পাঠাচ্ছেন। আসন্ন কোরবানির ঈদের প্রভাবও থাকতে পারে। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের ধারা আরও বাড়বে।
আরএ/