কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়ে নির্যাতনে নিহত যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের পরিবারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে সেনাবাহিনী। গত সোমবার রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসে ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ তারিকের সঙ্গে তৌহিদুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা বৈঠক করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তৌহিদুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ, স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার, দুই ভাগনি মাহবুবা উদ্দিন ও সানজিদা আক্তার। পরিবারের সদস্যরা সেনাবাহিনীর কাছে সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা আরও বলেন, যাদের দ্বারা তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তৌহিদুল ইসলামের ভাই সাদেকুর রহমান বলেন, “আমরা সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। পরে তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার বিচার চেয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছি।”
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঘটনার আগে ও পরের সব কিছু খুলে বলেছি। জিওসি আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং বলেছেন, সেনাবাহিনীর যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিচার সেনাবাহিনীর কোর্টে হবে এবং বাইরের যারা জড়িত, তাদের বিচার সাধারণ আদালতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনী এ ঘটনায় সর্বোচ্চ সহায়তা করবে, এবং আমরা তাদের আশ্বাসে সন্তুষ্ট। আমরা বিশ্বাস করি, যারা সরাসরি জড়িত, তাদের বিচার হবে। মিথ্যা অভিযোগকারীদেরও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।”
তৌহিদুল ইসলাম (৪০) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন। তার স্ত্রী এবং চার মেয়ে রয়েছে। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার তৌহিদুলের বাবা মোখলেছুর রহমানের কুলখানি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সময় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনী তাকে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়, যেখানে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার সূত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনী তৌহিদুলকে অচেতন অবস্থায় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের কাছে হস্তান্তর করেছিল, এবং চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।